somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রিক উপকথা: এরস ও সাইকি

০১ লা আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাইকি অর্থ ‘আত্মা’। এরস অর্থ ‘প্রেম।’ এ দুয়ে মিলে আত্মিক প্রেম। সাইকি ও এরস আবার গ্রিক ও রোমান উপকথার চরিত্রও বটে। এরা পরস্পর অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে, অনেক বিচ্ছেদ অনেক বিরহ সহ্য করে একে অন্যের কাছে এসেছিল। অনিন্দ্য সুন্দরী সাইকি প্রবল প্রতিরোধ অতিক্রম করে তার আরাধ্য এরসকে খুঁজে পেয়েছিল। এরস ও সাইকি উপাখ্যান আসলে শরীর ও মনের মিলনের এক আশ্চর্য ইউরোপীয় উপকথা। অবশ্য সাইকি ও এরস এর গল্পটি রোমান- গ্রিক নয়। যদিও আখ্যানটি গ্রিক উপকথার অর্ন্তগত হয়ে গিয়েছে। আখ্যানটি রোমান জগতে ‘সাইকি ও কিউপিড’ নামে পরিচিত। রূপকথার ওপর উপকথার রয়েছে গভীর প্রভাব। সে প্রভাবের এক উজ্জ্বল নিদর্শন ‘ এরস ও সাইকি’-র আখ্যান ...

অনেক অনেক বছর আগের কথা।
এক রাজার ছিল তিন কন্যা। ছোট মেয়েটির নাম সাইকি। সাইকি দেখতে ছিল খুবই সুন্দর।



সাইকি



সাইকির আরও একটি ছবি। কাজেই সুন্দরী মেয়ে বলতে ইউরোপে ঠিক কী বোঝায় তা বোঝা গেল ...

সাইকি এতই সুন্দর যে রাজ্যের লোকে প্রার্থনা করত আফ্রোদিতি নয়, আমাদের সাইকি হোক সৌন্দর্যের দেবী ।
লোকের এই ইচ্ছেই হল বিপদের কারণ।
কথাটা আফ্রোদিতির কানে গেল। খেপে উঠলেন প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী। নিষ্পাপ সাইকির মনে কাম জাগানো কথা ভাবলেন। তা হলেই নিস্পাপ সৌন্দর্য ছেয়ে যা কলঙ্কে। আফ্রোদিতির এর ছেলে ছিল। এরস। কামদেব। অত্যন্ত কুৎসিত দেখতে। এরস ই হল কিউপিড। ভারতীয় পুরাণের মদন দেব। প্রেম শর নিক্ষেপ করেন। এরসও । ছবি দেখুন।



শর হাতে মদনদেব বা কামদেব বা এরস বা কিউপিড

একালের তুমুল জনপ্রিয় একটি বাউল গান স্মরণ করি:

করি মানা কাম ছাড়ে না মদনে ... মদনে
আমি প্রেম রসিকা হব কেমনে।


এই মদনই হল এরস বা কিউপিড। ইউরোপের প্রেমের দেবতা। বাংলার বাউল শুদ্ধ প্রেমের চর্চা করতে চায়। সেই শুদ্ধ প্রেমই হল সাইকি। বারবার এরস তীর ছুড়লে আমি প্রেম রসিকা হব কেমনে ...বাউলের এই আর্তনাদ ও প্রশ্ন আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও এসে আছড়ে পড়ে .....
যাক। ছেলেকে লেলিয়ে দিয়ে আফ্রোদিতি কুকর্ম আগেও করেছে। আফ্রোদিতি এরস কে সাইকির কাছে পাঠালেন। এরস সাইকির রূপে মুগ্ধ। সাইকির বুকে সোনালি তীর ছুড়বে কি -সেই বরং তীব্র প্রনয়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। গভীর প্রেমে আচ্ছন্ন হয়ে অদৃশ্য হল। আফ্রোদিতি বুঝতে পারল তার ছেলে ব্যর্থ হয়েছে। সাইকি কারও প্রেমে পড়েনি। এবার অন্য পথ ধরি।
আফ্রোদিতি এবার নিজেই নিজের মায়াঘোর আরোপ করল সাইকির ওপর। সাইকির আর বিয়ের প্রস্তাব এল না।
সাইকির মা-বাবা উদ্বিগ্ন হলেন। সাইকির মা-বাবা সাইকির স্বামী হিসেবে কোনও ধনী অভিজাতকে চায়।
সাইকির মা গেল জ্যোতিষের কাছে । তা সে জ্যোতিষ বলল: ‘হায়। সাইকি কোনও মরণশীলকে বিয়ে করবে না। দূরের পাহাড়ে যে অপেক্ষা করে আছে সাইকিকে তাকেই দেওয়া হবে । যে অপেক্ষায় আছে সে দেবতা ও মানুষদের জয় করবে।’


রাজপ্রাসাদের হাহাকার পড়ে গেল। পাহাড়ে তো থাকে দৈত্য। বেচারা মা আর কি করেন। তিনি মনে করলেন সাইকির বিয়ে রাক্ষসের সঙ্গেই হবে। সবার মন খারাপ হল। সুন্দরী সাইকিকে ভালোবাসত সবাই। সাইকির মনটিও ছিল সুন্দর। সাইকি বুঝতে পারল ওর সুখের দিন শেষ।

নিজের দোষে না-হলেও দেবী আফ্রোদিতি আমার ওপর দারুন রেগে আছেন। ও ওর মা-বাবাকে বলল, আমার কপালে যাইই থাকুক । তোমরা আমাকে নির্জন পাহাড়েই রেখে এসো।
অনেক দ্বিধাদ্বন্দের পর সাইকির মা-বাবা রাজী হলেন। সাইকি পাহাড়ের যেতে লাগল। পিছন পিছন গেল রাজ্যের শোকার্ত অধিবাসীরা। সাইকির আসন্ন মৃত্যুর কল্পনায় তারা বিষন্ন। পাহাড়ের ঢালে সাইকিকে একাকী রেখে সবাই চলে গেল। সাইকি পাহাড় চূড়ায় উঠতে লাগল। একা। নির্জন পাহাড় চূড়ায় কত যে গাছপালা। পায়ের তলায় রুক্ষ পাথর। তবে সাইকি মন শক্ত করল। কান্না পেলেও কাঁদল না।
এক সময় ঘুমিয়ে পড়ল হতভাগ্য মেয়েটি।



সাইকিদের আজও একা পথে দেখা যায়

জেফার, দয়াশীল পশ্চিমা বায়ূ, সাইকির দুঃখ দেখে মুহূর্তের জন্য থমকে গেল। তারপর ওকে উড়িয়ে নিয়ে গেল পাহাড়ের নিচের মনোরম এক উপত্যকায়, যেখানে পবর্তর্শীষের রুক্ষ পাথরের বদলে রয়েছে নম্র ঘাসের সবুজ বিস্তার।
সাইকি জেগে উঠল।
কই, কোনো দৈত্য কে তো দেখা যাচ্ছে না। বরং কাছেই রয়েছে সবুজ বনানী।
কৌতূহলী হয়ে আশায় বনের দিকে যেতে লাগল সাইকি।
ঝর ঝর পানির শব্দ শুনল। উৎসের খোঁজ নিতে লাগল। সবুজ অরণ্যের গভীরে আরও গভীরে যেতে লাগল। শেষে ঝর্নাসমেত টলটলে এক পানির আধার খুঁজে পেল। আরে ! ওদিকে একটি রাজপ্রাসাদও আছে দেখছি! কী অদ্ভূত! আমি স্বপ্ন দেখছি না তো।
ঠিক তক্ষুনি অদৃশ্য থেকে কে যেন বলল: প্রাণপ্রিয় সাইকি। প্রাসাদটি তোমার।
কে! কে তুমি!
এই প্রশ্নের উত্তর এল না। তবে বলা হল: প্রাসাদের অদৃশ্য ভৃত্যরা তোমার সব আদেশ মেনে চলবে।
সাইকি চঞ্চল হয়ে ওঠে। প্রাসাদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। চারি দিকে অদ্ভূত অদ্ভূত সব জিনিস। তবে ক্লান্ত বোধ করল। সোনার আসনে ধপ করে বসে পড়ল। খিদেও টের পেল। ইস, এখন যদি রুটি আর ভেড়ার মাংস খেতে পারতাম। ভাবতেই রুপোর রেকাবিতে রুটি আর ভেড়ার মাংস এসে হাজির।
ওমাঃ যাদুরাজ্যে এসে পড়লাম বুঝি!
সাইকি পেটপুড়ে খেল।
সন্ধ্যায় প্রাসাদ হয়ে উঠল অন্ধকার। আর সে অন্ধকারে কে যেন কথা বলে উঠল।
সাইকি আর্তকন্ঠে বলল, দোহাই তোমার! আমার চোখের সামনে এসো। একটিবার আলোয় এসো।
না। যে ছিল অন্ধকারে সে আর আলোয় এল না।



