somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাইক্রোসফট এর সাতকাহন - পর্ব ১ (ইন্টার্ণশীপ ইন্টারভিউ)

২৯ শে জুন, ২০০৯ দুপুর ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওহাইও স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ক্লাশ শুরু হয় ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ক্লাস শুরুর সপ্তাহ দুএকের মধ্যে একদিন ইমেইল পেলাম যে আগামী মাসে (অক্টোবর) কোনো এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্যারিয়ার ফেয়ার অনুষ্টিত হবে। আমেরিকার সব নামকরা কম্পানী সেখানে আসবে এবং তাদের কাছে সরাসরি সিভি (CV) জমা দেওয়া যাবে। কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমি খুঁজছিলাম কম্পিউটার জায়ান্ট কম্পানীগুলোকে। মেলাটি হচ্ছিলো বিশাল এলাকা জুড়ে, একশ'র বেশি স্টল ছিলো ওখানে। সবার সামনে পেলাম আইবিএম এর স্টল। সোজা গিয়ে বললাম আমি আইবিএমএ কাজ করতে আগ্রহীঃ-) ওরা বললো ওরা সি++ জানা লোক খুঁজছে, তাই আমি মনের আনন্দে আমার সিভি জমা দিলাম। এরপর আরো অনেক কম্পানী দেখলাম কিন্তু গুগল বা মাইক্রোসফটকে কোথাও দেখলাম না। হতাশ হয়ে ফিরে আসছিলাম। ফিরে আসার পথে একজনকে জিজ্ঞেস করলাম গুগল বা মাইক্রোসফট এই মেলায় এসেছে কিনা। সে বললো সে গুগলের কথা জানেনা কিন্তু মাইক্রোসফট এসেছে এবং তারা অমুক সারির অতো নাম্বার স্টলে আছে। আমি সাথে সাথে লোকটিকে ধন্যবাদ দিয়ে মাইক্রোসফটএর স্টল এর দিকে রওয়ানা দিলাম।

মাইক্রোসফট এর স্টল খুঁজে পেতে একটু সময় লাগলো। মাইক্রোসফট থেকে আসা কয়েকজন সেখানে ছিলো যারা সিভি ড্রপ করতে আসা বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলছিলো। তো একসময় আমার পালা আসলো। ইন্ডিয়ান একটা ছেলে আমার দিকে এগিয়ে এসে হাত বাড়ালো। আমিও হাত বাড়িয়ে হাত মেলালাম। আমি তখনো ছাত্র, মাত্র আমার মাস্টার্স শুরু করেছি, বললাম আমি সামনের গ্রীষ্মের ছুটিতে মাইক্রোসফটএ ইন্টার্ণশীপ করতে আগ্রহী। সে আমার সিভিটি নিলো। ভালো করে দেখলো সেটি। এরপর আমার কিসে আগ্রহ, কী ধরণের কাজ ভালো পারি এসব জিজ্ঞেস করলো। আমিও আমার মতো করে উত্তর দিয়ে গেলাম। এরপর সে বললো সে আমার সিভি সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিবে এবং আমার যোগ্যতার সাথে ম্যাচ করে এমন পজিশন খালি থাকলে আমার সাথে যোগাযোগ করবে। বিদায় নেবার সময় আমার হাতে একটা সুডকু (একধরণের পাজল গেইম) বই ধরিয়ে দিয়ে বললো - "তুমি যেহেতু প্রব্লেম সল্ভিং পছন্দ করো, তাই তোমাকে এই পাজল এর বইটি দিচ্ছি। আমার ধারণা তুমি এটা উপভোগ করবে"।

