বর্ষন মোহাম্মদঃ মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য , একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারেনা ভুপেন হাজারিকার অমৃত এই গানটি কি শুধু গানই থেকে যাবে ,আমরা কি পারি না আমাদের এই পুলিশ ভাইকে অল্প অল্প সহযোগীতা করে তার চিকিৎসার টাকা দিয়ে পরিবার টিকে ধুধু অন্ধকার থেকে একটু আলোর পথ দেখাতে । সকলের কিছু কিছু সহযোগীতায় কোবাদ তার পা দুটি ফেরত না পাক , সুস্থ হয়ে আগামী দিনে যাতে তিনি ও তার পরিবার খেয়ে পরে বেচে থাকতে পারে এতটূকু সহযোগীতার জন্য মুন্সীগঞ্জবাসী ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
৪৮ বছর বয়সী ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল কোবাদ আলী ভূঁইয়া (মুন্সীগঞ্জ সদর-২১৫)। জীবনের ২৯টি বছরই পার করেছেন পুলিশ বাহিনীতে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গত ১২ এপ্রিল সকালে সিলেট থেকে আসা একটি পাথরবাহী ট্রাকের চাপায় দু’টি পা-ই হারিয়েছেন। এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে। ইতোমধ্যে প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে তার চিকিৎসায়। সহকর্মীরা চাঁদা তুলে সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা দিয়েছেন, অবশিষ্ট অর্থ ধার-দেনা করতে হয়েছে তার। এখন হাতে কোনো টাকা নেই। কোবাদের দুই পা কেড়ে নিয়েছে যে ট্রাক, সেই ট্রাকটির মালিক পর্যন্ত তার কোনো খবর নেননি। কোবাদের চিকিৎসা ব্যয় কোত্থেকে আসবে এ চিন্তায় চোখে অন্ধকার দেখছেন স্বজনরা। এদিকে এতদিন হয়ে গেলেও এ পর্যন্ত তার ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা দেখতে যাননি কোবাদকে।
নস্টেবল কোবাদের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, মুন্সূগঞ্জ সদর থানার পাশেই থাকেন তারা। আবু রায়হান (১৪), নাবিল ভূঁইয়া (১১) আর ফাতেমা (৭) নামে তিন সন্তান রয়েছে এ দম্পতির।
শিল্পী বেগম জানান, ১২ এপ্রিল সকালে তার স্বামী তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় পিছু ডাক দেয় ফাতেমা। আবদার করে চকলেটের। মেয়েকে চুমু দিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় ফেরার কথা বলে তিনি ঘর থেকে বের হন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতুর ঢালে দায়িত্ব পালন করছিলেন কোবাদ। এ সময় পাথরবাহী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কোবাদ আলীর শরীরের ওপর উঠিয়ে দিলে তার দেহ থেকে পা দু’টি আলাদা হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাকে মুন্সীগঞ্জম জেনারেল হাসপাতালে, পরে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শিল্পী বেগমের বড় ভাই রেজাউল শিকদার আক্ষেপ করে বলেন, এ পর্যন্ত ৩ দফায় কোবাদের অস্ত্রোপচার হয়েছে। কেটে ফেলা হয়েছে ঊরু অবধি। এরই মধ্যে চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে প্রায় ২ লাখ টাকা। কোবাদের সহকর্মীদের সহযোগিতা, ধার-দেনা আর গচ্ছিত টাকা দিয়ে এতদিন চিকিৎসা ব্যয় মেটানো সম্ভব হয়েছে। এখন তো আর কুলোচ্ছে না ভাই। কোবাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এখনো আমরা কেউ হাতে টাকা পাইনি। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (সদ্য অতিরিক্ত ডিআইজি) হাবিবুর রহমান একদিন এসে কোবাদকে দেখে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু অন্য কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে দেখতেও আসেননি। পুলিশের কল্যাণ তহবিল থেকে অনুদান পেলে কোবাদের চিকিৎসা আর ছোট ছোট ৩ ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার ব্যয় মেটানো যেত। কোবাদের উন্নত চিকিৎসায় তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য সরকারের কাছে জোর আবেদন করেন রেজাউল শিকদার।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০৯