পৃথিবীর সব মানুষই নাকি জীবনের কোন কোন না সময় কম বেশী মানসিক রোগে ভুগেন। আমাদের সামু ব্লগও কিন্তু এ থেকে মুক্ত নয়। আসুন জানি ব্লগারদের বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগ সম্পর্কে। বিশিষ্ট ব্লগীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড: পল্লী বাউল দীর্ঘদিন ধরে ব্লগারদের মনোজগত বিশ্লেষন করে এই ব্যাপক গবেষনাধর্মী পোস্টটি তৈরী করেছেন । জানুন কে কোন রোগে আক্রান্ত।
এ্যাংজাইটি ব্লগিং নিউরোসিস : এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের মধ্যে একাগ্রতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। পোস্ট দেয়ার আগে পরে এদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করে পোস্টটি হিট হবে নাকি ফ্লপ। এ ধরেনর ব্লগারদের ব্যাপক ঘুমের সমস্যা বিদ্যমান। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা বয়সে তরুন তরুনীই বেশী হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের মধ্যে ঘন ঘন প্রোফাইল পিক পরিবর্তনের বিষয়টি লক্ষনীয়।
ক্রনিক ব্লগিং পেইন ডিসঅর্ডার: এ রোগে আক্রান্ত ব্লগাররা তাদের পোস্টেকৃত মন্তব্য নিয়ে হরহামেশাই পেইন অনুভব করে থাকে, যদিও বাস্তবে পেইন অনুভবের যুক্তিগ্রাহ্য কোন কারন থাকে না। কখনো কখনো ব্যাথার অর্ন্তনিহিত কারন থাকতে পারে তবে তা অনুভবের চেয়ে অনেক কম।
অ্যানোরেক্সিয়া সামহোয়ার নার্ভোসা: সাধারনত তরুনী ব্লগাররাই এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগার জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও নিজকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে এবং নিজের জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে প্রায়শই উদ্ভট কর্মকান্ড করে থাকে।
ক্যাপগ্রাস ব্লগ সিনড্রোম: আক্রন্ত ব্লগার সবাইকে অবিশ্বাস করে। কে তার পোস্টে মাইনাস দিয়েছ, আড্ডায় কে তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছে এ চিন্তায় প্রায়শই তাকে উদ্বিগ্ন দেখায়। সে প্রায় সব নিককে সন্দেহের চোখে দেখে। অনেক ক্ষেত্রে মনের ভুলে নিজের ২য় কিংবা ৩য় নিককেও সন্দেহ করে বসে যে ঐ নিক তার পোস্টে মাইনাস দিয়েছে।
ব্লগিং ক্লেপটেম্যানিয়া : এ রোগে আক্রান্ত ব্লগার খেয়ালের বশে অন্যের পোস্ট থেকে চুরি করে নিজ নামে পোস্ট দেয়। সে যত গুরুত্বপূর্ন কিংবা অখাদ্য পোস্ট হউক না কেন। কেউ তার চুরি ধরিয়ে দিলে সে নানা রকমের অজুহাত তৈরী করে কিংবা ক্ষমা প্রার্থনা করে। কিন্তু পরবর্তীতে উক্ত কাজ সে পুনরায় করতে দ্বিধা বোধ করে না। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগার তার টার্গেটকৃত পোস্ট চুরি না করা পর্যন্ত শান্তি পায় না।
হেপোটোলেন্টিকুলার সামু ডিজেনারেশন : সাধারনত মধ্যবয়সী ব্লগারা এ রোগে বেশী আক্রান্ত হন। এ রোগে আক্রান্ত ব্লগারদের অতিরিক্ত আবেগ প্রর্দশন করতে এবং কখনো কখনো অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্ত মধ্য বয়সী ব্লগাররা কখনো কখনো তাদের পোস্টে কিংবা মন্তব্যে কিশোর-কিশোরীদের মতো আচরন করেন।
লাভেলি ব্লগইনডিফারেন্স : এ ধরনের ব্লগাররা কমেন্টে কিংবা আচার আচরনে আবেগের বিপরীতভাব প্রকাশ করেন। যেমন হাসির কোন মন্তব্য কান্নার ইমোর ব্যবহার কিংবা দু:খের কোন পোস্টে হাসির ইমো ব্যবহার করে থাকেন। তাছাড়াও কেউ তাদের ছাঘোল কিংবা আবাল বলে মন্তব্য করলেও তারা কিংবা এ ধরনের ইমো ব্যবহার করেন। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের কমেন্টের উত্তরে কারন ছাড়াই রেগে যেতে কিংবা হেসে উঠতে দেখি। আপনি কেমন আছেন জাতীয় প্রশ্নেরও এরা আমি জবাব দিতে বাধ্য নই জাতীয় উত্তর দিয়ে থাকেন।
বুলিমিয়া সামহোয়ার নার্ভোসা : তরুন তরুনী ব্লগাররাই এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়। সাধারনত এরা মাত্রারিক্ত হিটাকাংখী হয়ে থাকে। নিজের পোস্টের হিট বাড়ানোর জন্য এরা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে থাকে। নিজের পোস্টে নিজে ঘন ঘন ঢুকা, নিজের পোস্টে নিজে মন্তব্য করা, অন্যের পোস্টে গিয়ে অযাচিতভাবে নিজের পোস্টের লিন্ক দিয়ে আসা, কারন ছাড়াই বিতর্কিত পোস্ট দেয়া সহ এরা হিট মেশিন পর্যন্ত আবিস্কার করে বসে থাকে।
ক্রমশ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১১