ছোটবেলায় মাটির ব্যাংকে টাকা জমিয়ে রাখতাম। আর সেটা যেকোন উপায়ে লুকানোই ছিল একমাত্র চিন্তা যাতে কোন প্রকার লুটপাট না হয়। তখন মোটামুটি নিশ্চিত থাকতাম না আমার মাটির ব্যাংক থেকে লুটপাট হবে না।
তবে এখন নিউজপেপার, মিডিয়ায় দেখতে পাচ্ছি টাকা লুটপাট হচ্ছে। তবে সেটা মাটির ব্যাংক থেকে নয়। এটা হল আসল টাকা জমা রাখার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। আর লুটপাট করার সিস্টেমও কিন্তু অনেকটাই প্রশংসার দাবি রাখে কেননা এসব ব্যাংক থেকে সরকারের আমলারা সহজেই ঋণ নিতে পারেন। তাদের দিতে হয়না কোন প্রকার জামানত কিংবা কোন প্রকার আইনি অঙ্গীকারপত্র। আর এজন্যই তারা সরকারী চাকুরীজীবী হিসেবে জগত বিক্ষ্যাত(এদেরকে মেয়ের জামাই বানাতে দেশের শ্বশুর সমাজ সদা প্রস্তুত)।
একটি দেশের সাধারণ মানুষ সরকারী ব্যাংকগুলোকে নিজেদের আশ্রয়স্থল মনে করে। সেখানে অর্জিত টাকা নিজের বিশ্বাসের জায়গা থেকেই জমা রাখে। কিন্তু কিছুদিন পর পর জনগণ যদি জানতে পারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বর্তমানে মূলধন হারিয়ে দেউলিয়া হওয়ার পথ গুনছে তখন তারা শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাকে বেছে নিবে। আজ কয়েকটি পত্রিকায় পড়লাম সোনালি ব্যাংক, রুপালি ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নমন ব্যাংক,বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক সহ আরো অনেক ব্যাংক বর্তমানে মুলধন হারিয়ে পথে বসার জোগাড়। কিন্তু কেন?
উত্তর তারাই দিতে পারবে যারা এই ব্যাংকগুলোর সাথে সম্পৃক্ত। সরকারের মন্ত্রী, আমলারা সহজেই এইসব ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারে। তাদের তেমন কোন প্যারা নেই ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে। অথচ সাধারণ জনগণ যদি ঋণ নিতে যায় তখন ঋণ গ্রহীতা ঋণের সংজ্ঞা সহ মুখস্ত করে ফেলে। তাকে একটি ঋণ বিষয়ক প্রবন্ধ লিখতে দিলে সে নিঃসন্দেহে ৯০/১০০ পাবে।
তাহলে সাধারণ জনগণই কেন বার বার প্যারার স্বীকার হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক চাইলেই এই সব ঋণ খেলাপি আমলা, মন্ত্রী পর্যায়ের লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনা। কারণ হাত বাঁধা।
কিছুদিন আগে শুনলাম ইসলামিক ব্যাংক নাকি সরকারের আন্ডারে চলে গিয়েছে এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনই এটাকে নিয়ন্ত্রন করবে মানে চাবি দিয়ে ঘুড়িয়ে নিজেদের মত উড়াবে। সেটাই তো ভাল তাইনা?
ইসলামিক ব্যাংক প্রাইভেট ব্যাংক হলেও অনেকদিন পর্যন্ত সাধারণ জনগণের বিশ্বাসের জায়গায় ছিল। কিন্তু এখন আর নেই। কেন নেই সেটা আপনার খুজে উত্তর বের করুন। এখন প্রবাসী এবং দেশের জনগণ তাদের জমাকৃত অর্থ ইসলামিক ব্যাংক থেকে তুলে নিচ্ছে। কারণ কোন মানুষ চাইবে না নিজের টাকা পিপড়া খেয়ে নিক।
লিখতে গেলে অনেক লেখাই চলে আসে তবে লিখা যায়না। কারণ আপনি লিখবেন ত আপনি................. থাক বললাম না।
সচেতন থাকুন। ঠকবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