আমরা অনেকেই জানি, কেপ অভ গুড হোপ জায়গাটি দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণ পশ্চিম কোণে, আটলান্টিক সমুদ্রের পাড়ে । ১৪৮৮ খ্রিস্টাব্দ। পর্তুগীজ নাবিক বারটোলোমেও দিয়াস। তিনি পর্তুগাল থেকে যাত্রা শুরু করে কেপ অভ গুড হোপ-এ উপনীত হলেন। এ খবরে ইউরোপে দারুন হইচই পড়ে গেল। তখন শোনা যাচ্ছিল- কেপ অভ গুড হোপেরও পুবে আরও একটি সমুদ্র রয়েছে। ভারত সমুদ্র। সে সমুদ্র পেরিয়ে নাকি যাওয়া যায় অগাধ সম্পদের দেশে। ইন্ডিজ-এ।
আমরা কলম্বাসের নাম জানি: জাতে স্পেনীয়, দুর্ধষ নাবিক, নৌবিদ্যায় পটু। স্পেন কর্তৃপক্ষ তাকে পাঠাল ধনরত্মময় ইন্ডিজের উদ্দেশে।
১৪৯২ সাল। ইন্ডিজ যাবার পথে পথ ভুল করে পৌঁছে গেলেন ক্যারিবিয় দ্বীপে ।
সে সমস্ত আরেক কাহিনী।
সেই পঞ্চদশ শতকটায় স্পেনের সঙ্গে রেষারেষি ছিল পর্তুগালের। পর্তুগাল কর্তৃপক্ষ ভাবছিল আমাদের আগেই ইন্ডিজে পৌঁছে কলম্বাস সেখানকার সম্পদ স্পেনের হাতে তুলে দেবে। পর্তুগালের রাজা তখন দ্বিতীয় জন। তিনি ইন্ডিজ অভিযানের কথা ভাবলেন।
পর্তুগালের নৌ অভিযানের সময় ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন সপ্তম হেনরি।
তার সময়েই প্রথম শোনা গেল ইন্ডিজের কথা। তখনও তিনি জানতেন না যে ইংল্যান্ডের ভাগ্য অদূর ভবিষ্যতে ইন্ডিজের ওপর কতখানি নির্ভর করবে।
যা হোক। রাজা দ্বিতীয় জন আকস্মিকভাবে মারা গেলেন। তার স্থলাভিষিক্ত হলেন রাজা মানুয়েল। তিনিও ইন্ডিজ অভিযানের কথা ভাবলেন। কিন্তু কাকে দায়িত্ব দেওয়া যায়? রাজার কপালে ভাঁজ পড়ল।
পর্তুগালের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের নাম সাইনেস। ওখানে ভাস্কো দা গামা এক প্রতিভাধর নাবিক জন্মেছিলেন- ১৪৬৯ খ্রিষ্টাব্দে। তরুন বয়েসে নৌবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল গামা। রাজা মানুয়েল ভাস্কো দা গামার গুণের কথা শুনেছিলেন। তিনি গামাকে ইন্ডিজ অভিযানের দায়িত্ব দিলেন।
২০ মে। ১৪৯৮। পর্তুগাল থেকে যাত্রা শুরু করে গামার জাহাজ ভারতের কালিকট বন্দরে পৌঁছল। এই প্রথম কোনও ইউরোপীয় জাহাজ নৌপথে ভারতবর্ষে পৌঁছল। এই খবরে ইউরোপে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল। ইউরোপে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল কে কার আগে ইন্ডিজ পৌঁছবে।
দেখতে দেখতে ষোড়শ শতাব্দী এসে গেল।
গামার দেখান পথ ধরে অনেকে ইউরোপীয় নাবিকই তখন ভারত ছাড়িয়ে আরও পুবের মালয় দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছে গেছে। ইউরোপের লোকে তখন ইন্ডিজ বা ইস্ট ইন্ডিজ (বা ইস্ট ইন্ডিয়া) বলতে বুঝত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জকে, বিশেষ করে মালয় দ্বীপপুঞ্জকে। আসলে ইউরোপে তখন ইন্ডিজ বলতে বোঝাত সমগ্র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া।
ব্যবসাবানিজ্য (এবং লুন্ঠনের উদ্দেশ্যে) বিভিন্ন দেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী গঠন করা হয়। যার কথা আগেই বলেছি।
২
ইংল্যান্ডে গড়ে ওঠে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী। ১৬০০ সালে। এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল ঐ বেনিয়া কোম্পানীটি।
সেই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষন করা যাক।
পঞ্চদশ শতকটা ইংল্যান্ডের জন্য ছিল অশুভ। যুদ্ধ। প্লেগ। তাতে জনসংখ্যা হ্রাস। রাজ্যজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দারুন অবনতি হয়েছিল। সৃষ্টি হয়ে ছিল ব্যাপক অরাজকতা। সামন্ত প্রভূরা হয়ে উঠছিল শক্তিশালী। অবশ্য কুটির শিল্পের বিকাশ হয়েছিল। ঘরে ঘরে উলের কাপড় তৈরি হত। তাতে ভেড়ার লোমের চাহিদা বাড়ছিল। ফলে ভূস্বামীরা চাষবাস বন্ধ করে দিয়ে ভেড়া পালতে শুরু করে দিল। এ লক্ষ্যে তারা কৃষিজমি ঘিরে ফেলছিল। এভাবে চাষবাস না-হওয়ায় গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি ধ্বসে পড়ে আর কী।
এ রকম দারুণ বিপর্যয়কর সময়ে ইংল্যান্ড এক যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজছিল।
১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। সপ্তম হেনরি নিজেকে ইংল্যান্ডের রাজা ঘোষনা করলেন।
এরপর পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে লাগল। কয়েকটি পদক্ষেপের পর ব্যবসাবানিজ্য গতি লাভ করে। রাজা কর বসালেন। যুদ্ধ না করে সে অর্থ বিনিযোগ করলেন।
সপ্তম হেনরির মৃত্যুর পর ইংল্যান্ডের রাজা হলেন অস্টম হেনরি। (১৪৯১-১৫৪৭)
১৫৩০ খ্রিস্টাব্দ। ইংল্যান্ড তখন এক বিপ্লবের ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় রোমের (ক্যাথলিক র্গীজার) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় ইংল্যান্ডের, খ্রিস্টীয় মঠতন্ত্রের অবসান ঘটে, পার্লামেন্টের বিকাশ লাভ করে, বিশেষ করে হাউস অভ কমন্স; প্রিভি কাউন্সিল গঠন করা হয়।
তাই বলছিলাম ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। ততদিনে জয়েন্ট স্টক কোম্পানী গঠিত হয়ে গেছে।
অস্টম হেনরি মারা গেলেন। ১৫৫৮ সাল। প্রথম এলিজাবেথ (১৫৩৩-১৬০৩) ইংল্যান্ডের রানী হলেন। তার সময়ে ইংল্যান্ড এক নতুন যুগে পা রাখল। যেমন তাঁর সময়েই পার্লামেন্ট ও প্রিভি কাউন্সিল সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাঁর সময়ই প্রোটেস্টান ধর্মটি ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রোথিত হয়ে যায়। তাতে ব্যবসার দারুন অগগ্রতি হয়। পন্ডিতেরা পুঁজিবাদের বিকাশ আর প্রোটেস্টান ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। স্পেনের ছিল দুর্দান্ত নৌশক্তি। তার বিরুদ্ধেও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে রানী প্রথম এলিজাবেথের সময়ই। সাহিত্য সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও ঐ এলিজাবেথীয় সময়টা ছিল অনন্য। শেক্সপিয়ার, মার্লো রঙ্গমঞ্চ আলোকিত করে রাখলেন। স্পেনসার স্বাধীন চিন্তাকে। সে স্বাধীন চিন্তা তরঙ্গায়িত করল এমন কী অর্থনীতিকে।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর পুরো নাম অবশ্য “ দি গর্ভনর অ্যান্ড কোম্পানী অভ মার্চেন্টস অভ লন্ডন ট্রেডিং ইনটু দি ইস্ট ইন্ডিজ।” ১৬০০ সাল। ৩১ ডিসেম্বর রানী। এলিজাবেথ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অরিজিনাল চার্টার অনুমোদন করেন। তবে, ব্যবসায়ীদের প্রতি রানীর একটা শর্ত ছিল। তা হল- খ্রিস্টান রাজপুত্রের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করা যাবে না।
না, লোভের রাজ্যে এরকম শর্ত মানা সম্ভব না। ১৬১২ সালে পর্তুগিজদের মুখোমুখি হয়েছিল ইংরেজরা। ভারতে। দুপক্ষের তুমুল লড়াই বেধেছিল। ঐ পর্তুগিজরাও ছিল খ্রিস্টান রাজপুত্র।
যা হোক। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী পরিচালনা করেন একজন গর্ভনর। আর ২৪ জন নির্বাচিত ডাইরেক্টর।
৩
রানীর আজ্ঞা পেয়েই ইংল্যান্ডের বন্দরগুলি ভড়ে উঠল পূর্বগামী জাহাজে জাহাজে। তোলা হল পাল। হালে দক্ষ নাবিক। পাটাতনে সক্ষম কামান। জাহাজ ভাসল আটলানটিকে। তারপর পুবমুখো বাঁক নিল দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণ কোণে। তারপর ভারত সমুদ্র। ভারত মহাসাগরে ওলন্দাজ (ডাচ) ফরাসী ও পর্তুগীজ জাহাজ। তাদের সঙ্গে নিত্য কামানের গোলা বিনিময় হতে লাগল। (পরের) রতেœর এমনই লোভ! পুঁজির এমনই দাপট!!
যাক। ইন্ডিজ যাত্রা করে প্রথম প্রথম নাকি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর জাহাজগুলি সেই জাপান অবধি চলে গিসল। দক্ষিণ চিন সাগর। মালয় সাগরে ভাসতে দেখা যেত পালতোলা ব্রিটিশ জাহাজ। নব্য জলদস্যু! যে দস্যুতার অনুমোদন দিয়েছেন উইলিয়াম শেক্সপীয়ারকে নিয়ে গর্ব করা সভ্য রাষ্ট্রের এক রানী!
তখন মালয় সাগরে ওলন্দাজদের (ডাচরা) আনাগোনা। মালয় দ্বীপপুঞ্জে নেমে জাহাজ ভর্তি করে দারচিনি তুলছে। দেশে নিয়ে বিক্রি করবে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীও তাই করতে লাগল। জাহাজ ভরে কলা তুলতে লাগল। ফলে প্রতিযোগীতা তৈরি হল। ধীরে ধীরে দুপক্ষের মুখোশই গেল খুলে। অত্র অঞ্চলে, মানে মালয় দ্বীপপুঞ্জে বানিজ্যিক আধিপত্য নিয়ে বাধল সংর্ঘষ ।
পরে অবশ্য প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী মালয় সাগরে ছেড়ে চলে যায়।
চোখ দেয় ভারতের দিকে।
৪
তখন বলছিলাম, পর্তুগালের নৌ অভিযানের সময় ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন সপ্তম হেনরি।তার সময়ে শোনা গেল ইন্ডিজের কথা। তিনি জানতেন না ইংল্যান্ডের ভাগ্য অদূর ভবিষ্যতে ইন্ডিজের ওপর কতটা নির্ভর করবে।
১৬০৯ সালে ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন প্রথম জেমস। তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গুরুত্ব বুঝেছিলেন ঠিকই। তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কে একচেটিয়া ব্যবসা করার ব্যাপক অধিকার দিয়ে একটি শ্বাশত চার্টার প্রদান করেন।
সেই শ্বাশত চার্টার নিয়ে ভারতবর্ষের পুব ও পশ্চিম উপকূলে ভেড়ে ইংরেজ বেনিয়া জাহাজ। তারপর তারা স্থানীয় শাসকদের সঙ্গে সমঝোতা করে। ১৬১০ ও ১৬১১ সালে তারা মাদ্রাজ (বর্তমান চেন্নাই) ও বোম্বে ( বর্তমান মুম্বাই) তে ফ্যাক্টরি ও বানিজ্যকুঠি নির্মান করে।
অবশ্য অবাধ ব্যবসাবানিজ্যের সুবিধা সহজ হয়নি।
তার কারণ আছে।
সায়ালি জায়গাটা গুজরাটে। সুরাটের কাছে। ১৬১২ সাল। পর্তুগিজদের মুখোমুখি হল ইংরেজরা। দুপক্ষের তুমুল লড়াই হল। ভারতবর্ষের ইতিহাসে ঐ যুদ্ধটা সোয়ালি যুদ্ধ নামে পরিচিত।
যুদ্ধে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী জিতে যায়।
এরপর থেকেই তারা ভারতবর্ষ জুড়েই আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে।
১৬১৫। প্রথম জেমস তখনও ইংল্যান্ডের রাজা। তিনি স্যার টমাস রো কে তার প্রতিনিধি নিযুক্ত করে মুগলদের দরবারে পাঠান। মুঘল সম্রাট তখন জাহাঙ্গীর। (১৬০৫-১৬২৭) টমাস রো-এর মাধ্যমে মুগলদের সঙ্গে ব্রিটিশদের একটি বানিজ্যিক চুক্তি সম্পন্ন হয়। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটিশরা ভারতে বসবাসের অধিকার পায়। সুরাট ও অন্যত্র ফ্যাক্টরি ও বানিজ্যকুঠি স্থাপন করার অধিকার পায়। বিনিময়ে ইউরোপের বাজারের জন্য ভারতীয় পন্যের অবাধ সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। সম্রাট জাহাঙ্গীর সন্তুষ্ট হয়ে ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমস-এর উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেন ।
৫
এর পরের ঘটনা আমরা জানি। ষোড়শ শতক ফুরিয়ে গেল। ব্রিটিশ বেনিয়ারা ভারতবর্ষজুড়ে তাদের থাবা বিস্তার করল । চিড় ধরল, টলে উঠল হাজার বছরের স্থির স্বয়ংসম্পূর্ন ভারতবর্ষের গ্রামগুলো। বাংলার গ্রামগুলো।
এল সপ্তদশ শতক।
আরও ৫৭ বছর কাটল।
১৭৫৭। পলাশীর যুদ্ধ।
ক্ষমতার পালাবদল হল বাংলায়। দীর্ঘকাল বঙ্গবাসী বাংলার ক্ষমতায় নেই। এক বিদেশি শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে অন্য এক বিদেশি শাসকগোষ্ঠীর কাছে ক্ষমতা চলে যায়।
১৭৬৫। দিউয়ানি লাভ ব্রিটিশ বেনিয়রা। বাংলা ও বিহারের কর আদায়ের ক্ষমতা পেল তারা।
১৭৭২ সাল। কোলকাতাকে নির্বাচিত করা হল ব্রিটিশ-বাংলার রাজধানী হিসেবে । কাজেই বাংলার পূর্বাঞ্চল ক্ষানিক পেছনে পড়ে রইল।
আগে একবার বলেছি, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী পরিচালনা করেন একজন গর্ভনর। আর ২৪ জন নির্বাচিত ডাইরেক্টর।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর পক্ষে বাংলার গর্ভনর জেনারেল হলেন ওয়ারেন হেষ্টিংস। ডি ফেকটো (কার্যত, বৈধ ক্ষমতা থাক বা না-থাক) ক্ষমতা বলে বাংলা পরিচালনা করতে লাগল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী। এভাবে শুরু হল বাংলার ইতিহাসে শোষন আর দূর্নীতির এক মর্মান্তিক অধ্যায়। সে প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক সিরাজুল ইসলাম লিখেছেন,The Palashi change did not bring about a great deal of income for the company as was reckoned by Clive before the episode. Rather, the company, which used to make great profits from its Bengal trade, was running at a loss after Palashi. The company's debts were increasing every year. The Court of Directors saw that the company officers had made Bengal their own sack of gold. All of them engaged in private trade without giving priority to the company's business. Clive was sent out again, entrusted with the most difficult agenda: making the company's investment in Bengal profitable. (বাংলাপিডিয়া)
৬
বাংলায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অনৈতিক কর্মকান্ডে ইংল্যান্ডের সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল। তখন ব্রিটেনে চালর্স জেমস ফক্স ও ফ্রেডরিখ নর্থের কোয়ালিশন সরকার। চালর্স জেমস ফক্স ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কার্যক্রমকে দূষিত স্বৈরাচার বলে আখ্যায়িত করেছেন। ১৭৮৩ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এ প্রসঙ্গে একটি ভাষন দেন। ভাষনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকায় (মূল ইংরেজী) আমরা পাঠ করতে পারি। এই ভাষনটি তৎকালীন সচেতন মানুষের প্রতিক্রিয়া ফুটে উঠেছে। আমার মনে হয়, ভাষনটি পাঠের ফলে ব্রিটিশ গনতন্ত্রের বিকাশ সম্বন্ধে আমাদের ধারনা স্বচ্ছ হতে পারে। ভাষনটি পাঠ করতে করতে
আমরা এও ভাবতে পারি যে ১৭৮৩ সালের দিকে মুগলদের চিন্তাভাবনা কি রকম ছিল। কতটা পিছিয়ে থাকার কথা ভাবছিল তারা? ভারতবর্ষ ও ইংল্যান্ডের সমাজচেতনার ফারাকটিও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ফক্সের বক্তব্য।
যাক। ফক্স বলছেন, Freedom, according to my conception of it, consists in the safe and sacred possession of a man's property, governed by laws defined and certain; with many personal privileges, natural, civil, and religious, which he cannot surrender without ruin to himself; and of which to be deprived by any other power is despotism. This bill, instead of subverting, is destined to give stability to these principles; instead of narrowing the basis of freedom, it tends to enlarge it; instead of suppressing, its object is to infuse and circulate the spirit of liberty.
