ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকি বা তাদের কোন অনুষ্ঠানে গেলে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মুখে অহরহ শুনতে পাবেন তাদের গৌরমময় ইতিহাসের কথা। জাতীর ক্রান্তিলগ্নে তাদের বলিষ্ঠ ভূমিকার কথা। কিন্তু বর্তমানে ছাত্রলীগের অবস্থা কি? নিকট অতীতের দিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আওয়ামীলীগের সহযোগী এই সংগঠনের ভূমিকা কি ছিলো? ২০০১ এর নির্বাচনের পরে ছাত্রদল আর শিবির ক্যাডাররা সারা দেশে চরম নির্যাতন, লুটপাটের রাজত্ব করেছিলো। সে সময়ে তাদের ভূমিকা কি ছিলো? (বুঝলাম সে সময়ে পরিস্থিতি প্রতিকুল ছিলো প্রতিবাদের, প্রতিরোধের)। ২১ শে আগষ্টের বোমা হামলার পরে ছাত্রলীগের ভূমিকা কি ছিলো? বরং সে সময়ে দেখেছি সেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা যুবলীগ, যুবলীগকে রাজপথে ভূমিকা রাখতে, পুলিশের নির্যাতনের শিকার হতে। আওয়ামীলীগ নেত্রী যখন নির্বাচন বাতিলের আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন তখনই বা ছাত্রলীগ কি করেছে? সর্বশেষ তাদের নেত্রী যখন জেলে তখন ছাত্রলীগ ঘুমিয়েছিলো।
উপরের কথাগুলি বলার কারন, নিকট অতীতে এই সংগঠনটি দেশের স্বার্থ এমনকি নিজ দলের স্বার্থ রক্ষায় তেমন কোন ভুমিকাই রাখতে পারেনি। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে সারা দেশ যখন সোচ্চার তখনও এরা গনমানুষের সচেতনতা ও অংশগ্রহন বাড়াতে কোন সামাজিক আন্দোলন বা কর্মসূচীও হাতে নেয়নি। যাক! সেটা হয়ত তাদের নেতৃত্বের ব্যর্থতা ছিলো। সারাদেশে জেলা কমিটিগুলিতে বুইড়া ভাম রেখে কেন্দ্রীয় কমিটিতে দুই পুচকে আবালকে সাধারন সম্পাদক, সভাপতি করে এই সংগঠনটির কি লাভ হয়েছে জানিনা, তবে লস হয়েছে ব্যাপক। এই দুইজনের কোন প্রভাব জেলা কমিটিগুলিতে নেই, নেই বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিগুলিতেও। তবে হাওয়া ভবন থেকে উপঢৌকন নিতে তারা ভুল করেনি। যাই হোক ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ এর পরে ঘুম থেকে জেগে উঠলো ছাত্তরলীগ। এই দেড় মাসে ছাত্রলীগের কার্যক্রম টক অভ দ্য কান্ট্রি। এক জাবিই নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা! গোলাগুলি, সন্ত্রাস জাবিতে লেগেই আছে। রাবিতে চুপ! আহা! শিক্ষার পরিবেশ যখন নষ্টই হচ্ছে, সাধারন শিক্ষার্থীরা যখন আতঙ্কিতই হচ্ছে, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন যখন হচ্ছেই, যে আশায় মানুষ আওয়ামীলীগকে ভো্ট দিয়েছিলো সে আশার গুড়ে যখন বালি পড়ছেই, তবে শিবির ঠেঙ্গাইয়াই না হয় সেই শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতিস, সাধারন ছাত্রদের আতঙ্কিত করতিস। তবুও স্বান্তনা পেতাম শিবিররে অন্তত ঠেঙ্গাইছিস। তা না, হল দখল নিয়া যুদ্ধ!
আমার মনে হয় ছাত্তরলীগের কার্যক্রমে আওয়ামীলীগ তথা সরকার লাভবান হচ্ছেনা , বরং ছাত্তরলীগ সরকারকে বাঁশ দিতেছে। এইরাম চলতে থাকলে বিরোধীদলের কাম কাজ বন্ধ কইরা ঘরে বসে থাকলেই চলবে। তাদের কাজ ছাত্তরলীগ ভালভাবেই করে দিচ্ছে।