এরস

যে ছিল অন্ধকারে সে আসলে এরস। অবশ্য সে কথা সে বলল না। মে ন থাকার কথা: ... আফ্রোদিতি এরস কে সাইকির কাছে পাঠালেন। এরস সাইকির রূপে মুগ্ধ। সাইকির বুকে সোনালি তীর ছুড়বে কি -সেই বরং তীব্র প্রনয়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। গভীর প্রেমে আচ্ছন্ন হয়ে অদৃশ্য হল।
যাক। এরস দেখা না দিলেও সাইকির সেবায় যত্নশীল থাকল। অদৃশ্য দাসদাসী দিয়েছে। সব ইচ্ছে পূরণ করছে। অবশ্য মুখ দেখাচ্ছে না। ওদিকে সাইকি ভাবল আমার দৈত্যর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। নইলে সে দেখাদিচ্ছে না কেন। ভেবেছে আমি তার ভয়াল মুখ দর্শন করে ভয় পাব। ভুল ভেবেছে।
এক রাত্রে সাইকি বলল, আমার বোনদের কথা খুব মনে পড়ে। ওরা কি আসতে পারে এখানে? এরস সাইকির কন্ঠে নিঃসঙ্গতা টের পেয়ে রাজী হল। অবশ্য বুঝতে পাল এতে ক্ষতিই হবে। রাজপ্রাসাদে সাইকির বোনেরা আসল । তখন কত কথা হল। আমরা শুনিছি তোর ড্রাগনের সঙ্গে বেয়ে হয়েছে, তোকে বেঁধে রেখেছে, খেয়ে ফেলবে বলে।
কই না তো। বলে সব খুলে বলল।
তোর স্বামীকে এখনও দেখিস নি!
না।
হতভাগী। বলে বোনেরা পরমর্শ দিল। রাতে বেলায় প্রদীপ নিয়ে যাবি, বুঝলি। ছোরাও নিস। স্বামী যদি ড্রাগন হয় তাহলে কেটে ফেলিস।
পরামর্শ সাইকির মনে ধরল।
একরাতে ইরস ঘুমোতে গেল। সাইকি জেগে রইল। তেলের প্রদীপ জ্বালাল। তারপর ঘুমন্ত এরসের মুখের দিকে চাইল। চিনতে পারল। প্রেমে অভিভূত হল। হাত কাঁপল। তেল পড়ল এরসের মুখের ওপর। এরস জেগে উঠল। তারপর চিৎকার করে জানালা দিয়ে উড়ে চলে গেল।
সাইক চেয়ে দেখল প্রাসাদ আর নেই। চারি দিকে কেবলই মধ্যরাতের ঝিঁঝি ডাকা জঙ্গল।
সাইকি অবশ্য আশা ছাড়ল না। খুঁজে খুঁজে বোনদের বাড়ি গেল । বোনের স্বামীদের বোনদের বিশ্বাসঘাতকতার কথা বলল। সেখান থেকে কত জায়গায় যে গেল । ওর স্বামীকে খুঁজতে লাগল। একদিন শেষ বিকেলে পৌঁছল এক বিরাট হলঘরে। হলঘরের মেঝের ওপর শস্যকণা, বার্লি আর গমের স্তূপ । সাইকি ওসব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখল। দিমিতার (ফসল কাটা ও ঘরে তোলার দেবী ) আড়াল থেকে দেখতে লাগল। দেবী দিমিতার খুশি হলেন। সাইকির কাজ শেষ। মনে হল হলঘরটি আসলে দেবালয়। দিমিতার আড়াল থেকে বেরিয়ে এলেন। অত্যন্ত খুশি হয়ে বললেন; সাইকি, সত্যি তুমি সুখের যোগ্য। সুখ তুমি পাবে। এখন তা হলে দেবী আফ্রোদিতির উপাসনালয়ে যাও। তার কাছে ক্ষমা চাও। সম্ভবত তিনি তোমার ধৈর্য্যরে পুরস্কার দেবেন।
সাইকি অবাক হল। স্বয়ং দিমিতার আমার জন্য এক ভাবছেন! ও দেবীর আরও কাজ করে দিল। কাজ শেষ করে রওনা হল দেবী আফ্রোদিতির উপাসনালয়ের উদ্দেশে । সেখানে প্রার্থনা করল।