সেদিন ল্যাবে ফিরে এসে আমি মোটামুটি এই ক্যারিয়ার ফেয়ার এর কথা ভুলেই গেলাম। নতুন পরিবেশে পড়ালেখার চাপে আমার তখন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। এরমধ্যে একদিন ইমেইল পেলাম মাইক্রোসফট থেকে। "নভেমবর মাসের অমুক তারিখে আমাদের ক্যাম্পাস ইন্টারভিয়ার এর সাথে তোমার একটা ইন্টারভিউ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের জানাও তুমি সেসময় এটায় উপস্থিত থাকতে পারবে কিনা"। আমি মনে মনে বললাম, "আবার জিগায়!"। সাথে সাথে ইমেইল এর উত্তর দিলাম - "ধন্যবাদ আমাকে ইন্টারভিউএ আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। আমি ওইদিন যথাসময়ে জায়গামতো উপস্থিত থাকবো"। এরপর ওরা জায়গা ও সময় কনফার্ম করে আরেকটা এমেইল দিয়েছিলো। আমি মনে মনে দিন গুনতে লাগলাম।

ইন্টারভিউ এর দিন ঘনিয়ে আসতে থাকায় আমি ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রাথমিক ইন্টারভিউয়ে আসতে পারে এমন প্রশ্ন ডাউনলোড করে পড়া শুরু করলাম। টুকটাক প্রোগ্রাম লিখে ভুলে যাওয়া প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর সিনট্যাক্স ঝালাই করে নিলাম। ইন্টারভিউ এর জায়গাটি ছিলো আমাদের কম্পিউটার সায়েন্স বিজ্ঞান বিভাগের উলটা দিকের বিল্ডিং, তাই সেটি খুঁজে পাওয়া নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হলো না। ইন্টারভিউ এর দিন আমি যথাসময়ে ইন্টারভিউ এর নির্ধারিত ভবনে যেয়ে পৌঁছালাম। ওখানে ডেস্কে থাকা মেয়েটিকে বললাম আমি কেনো এসেছি। ও কম্পিউটারে আমার নাম দেখে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে আমাকে একটা ফর্ম ধরিয়ে দিলো। ফর্মটি পূরণ করে আমি সোফায় বসে অপেক্ষা করতে থাকলাম আমার ইন্টারভিউয়ার এর জন্য।

একসময় আমার ইন্টারভিউয়ার আসলো। লম্বা মতোন এক আমেরিকান ভদ্রলোক এসে হাত বাড়িয়ে আমার নাম জিজ্ঞেস করলো আর নিজের পরিচয় দিলো? ও জানালো ও ভিজুয়াল স্টুডিও গ্রুপ এর একজন ম্যানেজার। আমি ওকে অনুসরণ করে ছোট একটি কক্ষে প্রবেশ করলাম। এখানেই আমার ইন্টারভিউ হবে। ও আমার সিভি বের করলো। আমার সিভি দেখে আমাকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো। সিভিতে যেসব স্কিলস এর কথা লিখেছি ওগুলো নিয়ে কয়েক মিনিট আলোচনা করলো। এরপর আমাকে স্ট্রিং সম্পর্কিত একটা প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করতে বললো। আমি কাগজে সেটির কোড লিখলাম। আমার কোড নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করলো। কিভাবে আমার এই কোড আমি ব্রেক করবো সেটা জিজ্ঞেস করলো। এই কোডকে টেস্ট করার জন্য টেস্ট কেইস লিখতে বললো। এরপর আরো কিছু টুকটাক প্রোগ্রামিং প্রশ্ন করে আমার ইন্টারভিউ শেষ করলো। শেষ করার আগে এখানে যা নিয়ম, আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমার কোনো প্রশ্ন আছে কিনা তার জন্য। আমি প্রস্তুত ছিলাম। তাকে মাইক্রোসফট এর সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট নিয়ে দুএকটা প্রশ্ন করলাম। ও আমাকে সেগুলোর ব্যাখ্যা দিলো। এভাবে শেষ হলো সেদিনের ইন্টারভিউ পর্ব।

