সামুতে যেমন পজিটিভ মাইন্ডের ব্লগার আছে তেমনি আছে নেগাটিভ মাইন্ডের ব্লগারও। কাজেই কোন স্পর্শ্বকাতর পোষ্ট দেয়ার আগে এর ফলাফল হিসেবে নিকের সাথে কোন ধরনের ট্যাগ লেগে যায় সেটা চিন্তা করতে হয়। তারপরও দেশের স্বার্থ চিন্তা করে পোষ্টটা দিলাম। আাশা করব সবাই সুন্দরভাবে সমালোচনা করবেন।
----------------------------------------------------------------------------------
- মুল পোষ্ট: বাংলাদেশকে মোটেও মুসলিম শাষিত দেশ বলা যাবে না। এটি সর্বসাধারণের ভোটে নির্বাচিত এক গণতান্ত্রিক দেশ। (যদিও এ দেশের রাজনৈতিক নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে)। কাজেই গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণ মানুষ সবাই সমান সুবিধা ও অধিকার ভোগ করবে। সবাই নিজের কথা বলবে, নিজের মতো চলবে, নিজের ধর্ম পালন করবে, নিজে গান লিখবে আবার সেটা নিজেই গাইবে। কিন্তু অন্যের গান চুরি করে নিজের নামে চালাতে পারবে না। কারন এতে অপরের অধিকার নষ্ট হয়। এর মানে হলো, নিজের স্বাধীনতা ভোগের সাথে সাথে অপরের অধিকারকেও সম্মান করবে। এ পয়েন্টে কারো কোন সন্দেহ নাই, বা থাকার কথা ও না। কিন্তু কিছু মানুষ যারা দেশকে ইসলামি রাষ্ট্র মনে করেন, শতকরা ৯০% মুসলমান তাই দেশের আইন কানুন বিচার আচার ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ি হতে হবে বলে দাবি করেন, অনেকে আবার খেলাফতি দৃষ্টিতে দেশকে দেখতে চান তাদের সকলের দৃষ্টিকে সম্মান জানিয়ে ''ইসলাম শাসিত সমাজে অমুসলিমদের কি কি অধিকার থাকবে সে বিষয় নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করব। (ভুলত্রুটি সুন্দর করে বুঝিয়ে লিখলে তার প্রতি রইবে অগাধ সম্মান)।
#১) প্রথমেই 'ইসলাম':
- ইসলাম অর্থ শান্তি। ইসলাম শান্তির ধর্ম। তাহলে মুসলমান মানে হলো শান্তি প্রিয় মানুষ। শান্ত মানুষ। তাহলে শান্ত মানুষতো তাকেই বলা হবে যারা নিজে শান্ত থাকে এবং অপরকে শান্তিতে থাকতে দেয়। অপরের ঘুম কেড়ে নেয়া, অপরের বাড়ি গাড়িতে হামলা করা, ব্যবসা নষ্ট করা, মানুষকে আঘাত করা এটা নিশ্চয়ই শান্তি প্রিয় মানুষদের সিফাত হতে পারে না। এমন সিফাত আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর ছিল না। বরং শান্তি প্রিয় মানুষ তাকেই বলা হবে যাকে কেহ ক্ষতি করলে তার ভাল চায়, সামজে শান্তি বজায় রাখার জন্য নিজে সেক্রিফাইজ করে। যেমনটা করেছিলেন আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) মক্কার এক বুড়ির সাথে। যেই বুড়ি প্রতিদিন রাসুল (স.) এর পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখতো, রাসুল (স.) নিজ হাতে সেই কাঁটা পথ থেকে সরিয়ে রাখতেন যাতে অন্যের পায়ে কাঁটা না ফুটে। তারপরের ঘটনা সবার জন্য আরো শিক্ষামুলক, একদিন রাসুল (স.) দেখতে পেলেন পথে কাঁটা নেই তখন তিনি চিন্তিতি হয়ে পরলেন বুড়ি কোথায় গেলো? তবে কি বুড়ি অসুস্থ হয়ে পরেছে? তখন রাসুল স. বুড়ির বাড়িতে গিয়ে দেখেন সত্যি সত্যি বুড়ি অসুস্থ। তখন রাসুল (স.) বুড়ির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেলন।