দেবী আফ্রোদিতি

হায়! ঈর্ষাকাতর আফ্রোদিতি সাইকির মুখের দিকে তাকালেন না। বললেন তুমি সত্যি অনুতপ্ত?
হ্যাঁ দেবী।
তা হলে আমার আরও কাজ করে দেবে?
আচ্ছা, দেব।
আফ্রোদিতি ঘরের মেঝের ওপর শস্যকণা, মটরশুঁটি ও মসুরের ডাল ছড়িয়ে ছিল । এসব আসলে ঘুঘু পাখির খাদ্য। দেবীর পবিত্র পাখি ঘুঘু। দেবী বললেন, সাইকি।
জ্বী বলুন।
রাত ফুরোবার আগেই এসব বেছে আলাদা করে রাখবে। শস্যকণার জায়গায় শস্যকণা, মটরশুঁটির জায়গায় মটরশুঁটি ও মসুরের ডালের জায়গায় মসুরের ডাল ।
সাইকি দীর্ঘশ্বাস ফেলে। কাজ শুরু করে দেয়।
(এখানে আমরা কি সাইকির ভিতর সিনড্রেলিনাকে পাচ্ছি? এ লেখার গোড়ায় আমি বলেছিলাম না রূপকথার ওপর উপকথার রয়েছে গভীর প্রভাব। সে প্রভাবের এক উজ্জ্বল নিদর্শন ‘এরস ও সাইকি’-র আখ্যান ...)
যাক। ঘরের দেওয়ারের ফাটলে ছিল অসংখ্য পিঁপড়ের সারি। তারা এসে সাইকিকে সাহায্য করতে লাগল। কাজেই সকালের আগেই কাজ শেষ হল।
সকালে আফ্রোদিতি এলেন।
কাজ শেষ দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। এরস কি একে সাহায্য করল? হুমম। তবে দেবী সাইকিকে তাড়িয়ে না দিয়ে কালো রুটি খেতে দিলেন এবং বললেন, কাল সকালে আরও কাজ করতে হবে।
আচ্ছা।
সাইকি ঘুমিয়ে পড়ল।
সাইকি পরের দিন সকালে উঠল।
আফ্রোদিতি বললেন: Go now to yonder grove where the sheep with the golden fleece are wont to browse. Bring me a golden lock from every one of them, or you must go your ways and never come back again. (এখন দূরের কুঞ্জবনে যাও- যেখানে সোনালি পশমের ভেড়ারা চরে বেড়াচ্ছে। ওদের প্রত্যেকের থেকে আমার জন্য স্বর্ণালী গুচ্ছ আন,অথবা তোমার পথে চলে যাও। আর কখনও এসো না।)
এই বলে আফ্রোদিতি চলে গেলেন।
কুঞ্জবনের ভিতরে যেতে হলে ছোট একটি নদী পেরোতে হয়।
সাইকি ছোট্ট নদীতে নামল। আর তখনই নলখাগড়া কেঁপে উঠল । আর জলদেবীরা (এদের একত্রে নিয়াডস বলে) বলল: ‘না, না, না। লক্ষ্মীসোনা। সতর্ক হও। ওসব সোনালি ভেড়ারা মোটেও শান্ত নয়। যতক্ষন সূর্যটা জ্বলছে। ততক্ষন ওরাও হয়ে থাকে প্রজ্জ্বলিত শিখার ন্যায় প্রখর। আর যখন ছায়ারা হয়ে ওঠে দীর্ঘ। ভেড়ার দল গাছের নীচে জিরাতে যায়, ঘুমায়। তখন তুমি নির্ভয়ে নদী পেরিয়ে চারণভূমির কাঁটাগাছ দিয়ে স্বর্ণালী রোমরাজী তুলে নিও ।’
ধন্যবাদ, নিয়াডস।
তোমাকেও ধন্যবাদ, সোনা।
নিয়াডসরা যা যা বলল, তাইই করল সাইকি।
আফ্রোদিতি ফিরে এলেন।
সাইকি দেবীকে ভক্তিভরে ভেড়ার সোনালি রোমগুচ্ছ দিল। এতে দেবী আরও ক্রোধান্বিত হয়ে উঠলেন। কোনও সন্দেহ-এসব হল এরসের কাজ।
দেবী এরসকে অভিশাপ দিলেন।



