‘বাজারে যত আম পাবেন তার সবই কারবাইড দিয়ে পাকানো । কোনো দোকানেই বিষ ছাড়া আম পাবেন না। হউক সে আল্লার কিরা কাটা, দাড়ি, টুপি আলা লোক’। - এ কথা বললেন পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ রোডের আম দোকানের কর্মচারী, রাতে বাড়ি ফেরার পথে আলাপ চারিতায়।
তিনি জানালেন কারবাইড, ক্যামিকেলের দোকানে যে কেউ যে কোন সময় কিনতে পারে। ২৫০ টাকা কে.জি। রং কিছুটা খয়রী, পাথরের মত শক্ত। আমের খাঁচি ভাল করে পেপার দিয়ে মুড়ায়ে বাতাস চলা চলের পথ বন্ধ করে, তার ভেতর দু্ই তিন জায়গায় পরিমান মত কারবাইড দেয়া হয়। দুই এক দিনেই পাকাতে চাইলে পরিমাণ বেশি দিতে হয়। কারবাইডের প্রভাবে খাঁচির ভেতরের বাতাস খুব গরম হয়ে একটা গুমট বাষ্প হয়, যা আমে জাগ আসতে সাহায্য করে। কিন্তু তাড়াতাড়ি পাকাতে গেলে লসও আছে। যে আমগুলি কারবইডের কাছে থাকে সে গুলি পুড়ে এতই শক্ত হয় যে আমের উপড় উঠে দাঁড়ালেও সে পুড়া আম চ্যাপ্টা হয় না, বা, গলে না। পুড়ে যাবার অর্থ, কাল হয়ে যাওয়া না; অতিরিক্ত গরমে উপরের চোচা কুঁকড়ে গিয়ে ভেতরে শক্ত হয়ে যাওয়া। কারবাইড দেওয়া আমের গা প্রথম দুই এক দিন কাঁচা পাকা (ডাকর / ডাসা ) দেখায়, কিন্তু টিপ দিলে বুঝা যায় ভেতরে পেকে নরম হয়ে গেছে। গায়ে গত দুই এক দিন আগে বোটা ভাংগার কষ থেকেই যায়। ক্রেতাদের কাছে এ অবস্থায় গাছ পাকা আম বলে বিক্রীর খুব সুবিধা। এর আর একটা সুবিধা আছে সহজে পচে না । যত দিন যেতে থাকে ততই এর চোচা না পচে, কুঁচকায়ে আসে। কারবাইড ছাড়া আমের চামড়া ওভাবে না কুঁচকায়ে পচন ধরে।
বাজারে কম বেশি সব ফলই এই বিষ দিয়ে পাকানো হয়। কখনো পানিতে ফল চুবায়ে তোলা হয়, কখনো পানিতে গোলায়ে ছিটায়ে দেয়া হয়।
মাঝে মাঝে ধরপাকর শুরু হয়, তখন নাম মাত্র এসব দেওয়া বন্ধ হয়। তবে আমরা যারা দোকানে কাজ করি সহজে এসব আম খাই না, কারণ; প্রতি দিন কারবাইডে পুড়ে যাওয়া আম বাছাই করে যখন ফেলতে যাই, তখন মনে হয় এ বিষ আমাদের দেহে ঢুকে এই রকম করে ভেতরে নষ্ট করে দিতে পারে।
উপরের আলচনার পরে তাই ব্লগার ভাইদের গাছ লাগায়েই ফল খাবার অনুরোধ জানাচ্ছি। আর সে উপায় যদি না থাকে, তবে; টাকা দিয়ে বিষ না কেনাই উত্তম।
[url]http://www.somewhereinblog.net/blog/baue/editpost/28973010[/url]