একজন সুস্থ নারীর ক্ষেত্রে পিরিয়ড খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।
এটি বয়স্কপ্রাপ্ত মেয়ের প্রাকৃতিক ও জৈবিক বিষয়।
আমাদের সমাজে একটা ট্যাবু চলতেছে মেয়েদের পিরিয়ড নিয়ে নানা ধরণের কটুক্তিমূলক কথা।
যে কারণে মেয়েরা আরো ভীত ও সংকোচ হতে থাকে।
ফার্মেসীতে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে গেলে এমনভাবে ব্রাউন পেপার দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয় আর মেয়েটাও ব্যাগে এমন করে গুজে আনে যেন সে অভিশপ্ত, মহাপাপ করে ফেলেছে, এখন পাপের বোঝা ব্যাগে লুকিয়ে আনছে।
এ ধরণের সংকোচতার পিছনে পুরুষরা অধিকাংশ দায়ী!
অতি স্বাভাবিক ব্যাপারটাকে জোকস এ পার্ট বানিয়ে ফেলা হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে মেয়েরা যতটাই সংকোচিত, ছেলেরা ততটাই উৎফুল্ল।
এমন অনেক মেয়ে এই সাধারণ ব্যাপারটি নিয়ে ইভটিজিং ও হয়রানী মুলক বাজে কথার স্বীকার হয়।
... আর কোন মেয়ে যদি সাহস করে সচেতনতা বৃদ্ধিতে খোলামেলা আলোচনা করে তবে তার চৌদ্দগুষ্ঠি কে খারাপ, বেহায়াপনা, অশ্লীল বলে মন্তব্য করা হয়।
কেন ভাই? কেন???
এই পিরিয়ড কোন রোগ না, এটা মেয়েদের একটা বায়োলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য- সেটা প্রত্যেকটা সুস্থ মেয়ের হয়ে থাকে । আপনার আমার পরিবারের প্রতিটা মেয়েরই হয়ে থাকে।
জ্বরের ঔষধ কিনে নিয়ে গেলে তো কেউ কিছু বলে না, তবে প্যাড কিনে নিয়ে গেলে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে কটাক্ষ করা কতটুকু যুক্তিগত!
যেখানে দুটোই স্বাভাবিক ব্যাপার।
... আমাদের বিকৃত মানসিকতাই স্বাভাবিককে অস্বাভাবিক করে তুলেছে।
বন্ধু তুমি কি জানো?
পবিত্র রমযান মাসে একটা মেয়ে কেন রোযা রাখে নি সেটা বুঝেও এটা নিয়ে যখন দ্বিতীয়বার প্রশ্ন ছুড়ে দেও সেটা একটা মেয়েকে কতটুকু সংকোচে ফেলে?
... সংকোচ কাটিয়ে বলার পরেও তুমি যখন হাসি ঠাট্টা করো সেটা একটা মেয়েকে কতটা ব্যথিত করে?
তোমার জানার কথাও না কারণ তোমাকে প্রতিমাসে তীব্র ব্যথা সহ্য করতে হয় না, তোমাকে সমাজে লুকিয়ে জৈবিক ব্যাপার নিয়ে ভাবতে হয় না।
মেয়েদের পোশাকে লাল দাগ দেখে মুচকি হাসা মারা ছেলেটা! তোমাকে বলছি শুনো।
বন্ধু তুমি কি জানো?
মেয়েদের নিয়মিত পিরিয়ড না হলে তোমার আমার এই সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ হতো না।
যেখানে আমাদের একজন মেয়েকে অভিনন্দন জানানো উচিত একটা প্রাণ সৃষ্টির ক্ষমতা অর্জনের জন্যে, সেখানে আমরা তার জন্যে সৃষ্টি করে রেখেছি অমানবিক মানসিক চাপ।
যে সমাজ নারীর মনুষ্যত্ব অপেক্ষা নারীর নারীত্বকে বড় করিয়া দেখিয়াছে সে সমাজ সভ্য সমাজ হতে পারে না…
অতএব বন্ধুগণ দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমাদের সমাজ বদলে যাবে।
শহুরে নারীরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যাবহার সম্পর্কে সচেতন হলেও গ্রামের মেয়েরা বেশিরভাগই অসচেতন এবং প্যাডের ব্যাবহার সম্পর্কে অজ্ঞ।
তাই এবার প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গত এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্পে নীলফামারী জেলার শৌলমারী ও গোলমুন্ডায় ৫০০ জন এবং গাইবান্ধার এরেন্দাবাড়ী প্রায় ৩০০ জন বয়স্কপ্রাপ্ত নারীকে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে পাশাপাশি ব্যবহার সম্পর্কেও শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এটা খুবই গর্বের বিষয় আমাদের বড় বোনরা সমাজের ট্যাবু ভেংগে নারীদের সচেতন করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
ঐ সকল সাহসী বোনদের অভিনন্দন যারা সংকোচ কাটিয়ে স্পর্শকাতর জৈবিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে প্রতিক্রিয়াশীল সমাজে থেকেও মনটাকে মুক্ত রাখতে পারার জন্য।
Bear in mind that Always this system used to make her feel unclean and ashamed without no fault of them!
So stop harassing them.
Break the tabbo, change the system.