আগের কাহিনীর পর.........।
এরপর হাজী দানেশে ভেটেরিনারিতে ভর্তি হইলাম, একটা সেমিস্টার চামের উপ্রে দিয়া কইরা লাইলাম! যদিও ভেটেরিনারি এনাটমি আর হিস্টোলজি পড়তে পড়তে লাইফটা কৃষ্ণবস্তুর রং ও ধারণ করা শুরু কইরা দিছিল। এরই মধ্যে একবার জিন বাবার খপ্পরেও পরছিলাম (ওই কাহিনী পরে কুনো এক সময় কইতাম)! যাই হোক, প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল শেষে, একদিন দুপুরের দিকে রিলাক্স করতেছি হলে বইসা! এরাম টাইমে আমার আব্বা কল দিছে! কল পাইয়াই তো আমার মনে কু ডাক দেওয়া শুরু হইয়া গেছে! এই টাইমে তো আমারে কল দেয় না! নরমালি কলটা সন্ধ্যার দিকে শিডিউল করা থাকে। সামথিংইজ ডেফিনিটলি ভেরি ভেরি রং! এরপর আমার আব্বা কয়, আমাদের বাসায় নাকি ঢাকা থেইকা একটা লোক আসছে!!!আমার মাথা তো ঝড়ের বেগে চলতাছে, কি এমন আকাম করছি যে ঢাকা থেইকা বাসায় লোক গ্যাছে! আননোন নাম্বারের মাইয়াপাইন গোরে তো সেই কবে খুচাখুচি বন্ধ কইরা দিছি! ভয়ে ভয়ে আমি জিগাইলাম ক্যান? কি হইছে?
আমার আব্বা কয়, ওই লোক আইসা কয় তুই নাকি ডিভি পাইছস! আম্রিকা নাকি যাওয়া যায়? আমি তো একটু জানে পানি পাইলাম! সংবাদটা খারাপ নাহ! মাগার একটা জিনিস মিলাইতেপারলাম না যে ডিভি পাইলাম আমি এই ব্যাটা জানল ক্যামনে? আমি যে ডিভি করছি এইটা তো আমি ছাড়া আর কেউরে কই নাই! আর আমার তো ফাটা কপাল, ডিভি ফির আমি ক্যামনে পাই? আর যদি পাইও,তাইলে তো আমার বাড়িত চিঠি যাওয়ার কথা! কুনু ব্যাটার তো জানার কথা না!
ওই সময়টাতে আবার আদম ব্যাপারী গুলা ব্যাপক বাইড়া গেছিল। প্রায় প্রতিদিনই পেপারে খবর আইত যে এই কাহিনী হইছে, ওই কাহিনী হইছে, নৌকায় কইরা বিদেশ যাওনের সময় সাগরে ডুইবা ১৩০ জন মইরা গ্যাছে ইত্যাদি...। আমি বিচার বিবেচনা কইরা আমার আব্বারে কইলাম যে নাহ, এইগুলা ভুয়া খবর! এই ব্যাটা চামের উপ্রে টাকা খাওনের ধান্দায় আছে। ব্যাটার পোঁদে লাত মাইরা বাড়ি থেইকা বাইর কইরা দেওয়া হউক!
এরপর আমি ওই ব্যাটার লগে একটু আলাপ করলাম। মাগার অর কাছে কুন উত্তর নাই! ওরে কইলাম তাইলে আপনে দিনাজপুর আসেন আপনার লগে দেখা করি। আসলে আমার মনটা তখনো খুঁতখুঁত করতেছিল যে এই হালায় জানল ক্যামনে যে আমি ডিভি করছি?
সেইদিন সন্ধ্যায় লোকটা দিনাজপুর আইল আমিও ক্যাম্পাস থেইকা শহরে আইলাম! ওনার লগে দেখা করলাম। এইবার ওই লোক কয়, দেখেন আমার বাড়ী ঘোড়াঘাটে (দিনাজপুরে)। আমার এক পরিচিত লোক আছে উনি আমারে এক হাজার টাকা দিছে আপনার বাসায় যাইয়া খবরটা দেওনের জন্যে! বিশ্বাস করলে করেন না করলে নাই। আমারে ব্যাটায় ডিফেন্সে ফালাই দিল দেখি!
এরাম একটা খবর, ব্যাপারটা তলাইয়া না দেখতে মন চাইতেছিল না। তো ওনারে জিগাইলাম আম্রিকা যাইতে খরচ কিরাম হয়? লোকটা কয় ছয়-সাত লাক টাকা লাগে! আমি তো শুইনা ওইখানেই ঘুমাই যাই এমন অবস্তা! এত টাকা??? কেমনে সম্ভব? ব্যাটারে যাও আরও একটু বাজাই দেখার চিন্তা আছিল, বাদ দিয়া দিলাম! তারপর দুইজনে রিকশা লইয়া যেইখান থেইকা আমি ক্যাম্পাসের বাস লইতে পারমু এক জাগায় গেলাম আর ওই ব্যাটায়ও ঢাকাগামী কুচ লইতে পারবে! যাইয়া দুইজনেই আস্তে কইরা নামলাম। ভাড়াটাচুকাইয়া দিয়া লোকটারে পাঠাই দিলাম। আর আমিও ক্যাম্পাসে চইলা গেলাম।
আমি যদিও মুটামুটি শিওর যে একটা ধাপ্পাবাজি থাইকা বাইচ্চা গেলাম কিন্তু মনের মধ্যে একটা খুঁতখুঁতানি থাইকাই গেল!
(চলতে থাকপে......।)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪০