আগের কাহিনীর পর.........।
এরপর তো একরকম বাধ্য হইয়া ওই দালালগোরে ফুন লাগাইলাম। আমার বাপে হ্যাগোর উপ্রে এমুন ফাপড় লইছিল যে আমি নিজেই ভয় পাইয়া গেছিলাম। আমার বাপেরে এই লেভেলে কুনদিন রাগতে দেখি নাই। চিল্লা হল্লা করা তো দুরের কথা। যাই হোক তারপরে ওরা কয় আমাগোর আপিসে আইসা একটু দেখা কইরা যান।
এইটা ঠিক যে আমি Dear Selectee……… মেসেজটা দেইখাও ধন্দে পইড়া গেছিলাম যে, আসলেই ডিভি পাইছি না মামুরা আমারে লইয়া খেলেতেছে! ওদের ওইখানে যাওয়ার পর ওরা কয় আম্রিকা যাওনের দায়িত্ব আমাদের। আপনারা কুনো চিন্তাই করবেন না। (হ্যারা তো ফেইল্ড এমব্যাসি অভিযানের কাহিনী শুইনা আনন্দে বগল বাজাইতেছে এই মনে কইরা যে ব্যাটাদেরকে পাইছি!!) এরপরে হ্যারা কয় এই ধরনের কাজ তো আমরা ছয় লাখ টাকার নিচে করি না, আপনাদের যদি টাকার সমস্যা থাকে তাইলে বন্ড সই কইরা দিয়া যাইবেন যে আম্রিকা যাইয়া টাকা দিবেন। আমার বাপে কইল, হুহ! আগে ভিসা হোক তো দেখি! ডিভি হইছে না নাই ওইটারই কোন ঠিক নাই!
এরপর ওরা কিছু ফর্মে সাইন করতে কইল। আমিও আর কিছু না কইয়া চুপচাপ কইরা ফরমগুলায় সাইন কইরা দিলাম আর উপরি হিসাবে আমার ট্রান্সক্রিপ্ট দিয়া আইলাম যাতে কুনো নামধাম ভুল না করে। এর পর মেজাজ বিলা কইরা বাপ বেটায় মিল্লা বাড়ী চইল্লা গেলাম।
একটা ব্যাপার আমি এখনো মিলাইতে পারি নাই যে এমব্যাসি থেকে এরকম বাজে রিপোর্ট পাবার পরেও আমার আব্বা ওদের সাথে দেখা করতে রাজি হইছিল কেন? আমি হইলে তো সোজা বাড়ির পথে হাটা দিতাম। আমার আব্বা কি আমারে একটা ফাইনাল চান্স দিতে চাইছিল? নাকি আমার আমার আপাত স্টুপিডিটির উপরে আমার উপর তার কনফিডেন্সের বিজয় হইছিল?
বাড়ি থেইকা কয়েকদিন পর ক্যাম্পাসে আইলাম । মন-টন খারাপ। কিচ্ছু ভালো লাগে না। কয়েকদিন ক্লাস মিস দিছি এই বালছালের ধান্দায় পইড়া। কারো লগে কথা কই না! ওইদিন রাইতে কি মনে কইরা অপেরা মিনি দিয়া মেইল চেক করতে যাইয়া দেখি আর একখান মেইল আইছে! চিন্তা করলাম খুইল্লা দেখি কি লিখছে। দেখি অকি!!! পুরাই গুপ্তধন!!!
মেইলে বলে কিনা “এটাচড ইজ এ কপি অফ দি সিলেক্টি প্যাকেট প্রিভিয়াসলি সেন্ট ফ্রম কেসিসি ভিয়া পোস্টাল মেইল”। দেখি মেইলের সাথে তিনখানা এটাচমেন্ট পাঠাইছে! কষ্ট কইরা মুপাইলের ডাটা খরচ কইরা ডাউনলোড কইরা দেখি, মুপাইলে ওপেন হয় না! বুঝলাম কম্পু লাগবে! কি করি? তখন হলে যার কম্পু আছিল সে তো পুরা রাজা বাদশার মতন ভাবে থাকত (আমার আছিল না)। আর আমার ক্লোজ কুনো ফ্রেন্ডেরও কম্পূ আছিল না। আর কাহিনী হইল ব্যাপারটা ফাইনাল না হওয়া পর্যন্ত আমি কাউরে জানাইতেও ইচ্ছুক আছিলাম না। যদি না হয় তাইয়ে পুরাই ধরা খামু! সারা গিবন এইটা লইয়া আমারে পুলাপাইনে খেপাইবো! কওয়া যা না ডিভি বিপ্লব নামও ফালাই দিতে পারে (এমনিতে তিনটা পইড়া গেছিল!)। সো বাধ্য হইয়া তার পরের দিনের অপেক্ষায় থাকলাম। পরের দিন সকালে উইঠাই শহরে চইলা গেলাম। তারপর সেই সেইম সাইবার ক্যাফেতে বিশ টাকা ঘণ্টা দিয়া কম্পুতে বইলাম। তারপর এটাচমেন্ট গুলা নামাইয়া পার পেজ ১০ টাকা কইরা খরচ কইরা প্রিন্ট কইরা লইলাম। দেখি, আমার ডিভি পাওনের কনফার্মেশন! ঐখানে যেই ফরমগুলা সাইন কইরা আইছি ওই ফরমগুলা আছে, ইন্সট্রাকশন গুলা বাংলা আর ইংলিশে দেওয়া আছে। এরপর আমারে আর কেঠা পায়? আমি তো পুরাই খুশিতে ধাতিং ধাতিং নাচ দেই এমুন অবস্তা!
এইবার সমস্যাটা হইল, আমার আব্বারে যখন আবার এইটার কথা কইলাম আমার আব্বা তো শুইনাই উড়াই দিল! তাঁরে বিশ্বাস করাই ক্যামনে?
(চলতে থাকপে......।)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩১