ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধ দুই ধরণের হয়। এক ধরণের যুদ্ধ হয় যাতে একপক্ষ থাকে মুসলমান, আরেক পক্ষ থাকে কাফের-মুশরিক। আরেক ধরণের যুদ্ধ হয় যার প্রতিপক্ষ হয় শুধু মুসলমানরা, যাদের একপক্ষে থাকে জালিম, আরেক পক্ষ মজলুম।
১৯৭১ সালের যুদ্ধ কোন ধরণের ছিলো? প্রথম না দ্বিতীয় ধরণের?
এ প্রসঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করতে হবে, সেসময় বাঙালীদের নেতৃত্ব কি মুসলিমদের হাতে ছিল না? সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সৈয়দ নজমুল হক, হাফেজ্জী হুজুর, মাওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-রা কি মুসলমান ছিলেন না? এমন কোন ফোতোয়া কি ছিল যার উপর নির্ভর করে বলা যেতে পারে যে ১৯৭১ সালের যুদ্ধ ছিল মুসলিম বনাম কাফেরদের যুদ্ধ? শরিয়া থেকে এমন কোন উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে যে, পাকিস্তানের অত্যাচারের বিরোধীতা যারা করেছিলো তারা ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গিয়েছিলো?
তেমন, কোন কিছু না পেয়ে থাকলে, এটাকে বলতে, হবে মুসলমানদের দুই পক্ষের মাঝে যুদ্ধ। আর তা যদি হয়ে থাকে, তাহলে জিজ্ঞাসা করতেই হয়, মুসলমানদের দুই পক্ষ কেন খামাখা যুদ্ধ করবে। এর উত্তরে বলতেই হবে, কেন সিফফিনের যুদ্ধ হয়েছিলো? সিফফিনের যুদ্ধের দুই পক্ষই তো মুসলিম ছিলেন।
মুসলমানদের দুই পক্ষের যুদ্ধ হলে, এক পক্ষ থাকে জালিম আরেক পক্ষ থাকে মজলুম। এখানে মনে রাখা জরুরী যে, মুসলমানরা জালিমও হতে পারে। জালিম হলে মুসলমানিত্ব থেকে খারিজ হয়ে যায় না। তখন তাদের গুনাহগার বলা হয়, মুরতাদ না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ১৯৭১-এ কারা ছিলো জালিম আর কারা মজলুম?
এর উত্তর দিবে কে? এ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?
এই প্রশ্নটিই গতকাল একজন জামায়ত সমর্থককে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উনি এখনো কোন উত্তর দেননি।