সকালে উঠিয়া আমি রবীন্দ্র সংগীত শুনে শুরু করি দিন
নজরুলের মদীনার কাফেলা গান শুনে
চোখে পানি বহে ঝির ঝির ।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আমি, নামাযে দাড়াই ঈমামের ঠিক পিছনে
জুন্মার নামাযে আমার আতরের গন্ধে
বাকী মুসল্লীরা ঘন ঘন নাক টানে ।
ট্রাফিক জ্যামে এলিয়ন গাড়ীতে বসে তসবীহ তে জপি আল্লাহর নাম
গাড়ীর সামনে পিছে ড্যাস বোর্ডে শোভা পায় কোরআন শরীফ,
আশে পাশের মানুষ ভাবে আমার, পাহার সম ঈমান ।
ওমরা হজ্জ, বড় হ্জ করেছি, করিয়েছি কতবার
তাই নামের আগে হাজী আমার অটোমেটিক
এবার ওরসে কুতুববাগের হুজুর কে দিতে হবে কোটি খানেক তাই কলবে করছে টিক টিক ।
কোরবানী ঈদে কিনি আমি বাজারের সবচেয়ে বড় ষাড়
রোজার সময় বাজার নিয়ে বাসায় আসতে ড্রাইভার সহ লাগে আরও দুইজন
আল্লাহ বলেছেন মাহে রমযানে খরচের হিসাব নাই তাই এত আয়োজন ।
গ্রামে আমার দানের মাদ্রাসায় সুবহে সাদিকে কোরআন তেলাওয়াত করে ইয়াতিম ছেলেরা
২০ কাটার বনানীর ডুপলেক্চ বাসায় থাকি
এসি আছে ১৬ টা ।
বউ আমি সন্তান মিলে চারজনের পরিবারে কাজের লোক ৯ জন
বিদেশী ব্রান্ডের মদে মাঝে মাঝে হয়
অতিথী অ্যাপায়ন ।
কানাডায় বাড়ী কিনেছি মেয়ের বিয়ে দিয়ে পাঠাব সেখানে
ছেলেটা বলছে থাকবেনা এই নচ্ছার দেশে
এবার আর একটা বাড়ী কিনতে হবে আমেরিকাতে ।
ধানমন্ডীর ২০ কাটা, আর উওরার ২৩ কাটা জায়গায় আলিশান অট্টালিকা হবে লোভি প্রমোটার ঘুরছে আমার পিছে
আড়াই তিন কোটি টাকার পাজেরো তে না চড়লে
ছেলে আর মেয়েটার যাচ্ছে মাথা হেট হয়ে ।
আমেরিকা থেকে ছেলেটা দেখভাল করবে বাকী প্লট আর ফ্লাট গুলোর
বউয়ের নামে সন্চয়পত্র, এফডিআর আর শেয়ার মিলিয়ে সামান্য পাচশ কোটি টাকায়
চলে যাবে শেষ দিন আমাদের দুই বুড়ি আর বুড়োর ।
********************************************************************
কবিতাটি অচীন দেশের কিছু সরকারী কর্মকর্তা দের নিয়ে লেখা যাদের বেতন সর্ব সাকুল্যে ২২, থেকে ৬২ কিংবা ৭০ হাজার । তিনি হতে পারেন একজন মেজর জেনারেল, অথবা পুলিশের বিভাগীয় কমিশনার কিংবা অতিরিক্ত সচিব, নয়তোবা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, বা জেলা জাজ কিংবা ডাক্তার বা ইন্জিনিয়ার ।
এটি একটি কাল্পনিক কবিতা । আমাদের বাংলাদেশের সরকারী আমলাদের সততা পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের সরকারী আমলাদের চেয়ে অনেক ভাল এবং এর প্রমান তারা বহুবার দেখিয়েছেন সারা বিশ্ব কে । বাংলাদেশ অচীরেই সুইজারল্যান্ড হল বলে অপেখ্খায় আছে । তাই পৃথিবীর অন্য কোন দেশের জীবিত মৃত বা অর্ধমৃত কারও সাথে এই কবিতার চরিএ মিলে গেলে তা হবে ভিষন ভাবে কাকতালীয় । কেউ দু:খ পেলে নিজের মনে করে পাবেন । এতে লেখকের কোন দায় নেই ।