১. আসলে হঠাৎ করেই মাথায় চিন্তাটা আসল 'কাল্পনিক ভালোবাসা'র পোস্টে মন্তব্য করতে গিয়ে। মন্তব্যর চুম্বক অংশ - "একই ভিকারুননেসা-তেই এক ছাত্রী ধর্ষণের পর লজ্জা বা আত্মহত্যা না করে সত্য প্রকাশ করে ঐ শিক্ষককে আইনের আওতায় নিয়েছে। তাহলে অরিত্রির জন্য তো ঐ ছাত্রীও প্রেরণা হতে পারত! আর আমরা শুধু শিক্ষকের দোষ দেখছি। আমরা কী আদৌ জানি বাবা মা-কে স্কুলে ডাকার পর বাবা-মাও অরিত্রিকে কোন বকা ঝকা করেছিল কিনা। বাবা বলেছিলেন কিনা এই মেয়ের জন্য এত লাখ খরচ করেছি, মা বলেছিলেন কিনা পাশের বাসার ভাবীকে কীভাবে মুখ দেখাব..."
২. কোন রোগী মারা গেলে যেমন তার স্বজনরা ঘটনা বিশ্লেষণ করার আগেই ডাক্তারদের দোষারোপ করে, ঠিক তেমনি অরিত্রি আত্মহত্যা করার জন্য শিক্ষকদের দায়ী করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অরিত্রির সামনে তার বাবা মা-কে অপমান করার কারণে সে আত্মহত্যা করেছে। অরিত্রি কি কোন সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছিল? তাহলে নিজের অপমান নাকি অভিভাবকের অপমান-এর কারণে আত্মহত্যা করেছিল তা কী করে বোঝা গেল? পত্রিকায় এসেছে, অরিত্রি নিজেও পা ধরে মাফ চেয়েছিল, সেই অপমানও তো আত্মহত্যার কারণ হতে পারে...
৩. পত্রিকার ভাষ্যমতে, "অরিত্রির মা-বাবার অভিযোগ, প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করায় তার মেয়ে দ্রুত বাসায় চলে যায়। পরে তারা গিয়ে দেখে অরিত্রি নিজ রুমে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় আছে।" এই ব্যপারটার জন্য আমরা কি অরিত্রির অভিভাবককে দায়ী করতে পারি না? স্কুলে মেয়েকে নিয়ে গেল এক সাথে। আর মেয়ে নাকি বাবা মাকে রেখে একাই বাসায় চলে আসে। তাহলে বাবা মা কেন সাথে সাথেই থামাল না বা বাসায় চলে আসল না? বাসায় তখন আর কে ছিল? স্কুল থেকে একা এসে রুমে একটা ১৫ বছরের মেয়ে ওড়না নিয়ে ফ্যানের সাথে বাঁধা এরপর ঝোলা ব্যপারগুলো এত সহজ নয়। বাবা মা কীভাবে এতটা কেয়ারলেস হলেন? আগের রাতে বাবা মা তাকে সান্ত্বনা দিয়েছিল নাকি গালি দিয়েছিল?
৪. বটমলাইন হল, অরিত্রি একটা সিস্টেমের শিকার। শিক্ষকও বাড়াবাড়ি করেছে রাগের মাথায়(অভিভাবকও উল্টা পাল্টা কিছু বলেছিল কিনা জানি না)। অভিভাবকরাও তথাকথিত সামাজিক প্রতিযোগীতার কারণে সন্তানদেরকে সব সময় চাপে রাখেন। সন্তানরাও ছোট থেকেই বুঝে যায়, রেজাল্ট ভাল না হলে অভিভাবকদের বকা শুনতে হবে, আত্মীয়দের সামনে লজ্জা পেতে হবে। শিক্ষকরাও কড়াকড়ি করেন, শৃঙ্খলা আনার জন্য। অাত্মহত্যাকারী নিজে মুক্তি পায় কিন্তু পিতা, মাতা, ভাই, বোন, বন্ধুদের চিরদিনের জন্য কষ্টে রাখে - এটা মনে করে আর কেউ যেন এই পথে না যায় সেই কামনা করি...
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৪৩