ইন্টারভিউ শেষে আবার আমার ব্যস্ত পড়ালেখার জীবনে ফিরে গেলাম। কিন্তু মনে মনে ভীষণ অপেক্ষা করতে থাকলাম একটা ইমেইল এর জন্য! ওরা যদি আমাকে পছন্দ করে থাকে তাহলে আমাকে ওরা মাইক্রোসফট এর প্রধান অফিস ওয়াশিংটন স্টেইট এর রেডমন্ড নামক শহরে নিয়ে যাবে একদিন সারাদিন ইন্টারভিউ এর জন্য। আমার ইন্টারভিউ মোটামুটি ভালোই হয়েছিলো, কিন্তু সবাই নিশ্চয়ই এখানে ভালো ইন্টারভিউ দেয়! সবাই বলছিলো সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যে ওরা রেজাল্ট জানিয়ে দেয়, কিন্তু ২ সপ্তাহ চলে গেলেও ওদের ইমেইল এর কোনো দেখা মিললো না। এ পর্যায়ে আমি সব আশা ছেড়ে দিলাম। অবশেষে তিন সপ্তাহ পর আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার মেইলবক্সে মাইক্রোসফট থেকে একটা ইমেইল আসলো যে আমাকে মাইক্রোসফট এর প্রধান কার্যালয়ে একদিন সারাদিন ইন্টারভিউ এর জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এই ইমেইল পেয়ে আমার খুশি আর দেখে কে। ইন্টার্ণশীপ না পাই, নিদেনপক্ষে মাইক্রোসফট এর খরচে ওদের প্রধান কার্যালয় দেখে ঘুরে তো আসা যাবে!

সামনে ক্রিসমাসের ছুটি থাকায় আমার ইন্টারভিউ ওরা ঠিক করে ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। রেডমন্ড যাওয়া-আসার প্লেইন টিকেট, হোটেল এর বিল, থাকা-খাওয়া সবই মাইক্রোসফট বহন করবেঃ-) আমার ফ্লাইট এর দিন ঠিক করি ইন্টারভিউ এর আগেরদিন। কিন্তু ফ্লাইট এর দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই ভয়েস মেইল পাই এয়ারলাইন্স থেকে যে মত্রারিরিক্ত তুষারপাতের ফলে আমার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর নামই মনে হয় কপাল। আরেকটু বেলা গড়ানোর পর আমি যোগাযোগ করি মাইক্রোসফটএ আমার রিক্রুটার এর সাথে। সে তখন একটু সময় নিয়ে দুই সপ্তাহ পর আমার ইন্টারভিউ এর দিন পুননির্ধারণ করে। আমার অনুরোধে ওরা আমেরিকার তুষারপাতপ্রবণ এলাকা (মিড-ওয়েস্ট এলাকা) এড়িয়ে অন্য শহরের মধ্য দিয়ে কানেক্টিং ফ্লাইট ঠিক করে দেয়।

সৌভাগ্যক্রমে আমার নতুন ইন্টারভিউ এর দিন কোনো ঝামেলা ছাড়াই সিয়াটল এয়ারপোর্ট এসে পৌঁছাই। সিয়াটল এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা রেডমন্ডে আমার হোটলে চলে আসি। বিকেলে মাইক্রোসফট এর সাইদ ভাই আমাকে মাইক্রোসফট ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে নিয়ে আসেন। মাইক্রোসফট ক্যাম্পাস একটা বিশাল এলাকা। একশ'র মতো বিল্ডিং আছে এখানে। উইন্ডোজ আর অফিস (ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট ইত্যাদি) এর সবচেয়ে বড় দুটি প্রডাক্ট হলেও সার্চ, এমএসএন, এক্সবক্স, জুন মিউজিক প্লেয়ার, উইন্ডোজ সার্ভার, এসকিএল সার্ভার, ভিজুয়াল স্টুডিও - ইত্যাদি অসংখ্য গ্রুপ এর অফিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুরো এলাকা জুড়ে। সে যাক, মাইক্রোসফট এর অফিস এবং সফটওয়্যার ব্যবসা নিয়ে আরেকদিন লিখবো। আজ আমার ইন্টারভিউ নিয়ে লেখা যাক।