এই ছবিতে দেবী আফ্রোদিতির মনোভাব যেন ফুটে উঠেছে

এরপর সাইকিকে ফাঁসিয়ের দেওয়ার জন্য ফন্দি আঁটলেন। দেবী সাইকিকে ছোট একটি বাক্স দিলেন। দিয়ে বললেন, এই মেয়ে শোন, এখন তুমি পাতালে নেমে যাও। ওখানে পার্সিফোনের (পাতালের রানী, বড্ড শীতল) সঙ্গে দেখা কর। ওর কিছু রূপ (বিউটি) এই বাক্সের ভরে এনে আমাকে দেবে। যাও।
বেচারী সাইকি। দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সবাই জানে মরণশীল কেউই একবার পাতালে গেলে আর কখনও ফেরেনা। কী আর করা। অবতরন করার প্রস্তুতি নিতে লাগল। অদৃশ্য কন্ঠস্বর শুনতে পেল। এরসের (অবশ্য সাইকি জানল না) ...কন্ঠস্বর বলল, পাতালে যেও তবে বিপদজনক পথে যেও না। আর পার্সিফোনের রূপ বাক্সে একবার ভরা হলে ওটা আর খুলো না কিন্তু।
এরস যা যা বলল তাই করল সাইকি। তারপর পার্সিফোনের রূপ ভর্তি বাক্স নিয়ে সূর্যালোকে ফিরে এল। সাইকির কী কারণে মনে হল দেবী আফ্রোদিতির তো আর রূপের প্রয়োজন নেই ... ও বাক্সটা খুলল। সঙ্গে সঙ্গে অচেতন হয়ে পড়ল। ওদিকে এরস সাইকিকে খুঁজছিল । পেল। সাইকির জ্ঞান ফিরল। এরস সাইকিকে মায়ের দেবী আফ্রোদিতির) কাছে ফিরে যেতে বলল। এবং অপেক্ষায় থাকতে বলল। সাইকি তাই করল।
এরস অলিম্পাসে ফিরে গেল। অলিম্পাস হল গ্রিক দেবতার থান। দেবতারা তখন ভোজনে বসেছিল। এরস সাইকির গল্প বলল। তারপর মাকে তুষ্ট করতে দেবতাদের অনুরোধ জানাল। দেবতারা সাইকির গল্পের মাধুর্যে তুষ্ট হলেন। তারা আফ্রোদিতি কে বকাঝকা করলেন। এরপর দেবতাদের নির্দেশে দূত হারমেস পৃথিবীতে নেমে এল। সাইকিকে অলিম্পাসে নিয়ে এল। লাজুক কুমারীকে দেবতারা বললেন: পেয়ালাপূর্ন অ্যাব্রোসিয়া (অমৃত) পান কর।
যৌবনের দেবী হেবে (ইনিই রোমান দেবী জুভেন্টাস; এ নামে ইটালিতে ফুটবল টিম রয়েছে ...) তিনি তরল অমৃতপূর্ণ পেয়ালা সাইকির দিকে বাড়িয়ে দিলেন।
সাইকি পান করল।
এরপর ও আর অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ফুটল।
এবং এরস ওর হাত ধরল।



এর পর ওরা আর আলাদা হয়নি।




আমরা তো Psychedelic art কি music এর কথা শুনেছি; এর মূলেও ওই Psyche ...
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১০ রাত ৮:২৮
৩৯টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×