-এখানথেকে রাসুল (স.) ও আমাদের দ্বীন-ই-ইসলামের আদর্শ ফুটে উঠে। এমন আদর্শ নিজের মাঝে গড়ে তুলুন, মানুষ আপনাকে ভালবাসবে, ভালবাসতে বাসতে হয়তো একদিন তারা আপনার আদর্শ আদর্শিত হতে চাইবে। যেমনটা হয়েছিল রাসুল (স.) এর বেলায়।
#২। 'মুহাম্মদ (স.)।
- আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (স.) কে পাঠিয়েছেন রহমাতুল্লিলয়ালামিন'' হিসেবে। কুরআন ও হাদিসে অসঙ্খবার এটা উল্ল্যেখ করা হয়েছে। এখানে য়ালামিন মানে সারা বিশ্ব। বিশ্বের সকল প্রাণীই এর অন্তর্ভুক্ত। তাহলে কি আশরাফুল মাখলুকাত এই বিশ্ব থেকে বের হয়ে যাবে? না, কখনো না। তাহলে যে রাসুল (স.)কে রহমাতুল্লিলয়ালামিন বলা হবে না। তখন তাকে 'রহমাতুল্লিলমুসলিমিন' বলা হবে, মানে রাসুল (স.) কেবল মুসলমানদের জন্যই রহমত স্বরুপ।
এবার আপনিই নির্ধারিত করুন: রাসুলুল্লাহ (স.) রহমাতুল্লিলয়ালামিন? না রহমাতুল্লিলমুসলিমিন??
- আমরা সবাই জানি, মক্কায় রাসুল (স.)কে নানান ভাবে কষ্ট দেয়া হতো, অপমান করা হতো, সিজদারত অবস্থায় তার উপরে পশুর নাড়ি ভূড়ি/চামড়া তুলে দেয়া হতো, এক পর্যায় তিনাকে হত্যা করার জন্য মূর্তি পূজারীরা গোপনে বৈঠক করে। দরুন নদওয়া নামক বৈঠকে রাসুল (স.)কে হত্যা করার জন্য লোক ঠিক করা হয়। এমন কঠোর পরিস্থিতিতে রাসুল (স.) মক্কা ছেড়ে মদিনা যেতে বাধ্য হন। কিন্তু এতেও মক্কার কাফেররা থামে নি। তারা মুহাম্মদ (স.) এর অনুসারীদের হত্যা করতে শুরু করে এমনকি এক পর্যারে তারা মদিনা আক্রমনের বন্দোবস্ত করে। এমন সময় রাসুল (স.) নিজেদের রক্ষা করতে সাহাবীদের নিয়ে মক্কা দখল করেন। মক্কা দখলের পর তার অনেক সাথিরাই মক্কার চিহ্নিত কাফির যারা মুসলমানদের হত্যা করেছিল, যারা মুহাম্মদ স. কে হত্যার জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতো তাদের বদলা নেয়ার জন্য রাসুল (স.) এর নিকট অনুমতি চাইলে রাসুল (স.) তাদের হত্যা করতে নিষেধ করেন। এবং তাদের সকলকে ক্ষমা করে দেন। রাসুল (স.) টিট ফর ট্যাট এর আদর্শ্বের অনুসারি ছিলেন না। পরবর্তিতে সবাই ইসলাম কবুল করে।
- এখান থেকে নিজের শত্রুদের দুর্বলতার সুযোগ না নিয়ে ক্ষমা করার শিক্ষা নিন, হয়ত একদিন আপনার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে আপনার শত্রুরা আপনার আদর্শে আদর্শ্বিত হতে চাইবে। যেমনটা চেয়েছিল রাসুল (স.) এর শত্রুরা।
#৩: ইসলামী শরীয়া।
- কুরআন, হাদিস, রাসুল (স.) ও তার সাহাবাদের জীবনির কোথাও নাই যে তারা অন্য ধর্মের মানুষদের হেয় করতেন, কিংবা তাদের উপাসনাগার ভেংগে ফেলতেন, কিংবা তাদের উপর মানসিক টর্চারিং করতে নির্দেশ দিতেন। এখানে ইসলামী শরিয়তের ভিক্তিতে কয়েকটি পয়েন্টে মুসলিম সমাজে অমুসলীমদের অধিকার ব্যখ্যা করার চেষ্টা করব।
-১) আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে মানুষের সম্মান রক্ষা করা।
আল্লাহ তায়ালা সুরা আসরার ৭০ নং আয়াতে বলেন:
ولقد كرمنا بني آدم وحملناهم في البر والبحر ورزقناهم من الطيبات وفضلناهم على كثيرا
- সরল অর্থ: অতপর আমি আদম সন্তানদেরকে সম্মানিত করেছি এবং জলে ও স্থলে তাদেরকে রক্ষা করেছি এবং তাদেরকে হালাল জিনিস খাওয়াইয়াছি অতপর তাদেরকে অনেক কিছুর উপরে মর্যাদা দিয়েছি।
