http://www.otobi.com - এই ভূয়া ওয়েবসাইটটি অটোবি কতো লাখ টাকা খরচ করেছে খুব জানতে ইচ্ছা করে। মাত্র সাতটা পৃষ্ঠা গুগলের ইনডেক্সে আছে। ভিজিটরদের ধৈর্য চ্যুতি ঘটানোর সব ধরনের উপাদানই সাইটটিতে রয়েছে। আর্টস দেখতে মানুষ দৃক গ্যালারীতে যায়, ওয়েবসাইট-এ মানুষ চায় তথ্য।
বাংলাদেশের যোগ্য ফ্রীল্যান্সাররা সামান্য টাকার বিনিময়ে বিদেশীদের জন্য কতো ভালো ভালো ওয়েবসাইট বানায়। আর ধান্দাবাজ কিছু লোকজন, ফ্রীল্যান্সারদের তুলনায় ১০ থেকে ১০০০ গুন বেশী টাকা নিয়ে আমাদের করপোরেট এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ভ্যালুলেস যতো ওয়েবসাইট বানায়।
জুমলা কাস্টমাইজ করে আমাদের আইটি ফার্মগুলো করপোরেট কিংবা সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ফি নেয় ১-১০ কোটি টাকা, যা কিনা ভালো ফ্রীল্যান্সারদের একটা গ্রুপ মাত্র ১-১০ লাখ টাকায় আরও ভালো ভাবে করে দিতে পারে।
তদুপরি ক্লায়েন্ট সচেতন না হওয়ায় তারা নানা অনৈতিক কাজ করে। যেমন দেখুন, অটোবির "About Us" পৃষ্ঠাতে "fake rolex watches" নামক একটি পৃষ্ঠার লিঙ্ক রয়েছে। অবৈধ রোলেক্স ঘড়ির পৃষ্ঠার লিঙ্ক থাকায় এক্ষেত্রে অটোবিকে এমনকি আইনি ঝামেলা পোহাতে হতে পারে। ঠিক একই ভাবে, অধিকাংশ সরকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট-এ "Developed by" অমুক আইটি, তমুক আইটি জাতীয় লিঙ্ক দেথা যায়। কোটি কোটি টাকা ফি নিয়ে চুক্তি বহির্ভূত এরুপ লিঙ্ক স্থাপন কতোটা নৈতিক?
করপোরেট জগতে ওয়েব ডিজাইনের ঠিকাদার নির্বাচনের একমাত্র যোগ্যতা হলো লবিং (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া)। যেসব প্রতিষ্ঠান অনন্য ধারনের ঠিকাদার নির্বাচনের জন্য কিছু যোগ্যতার মাপকাঠী ব্যবহার করে, তারাও দেখা যায় ওয়েব ডিজাইনের ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে, লবিংকেই একমাত্র যোগ্যতার মাপকাঠি ধরে নেয়। ভাবটা এমন, "ওয়েব ডিজাইন? এ আর এমনকি? একজনকে দিলেইতো হলো।" আর সরকারী প্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডিজাইনের ঠিকাদার নির্বাচনের যোগ্যতার মাপকাঠী হলোঃ প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা আর আর্থিক সক্ষমতা। প্রকৃতপক্ষে যারা ওয়েব ডিজাইন করবে সেই ওয়েব ডিজাইনার এবং ওয়েব প্রোগ্রামারদের যোগ্যতা যাচাইয়ের ধারে কাছেও কেউ যায় না।
স্থানীয় আইটি ফার্মগুলোর অপেশাদারী আচরণ আর অতি মুনাফার লোভ, বাংলাদেশে ইন্টারনেট প্রসারের অন্যতম একটি বাধা। আইটি ফার্মগুলো ক্লায়েন্টদের জন্য নামকাওয়াস্তে একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ বলে মনে করে। ওয়েবসাইটটি ক্লায়েন্ট-এর কোনো কাজে আসলো কিনা, ক্লায়েন্ট-এর ROI কতো হলো তা ভাবার প্রয়োজন মনে করে না। যেন ওয়েবসাইট একটা শোপিছ, কোনো রিটার্ন দরকার নেই।