তো পরদিন আমি সকাল দশটার সময় বিল্ডিং ১৯ এ চলে যাই। বিল্ডিং ১৯ হচ্ছে মাইক্রোসফট এর রিক্রুটিং বিল্ডিং। সকল নতুন চাকুরীপ্রার্থীকে সবার আগে এখানে চেকইন করতে হয়। তো রিসেপশনে যেয়ে নাম বলতেই আমাকে বলা হলো আমার রিক্রুটার একটু পরে এসেই আমাকে নিয়ে যাবে। আমি লবিতে সোফায় বসে অপেক্ষা করতে থাকলাম। একটু পরই আমার রিক্রুটার ডেভিড এসে নিজের পরিচয় দিলো এবং আমাকে নিয়ে ওর অফিসএ নিয়ে গেলো। সেখানে আমার নন-টেকনিকাল ইন্টারভিউ হলো। আমি কেনো মাইক্রোসফটএ কাজ করতে চাই, আর কোন কোন কম্পানীতে এপ্লাই করছি, আমার স্যালারি এক্সপেক্টেশন কেমন, কী ধরণের কাজ আমার পছন্দ এই সব। ঘন্টা খানেক ওর সাথে থেকে ও আমাকে আমার প্রথম টেকনিকাল ইন্টারভিউয়ার এর কাছে পাঠিয়ে দেয়। মাইক্রোসফটএ বিভিন্ন বিল্ডিং এর মধ্যে সারাক্ষণ অনেক শাটল কার চলাচল করে। ও আমাকে সেরকম একটা কারে করে বিল্ডিং ৪০ এ আমার প্রথম ইন্টারভিউয়ার এর কাছে পাঠিয়ে দেয়।

বর্ণনা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার প্রথম ইন্টারভিউয়ার এর গল্প না বললেই নয়। যেহেতূ তখন লাঞ্চ এর সময় হয়ে গিয়েছেলো, তাই আমার প্রথম ইন্টারভিউটি ছিলো একটা লাঞ্চ ইন্টারভিউ। লাঞ্চ ইন্টারভিউ মানে হচ্ছে ইন্টারভিউয়ার চাকরীপ্রার্থীকে লাঞ্চএ নিয়ে যাবে এবং খাবার খেতে খেতে বিভিন্ন প্রশ্ন করবে। আমার প্রথম ইন্টারভিউয়ারের নাম ছিলো আ্যলেক্স। ও একজন চাইনিজ-আমেরিকান। গতো প্রায় বিশ-পঁচিশ বছর ধরে আমেরিকাতে আছে। তো ও আমাকে ক্যাফেটারিয়ার দিকে নিয়ে যেতে যেতে জিজ্ঞেস করলো আমার কী ধরণের খাবার পছন্দ। আমি মাছে ভাতে বাঙ্গালী। ওকে বললাম ঝাল মশলা দেওয়া ইন্ডিয়ান (বাংলাদেশী খাবার বললে ওরা চিনেনা, আমাদের টাইপের খাবারকে ওরা ইন্ডিয়ান খাবার বলে) খাবার আমি পছন্দ করি, আমেরিকান খাবার তখনো আমার মুখে রচে না। ও আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো, "চলো আমার সাথে"। আমাকে নিয়ে সোজা পার্কিং গারাজে যেয়ে ওর বিশাল জীপ গাড়িতে উঠলো। এরপর আমাকে নিয়ে গেলো মায়ুরি নামের এক ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টএ! মায়ুরিতে ভাত আর মশলা দেওয়া মুরগীর তরকারী খেতে খেতে দিলাম আমার মাইক্রোসফট এর প্রথম ইন্টারভিউ!

