শীতের দুপুরের মিষ্টি রোদের মধ্যেই দামপাড়া গ্রীনলাইন কাউন্টারের এ/সি রুমে অপেক্ষা করছিলাম গাড়ীর জন্য। গাড়ী যথাসময়ে ছেড়েছিল একরাশ ভিতি নিয়ে। কারন তখন বি.এন.পি'র ডাকা হরতাল অবরোধের সাথে যুক্ত হয়েছিল পেট্রোলবোমা ও ককটেলের মহাসমারোহ... যাই হোক, জানটা কোন রকমে হাতে নিয়ে ভোর ৬টায় বেনাপোল পৌছালাম। তারপর লম্বা কাষ্টমস্, ইমিগ্রেশান ইত্যাদি। অবশেষে সকাল ১০ টায় বনগাঁ সিমান্তে পুরী-চা দিয়ে সকালের ব্রেকফাষ্ট।
আমাদের এবারের যাত্রার উদ্দ্যেশ্য ছিল চিকিৎসার উদ্দ্যেশ্যে ভেলোর যাওয়া। কোলকাতা পৌঁছেই প্রথমে টিকেট এর উদ্দ্যেশ্যে ফেয়ারলি প্লেস যাত্রা। সেখানে গিয়ে শুনলাম আমি যেই ট্রেন পছন্দ করেছি সেটা নাকি রেলকতৃপক্ষ সরকারী ভাবে সরাসরি টিকেট করতে পারেনা। টিকেট করতে পারে কারা জিজ্ঞেস করাতে বললো টিকেট করতে হবে আউটসাইড থেকে যে কোন ট্রাভেল এজেন্সি থেকে। তাদের মাধ্যমে অনলাইনে টিকেট করতে হবে। এখানে বলে রাখা ভাল যে, আমি যেই ট্রেনটি পছন্দ্ করেছিলাম সেটা ছিল প্রিমিয়াম ট্রেন। কারন সাধারণত ভেলোর যেতে যে কোন মেইল বা এক্সপ্রেস ট্রেন এর সময় লাগে ২৮ থেকে ৩১ ঘন্টা। আর তাদের ষ্টেশন হল্ট থাকে নুন্যতম ১৭ থেকে সর্ব্বোচ্চ ২৩/২৪ টা পর্যন্ত। এত লম্বা জার্নি এমনিতেই যথেষ্ট বিরক্তিকর। তার উপর ট্রেনগুলো ১৭ হল্ট লেখা থাকলে থামে ৩৪ বার, অর্থাৎ দ্বিগুন। তার উপর আমরা বাংলাদেশীরা এমনিতেই এত লম্বা ট্রেন জার্নিতে অনভ্যস্ত। সবকিছু বিবেচনা করে আমি যে ট্রেনটি পছন্দ করেছিলাম তার কারন ট্রেনটির কিছু অসাধারণ দিক হলো প্রথমত এই ট্রেনে কোন ওয়েটিং টিকেট বা আ.এ.সি. টিকেট থাকেনা। ২য়ত এই ট্রেনটি মাত্র ৩টি ষ্টেশনে থামবে। ৩য়ত ট্রেনটি তে নিজস্ব পেনট্রি কার আছে বিধায় খাবারের কোন অসুবিধা হয় না। তদুপরি টিকেট এর সাথে ভারত সরকার স্বল্প মুল্যে ২বেলা ভারী ও ৩বেলা হালকা খাবারের টাকা নিয়ে রেখেছিল। আর সবেচেয়ে যেটা আমার ভাষায় সাংঘাতিক সেটি হলো ট্রেনটি মাত্র ২৫ ঘন্টায় আমাকে ভেলোর পৌাঁছিয়ে দিবে। অবশেষে টিকেট এর চেয়ে প্রায় ১০০টাকা বেশী দিয়ে আউটসাইড ট্রাভেল এজেন্সি থেকে টিকেট করেছিলাম। আজ অনেক হলো। পরে আবার ভেলোর ভ্রমনের গল্প করব....
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:২৩