ঢাকায় যতগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্দ্যালয় রয়েছে তার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয়টি সামগ্রিক ফলাফল এবং অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রম সঠিক ভাবে চললেও দূঃখের বিষয় হল এই যে, এখানে রয়েছে হলের অভাব যা একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর জন্য মূখ্য একটি বিষয়। এই জিনিসটির অভাব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা খুব ভাল ভাবেই উপলব্দি করতে পেরেছে আর তার জন্যই তারা নিজেদের কাঙ্খিত অধিকার আদায়ে নেমেছে রাজপথে। তাদের এই আন্দোলন কি অবৈধ ছিল নাকি এর কোন আলাদা দোষ ছিল ? তারা তো তাদের প্রাপ্প অধিকার টূকু সরকারকে জানাতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকার যা করল তাতে জাতি পুরোপুরি হতাশ। কারণ পৃথিবীর আর কোন দেশের হয়ত এমন নজির নেই যেখানে ছাত্রছাত্রীদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নামতে হয় আর সেখানে সরকার কেনা গোলাম অর্থাৎ পুলিশ সেখানে টিয়ারশেল মারে। আমরা জানি শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর মেরুদন্ড তখনই কেবল সোজা থাকবে যখন কিনা সরকার ছাত্রছাত্রীদের তাদের সব রকম সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে। পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সব রকম গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার। আমরা যদি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দিকে তাকাই তাহলে দেখি সরকার তাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করছে। তাহলে তারা কি এই টাকা গুলো বৃথা খরচ করে জলে ফেলে দিচ্ছে। নিসন্দেহে না। কারণ শিক্ষার ব্যাপারে ব্যয় করা অর্থ কখনো বৃথা যায় না। আর ঐ সমস্ত দেশে আমাদের দেশের মত আবাল নীতিনির্ধারকরা হয়ত নেই। আর এজন্যই তারা ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে তাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে কোন রকম দ্বিধা করেনা। নাকি আবার আমাদের অর্থমন্ত্রী পড়াশোনা নিয়ে গ্যাসের থিয়োরির মত থিয়োরি দিচ্ছেন। তার থিয়োরি মতে "মূল্যবান গ্যাস নাকি রান্না করে খরচ করাটা বোকামি"। তিনি হয়ত ভাবেন এরা তো জাতির কোন কাজা আসবে না। আর যদি অর্থমন্ত্রী বা সরকারের কেউ এটা ভেবেও থাকেন তাহলে তাদের উদ্দেশ্যে এটাই বলতে চাই ছাত্ররাই এদেশের কর্ণধার। তারাই আমাদের দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশকে নেতৃত্ত্ব দিবে বিশ্বের দরবারে। এজন্য আমি মনে করি তাদের দাবি যুক্তি সঙ্গত এবং এর যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তবে ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনকে আমি সাপোর্ট করলেও অনেকে নাক ছিটকাচ্ছেন। কারণ তারা ভাবছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য হল তৈরি করা হলে তারা হয়ত সহিংসতার জড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে পরিমাণ রাজনীতি চর্চা হয় তাতে এমনটা ভাবাটাও অস্বাভাবিক কোন বিষয় না। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোর এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ী তা সরকার এবং জনগণ খুব ভাল করেই জানে। এসব যাই কিছু হোক না কেন মোট কথা হল কাটার ভয়ে কি তা বলে মাছ খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে। অবশ্যই না। আপনাদের পুলিশ(জনগণের বন্ধু) ভাবে ছাত্রছাত্রীদের উপর তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়েছে তাতে আমার মনে হয় না ছাত্রছাত্রীরা এতে দমে গিয়ে তাদের আন্দোলন কে বন্ধ করে দিবে। বরং তারা আরো নতুন উদ্দোমে তাদের আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাবে। পুলিশ দিয়ে জুলুম করে সাধারণ জনগণকে দমাতে পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আপনারা দমাতে পারবেন না। কারণ এই ছাত্রছাত্রীরাই কিন্তু ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তাহলে তারা এখনো পারবে। আবার অনেকে ভাবতে পারেন আপনার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিতে এত চুলকানি কেন। তাদের উত্তরে বলতে চাই আমি সব সময় ন্যায্য অধিকারের আন্দোলনের সাথে আছি, থাকব। সব সময় তাদের অধিকার আদায়ে সাপোর্ট দিব। আমি কে তা না জানলেও হয়ত চলবে। এই স্ট্যাটাস যদি কখনো সরকারের কাছে পড়ে তাহলে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে তারা যেন ছাত্রছাত্রীদের ন্যাজ্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়। তা না হলে তারা পাগলা কুকুরের মত হিংস্র হয়ে যাবে। তখন আর আপনারা থামাতে পারবেন না। আর একটা কথা আর তা হল আপনারা গুরুত্বহীন কাজে টাকা ব্যয় না করে গুরুত্বপূর্ণ কাজে টাকা ব্যয় করুন তাতে দেশের-ই লাভ হবে।
ছবিঃ ইত্তেফাক
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৫২