- উক্ত আয়াতে স্পষ্ট সকল মানুষের মর্যাদার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে কাউকে নির্দিষ্ট করা হয় নি।
-২) حرية الاعتقاد বা বিশ্বাসের স্বাধীণতা।
ইসলাম কখনো বল প্রয়োগে কিংবা কৌশলে অন্যদের মুসলমান বানানোর নির্দেশ দেয় নাই বরং ইসলামে পরিপুর্নভাবে অন্য ধর্মাবলম্বিদের বিশ্বাসকে সম্মান দেখিয়েছে। যেমন: আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَلَوْ شَاء رَبُّكَ لآمَنَ مَن فِي الأَرْضِ كُلُّهُمْ جَمِيعًا أَفَأَنتَ تُكْرِهُ النَّاسَ حَتَّى يَكُونُواْ مُؤْمِنِينَ
আর তোমার পরওয়ারদেগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসতে সমবেতভাবে। তুমি কি মানুষের উপর জবরদস্তী করবে ঈমান আনার জন্য?
সুরা ইউনুস, আয়াত ৯৯।
- এই আয়াতে রাসুল (স.) কে একটু ধমকের সুরে বলা হয়েছে তুমিকি মানুষের উপর জবরদস্তী করে ঈমান আনাবে??
সুরা বাকারার ২৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
لاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىَ لاَ انفِصَامَ لَهَا وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
অর্থ: দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।
- সুরা ক্বাহাফের ২৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَقُلِ الْحَقُّ مِن رَّبِّكُمْ فَمَن شَاء فَلْيُؤْمِن وَمَن شَاء فَلْيَكْفُرْ
অর্থাত: বলুনঃ সত্য তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত। অতএব, যার ইচ্ছা, বিশ্বাস স্থাপন করুক এবং যার ইচ্ছা অমান্য করুক।
#৩। বিধর্মীদের তাদের ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা পালনের স্বাধীণতা:
- ইসলাম অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের তাদের পছন্দ মতো ইবাদত বন্দেগি করার স্বাধীনতা দিয়েছে। এক্ষেত্রে কারো যদি তাদের আচার অনুষ্ঠান ভাল না লাগে তবে সে নিজেকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। কিন্তু কাউকে ধর্ম পালন থেকে বাঁধা দিবে না। এমনি ভাবে, ইসলামে মদ ক্রয় ও বিক্রয় হারাম করা হয়েছে কিন্তু কোন ইসলামি সমাজে যদি কোন অমুসলিম মদ কেনা বেচা করে তবে সে সেটা করতে পারবে। তবে যদি তাদের থেকে কোন মুসলমান মদ ক্রয় করে তবে সে ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করতে হবে। তবে নিজেদের মাঝে ক্রয় বিক্রয় করলে কারো কোন সমস্যা থাকবে না। আবার অন্যধর্মাবলম্বিদের লক্ষ রাখতে হবে যে, তাদের আচার অনুষ্ঠান পালন করতে গিয়ে যেন অন্যের সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এই দৃষ্টিকোন থেকে সারা রাত ঢোল বাজিয়ে গান গেয়ে অন্যের নিদ্রা কিংবা অন্যের ইবাদতে ব্যঘাত ঘটানো ঠিক হবে না।
#৪) ন্যায় বিচার পাবার অধিকার:
- আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ৫৮ নং আয়াতে বলেন:
نَّ اللّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤدُّواْ الأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُم بَيْنَ النَّاسِ أَن تَحْكُمُواْ بِالْعَدْلِ إِنَّ اللّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُم بِهِ إِنَّ اللّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا
নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ কর, তখন মীমাংসা কর ন্যায় ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।
- আল্লাহ তায়া সুরা আর-রহমানের ৭-৮-৯ নং আয়াতে বলেন:
وَالسَّمَاء رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيزَانَ
তিনি আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন মানদন্ড।
أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيزَانِ
যাতে তোমরা সীমালংঘন না কর মানদন্ডে।
وَأَقِيمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيزَانَ
তোমরা ন্যায্য ওজন কায়েম কর এবং ওজনে কম দিয়ো না।
- হযরত আলি (রা.) তখন মুসলিম জাহানের খলিফা। আর তার প্রধান কাজি হলো সুরাইহ ইবনে হারেছ ইবনে কিন্দি। একদা খলিফার যুদ্ধ বর্ম হারাইয়া গেলো। এবং আলি (রা.) নিজে এক ইয়াহুদিকে বাজারে বিক্রি করতে দেখে কাজি বরাবর এসে নালিশ করল। কিন্তু উপযুক্ত প্রমান না দেখাতে পারায় কাজি বিচারের রায় ইয়াহুদির পক্ষে দিল। যদিও বর্মটি আলি রা.) এর ছিল।
এই ভাবে ইসলামে মানুষের মাঝে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছে। দ্বীন ধর্মে কোন পার্থক্য রাখে নি।
#৫) তাদের ধন সম্পদ নিরাপদ রাখার অধিকার:
- খোলাফায়ে রাশেদার আমলে অমুসলিমদের ইসলামের দাওয়াত দেওয়া হতো, যাদি তারা দাওয়াত কবুল না করত তবে তাদেরকে জিঝিয়া বা বাৎরিক কর দিতে বলা হতো। এবং এই করের মাধ্যমে তারা নিজেদের ধন সম্পদ ও জান মালের পরু্ন নিরাপত্তা পেতো। বরং তাদের জান মাল রক্ষা করা খলিফার উপর আলাদা দায়িত্ব এসে পরত।
এইভাবে খলিফা আলি (রা.) এর আমালে বেশ কিছু মুসলমান আহলে জিম্মাকে হত্যা করে, ফলে আলি রা.) ও অমুসলিম হত্যার সাজা হিসেবে ঐ সব হত্যাকারি মুসলমানদের হত্যার নির্দেশ দেন।
- আলি (রা.) এর শাসনামলে তিনি বিভিন্ন অন্চলে গভর্নর নিয়োগ করেন। একবার কোন এক অন্চলে মুর্তিপূজারীদের মুর্তি ভেংগে ফেলা হয়। আলি রা.) ততক্ষনাত ঐ অন্চলের গভর্নরকে বায়তুল মাল থেকে সম্পদ নিয়ে তাদের তাদের ক্ষতিপুরন দেবার নির্দেশ দেন।
-> এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যারা বাংলাদেশকে খেলাফতের দৃষ্টিতে দেখেন তাদের কর্তব্য রামুতে ক্ষতিগ্রস্থ বৌদ্ধদের নিজ পকেট থেকে টাকা দিয়ে সমস্ত ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া।
#৬) উত্তম আচরন পাবার অধিকার:
- এ বিষয়টি বেশ গুরুত্বপুর্ন। এর বিপরিতে সামুতেও মাঝে মাঝে অনেককে পোষ্ট দিতে দেখা যায়। কাজেই ব্লগারদের উদ্ধেশ্যে দুটি কুরআনের আয়াত।
لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُم مِّن دِيَارِكُمْ أَن تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন।
إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُم مِّن دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَن تَوَلَّوْهُمْ وَمَن يَتَوَلَّهُمْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম।