What is the most odious species of tyranny? Precisely that which this bill is meant to annihilate. That a handful of men, free themselves, should execute the most base and abominable despotism over millions of their fellow creatures; that innocence should be the victim of oppression; that industry should toil for rapine; that the harmless labourer should sweat, not for his own benefit, but for the luxury and rapacity of tyrannic depredation; in a word, that thirty millions of men, gifted by Providence with the ordinary endowments of humanity, should groan under a system of despotism unmatched in all the histories of the world.
What is the end of all government? Certainly the happiness of the governed. Others may hold other opinions, but this is mine, and I proclaim it. What are we to think of a government whose good fortune is supposed to spring from the calamities of its subjects, whose aggrandizement grows out of the miseries of mankind? This is the kind of government exercised under the East India Company upon the natives of Hindustan; and the subversion of that infamous government is the main object of the bill in question. But in the progress of accomplishing this end, it is objected that the charter of the company should not be violated; and upon this point, sir, I shall deliver my opinion without disguise. A charter is a trust to one or more persons for some given benefit. If this trust be abused, if the benefit be not obtained, and its failure arise from palpable guilt, or (what in this case is full as bad) from palpable ignorance or mismanagement, will any man gravely say that that trust should not be resumed and delivered to other hands, more especially in the case of the East India Company, whose manner of executing this trust, whose laxity and languor have produced, and tend to produce, consequences diametrically opposite to the ends of confiding that trust, and of the institution for which it was granted? I beg of gentlemen to be aware of the lengths to which their arguments upon the intangibility of this charter may be carried. Every syllable virtually impeaches the establishment by which we sit in this House, in the enjoyment of this freedom, and of every other blessing of our government. These kinds of arguments are batteries against the main pillar of the British Constitution. Some men are consistent with their own private opinions, and discover the inheritance of family maxims, when they question the principles of the Revolution; but I have no scruple in subscribing to the articles of that creed which produced it. Sovereigns are sacred, and reverence is due to every king; yet, with all my attachments to the person of a first magistrate, had I lived in the reign of James II, I should most certainly have contributed my efforts and borne part in those illustrious struggles which vindicated an empire from hereditary servitude, and recorded this valuable doctrine, 'that trust abused is revocable.'
No man, sir, will tell me that a trust to a company of merchants stands upon the solemn and sanctified ground by which a trust is committed to a monarch; and I am at a loss to reconcile the conduct of men who approve that resumption of violated trust, which rescued and re-established our unparalleled and admirable Constitution with a thousand valuable improvements and advantages at the Revolution, and who, at this moment, rise up the champions of the East India Company's charter, although the incapacity and incompetency of that company to a due and adequate discharge of the trust deposited in them by that charter are themes of ridicule and contempt to the world; and although, in consequence of their mismanagement, connivance, and imbecility, combined with the wickedness of their servants, the very name of an Englishman is detested, even to a proverb, through all Asia, and the national character is become degraded and dishonoured. To rescue that name from odium and redeem this character from disgrace are some of the objects of the present bill; and, gentlemen should, indeed, gravely weigh their opposition to a measure which, with a thousand other points not less valuable, aims at the attainment of these objects.
Those who condemn the present bill as a violation of the chartered rights of the East India Company condemn, on the same ground, I say again, the Revolution as a violation of the chartered rights of King James II. He, with as much reason, might have claimed the property of dominion; but what was the language of the people? 'No; you have no property in dominion; dominion was vested in you, as it is in every chief magistrate, for the benefit of the community to be governed; it was a sacred trust delegated by compact; you have abused that trust; you have exercised dominion for the purposes of vexation and tyranny—not of comfort, protection, and good order; and we, therefore, resume the power which was originally ours; we recur to the first principles of all government—the will of the many, and it is our will that you shall no longer abuse your dominion.' The case is the same with the East India Company's government over a territory, as it has been said by my honourable friend [British statesman Edmund Burke], of two hundred and eighty thousand square miles in extent, nearly equal to all Christian Europe, and containing thirty millions of the human race. It matters not whether dominion arise from conquest or from compact. Conquest gives no right to the conqueror to be a tyrant; and it is no violation of right to abolish the authority which is misused…
(Source: The Penguin Book of Historic Speeches. MacArthur, Brian, ed. Penguin Books, 1996.)
১৭৮৩ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে পার্লামেন্টারি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।
৭
যা হোক। ১৮৫৮ অবধি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাংলায় তাদের শাসন ক্ষমতা বজায় রাখে । ব্রিটিশ সরকার ১৮৫৮ সালের “গভরমেন্ট অভ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট” বলে ভারত শাসনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে।
তথ্য নির্দেশ
১/ বাংলাপিডিয়া
২/ মাইক্রোসফট বিশ্বকোষ এনকার্টা
৩/ উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৯