এরপর একে একে আরো তিনটি ইন্টারভিউ দিই। প্রত্যেক ইন্টারভিউয়ার তার ইন্টারভিউ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী ইন্টারভিউয়ার এর কাছে পাঠিয়ে দেয়। চার ইন্টারভিউয়ারের প্রথম দুইজন ছিলো উইন্ডোজ নেটওয়ার্কিং গ্রুপ এর, আর শেষের দুজন ছিলো উইন্ডোজ ফান্ডামেন্টালস গ্রুপ এর। শেষ ইন্টারভিউ নেন উইন্ডোজ গ্রুপ এর একজন ডিরেক্টর। তাঁর সাথে কথা বলার সময়ই মনে হয়েছিলো আমার ইন্টারভিউ মনে হয় খারাপ হয়নি। ইন্টারভিউ এর শেষে তিনি যে কথাগুলি বলেছিলেন সেটা এখনো আমার মনে আছে - "ঠিক আছে তুমি তোমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাও আর মনযোগ দিয়ে লেখাপড়া করো। দেখি আমি তোমার জন্য কী করতে পারি"। তাঁর এ ধরণের কথা আমার কাছে খুব পজিটিভ মনে হয়েছিলো!

এর এক সপ্তাহ পরেই আমার সেমেস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় আমি ওইদিন রাতেই ওহাইও ফিরে আসি। পরেরদিন সকালবেলা আমার দাঁতের ডাক্তার এর সাথে এপয়েন্টমেন্ট ছিলো। সকালে আমি আমার দাঁতের স্কেলিং করাচ্ছিলাম। আমার ফোন বন্ধ ছিলো। দাঁতের ক্লিনিক থেকে বের হয়ে মোবাইল অন করতেই দেখি একটা ভয়েস মেইল। মাইক্রোসফট থেকে আমার রিক্রুটার ডেভিড ফোন করেছে। ভয়েস মেইলএ ও জানালো আমার ইন্টারভিউ এর রেজাল্ট রেডি ওর কাছে, আমি যেনো ওকে কল ব্যাক করি। আমারতো তখন বুকের ভেতর ড্রামের বাড়ি হচ্ছে। আমি সাথে সাথেই ওকে কল করি। আর তখনি ও আমাকে আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো খবরগুলির একটি জানালোঃ মাইক্রোসফট এর দুটি গ্রুপ - উইন্ডোজ ফান্ডামেন্টালস আর উইন্ডোজ নেটওয়ার্কিং - আমাকে সামনের সামারের জন্য একটি ইন্টার্ণশীপ অফার করছে!! গ্রুপ দুইটির ডিরেক্টর দুজন আমাকে ফোন করে তাঁদের গ্রুপ সম্পর্কে বলবেন, এরপর আমি যে গ্রুপ পছন্দ করি সেটিতেই জয়েন করতে পারবো।

এটা ছিলো আমার জীবনের একটা শ্রেষ্ঠ সময়। নেটওয়ার্কিং এর প্রতি আমার আগ্রহ থাকায় আমি নেটওয়ার্কিং গ্রুপকেই সিলেক্ট করি। অবশ্য ফান্ডামেন্টালস গ্রুপ আমাকে ঘুষ হিসেবে এক্সবক্স গেমস, ওয়েব ক্যাম, বিভিন্ন ধরণের মাক্রোসফট কম্পানী স্যুভেনীর পাঠিয়েছিলো ওদের গ্রুপ এর দিকে আকৃষ্ট করার জন্য! কিন্তু ঘুষ দিয়ে কি আর সবকিছু হয়ঃ-)

২০০৭ এর জুন মাসের ১২ তারিখে আমি মাইক্রোসফটএ উইন্ডোজ নেটওয়ার্কিং গ্রুপ এর ওয়েব ক্লায়েন্ট টিম (যারা http প্রটোকল implement করে) এর একজন ইন্টার্ণ হিসেবে জয়েন করি। শুরু হয় আরেক বিচিত্র আনন্দ যাত্রা। সে যাত্রার খবর আগামী পর্বে। এইবেলা এখানেই ইতি টানি!
৩২টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×