- সুরা মুমতাহিনা, আয়াত ৮,৯।
এইরকম স্পষ্ট কুরআনের আয়াত থাকার পরও যারা অমুসলিমদের সাথে খারাপ আচরন করে তাদের ধর্মপালন নিয়ে সংসয় রয়ে যায়।
- একটি গুরুত্বপুর্ন পয়েন্ট:
>> সুরা ফাতির এর ১৮ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى وَإِن تَدْعُ مُثْقَلَةٌ إِلَى حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়।
উপরোক্ত আয়াত সহ আরো অনেক এমন আয়াত ও হাদিস আছে সেটা প্রামন করে যে, কেহ অন্যের পাপের বুঝা বহন করবে না। এমনকি পিতা পুত্রের কিংবা পুত্র পিতার পাপের ভার বহন করবে না।
সেই হিসেবে, গুজরাটে যদি মসজিদে আগুন দেয়া হয় তাহলে বাংলাদেশের কোন মন্দিরে কিংবা গির্জায় আগুন দেয়া ঠিক হবে না। অসামে যদি কোন মুসলমানকে হত্যা করা হয় বা কিংবা মিয়ানমারে যদি কোন মুসলমান হত্যা করা হয় সে জন্য বাংলাদেশের কোন অমুসলীমকে হত্যা করা কিংবা কোন অমুসলীমের বাড়ি ঘড়ের ক্ষতিস্বাধন করা ঠিক হবে না। তেমনি ভাবে, রাসুল (স.) এর উপর কোন খ্রিষ্ঠান যদি কার্টুন বানায় কিংবা কোন মুভি বানায় সে জন্য বাংলাদেশের কোন খ্রিষ্টানের বাড়ি ঘরে আক্রমন করা ঠিক হবে না। কারণ, পাপ যে করেছে সেটা সেই ভোগ করবে। একের পাপের ভার অন্য কেহ বহন করবে না। এসব ক্ষেত্রে আমরা আইনের মাধ্যমে মোকাবেলা করব। কুটনৈতিক পর্যায়ে এর সমাধান করার চেষ্টা করব শান্তিপুর্নভাবে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করব। তাতেও সমাধান না হলে দূর্বল ইমানদার হিসেবে মনে মনে ঐ পাপকাজকে ঘৃণা করবো, তবুও অন্যের ক্ষতি সাধন করা যাবে না। এটা ইসলাম বলে না।
অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে জিহাদের বিধান কোথা থেকে আসল?
উত্তর: জিহাদ ফরজ হবার জন্য চারটি শর্ত:
১) যদি কেহ অন্যায় ভাবে হত্যা করতে আসে তবে আত্নরক্ষার জন্য যুদ্ধ করা যেতে পারে।
২) চুক্তি ভংগকারীর সাথে যুদ্ধ। যদি বৃহৎ স্বার্থে সমাজে শান্তি রক্ষার জন্য কোন চুক্তি করা হয় এবং কেহ যদি গোপনে সেই চুক্তি ভেংগে সরযন্ত্র আরম্ভ করে তবে সমাজে শান্তি এবং মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে জেহাদ করা যেতে পারে।
৩) কেহ যদি ইসলামের দাওয়াত মানুষের নিকট পৌছানোর বাধা সৃষ্টি করে তবে সেই বাধা আইন অনুযায়ি প্রতিহত করতে হবে। তারপরও যদি কেহ না মানে এবং যুদ্ধ বাধাতে চায় তবে তার সাথে যুদ্ধ করা যেতে পারে।
৪) মজলুম নারী পুরুষ ও শিশুদের আহ্বানে সারা দিয়ে যুদ্ধে নামা যেতে পারে।
উপরোল্লেখিত চার অবস্থা ছাড়া অন্য কোন অবস্থায় জেহাদ ফরজ হয় না। কেহ যদি এই চার কারণ ব্যতিত কোন মানুষ হত্যা করে তবে সে মানুষ হত্যার সাস্তি পাবে।
উপরোক্ত আলোচনার পর রামুর ঘটনা বিষয়ে আর কোন সংশয় থাকার কথা না। আমরা ইতি মধ্যে বুঝতে পেরেছি যে, রামুর ঘটনা কোন ধর্মীয় প্রতিহিংসার ফল নয় বরং এটা ঐ রাজনীতিবিদদের বলৎকার যারা প্রতি এই দেশটাকে চোখের পানিতে ভেজাচ্ছে। এই সমস্ত রাজনীতিবিদদের হাত থেকে দেশকে বাচাতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আর মনে রাখতে হবে, ''POWER OF PEOPLE STRONGER THAN THE PEOPLE IN POWER''.