আমাদের সময়.কম : ২৭/০৪/২০১৬
এখনও কার্যত চিকিৎসা শুরু হয়নি ১২ বছর বয়স্ক বিথী আক্তারের। ১১দিন ধরে যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি। সন্দেহ, বিথী ওয়েরউল্ফ সিনড্রোম অথবা হির্সুটিজমে আক্রান্ত।
তার বিষয়ে চিকিৎসকরা এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। তারা বলছেন- হরমোনের সমস্যা থেকে এই রোগ, এটি খুবই বিরল, এর চিকিৎসা নেই।
বিএসএমএমইউর পরিচালক (হাসপাতাল) অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল মজিদ ভূঞা বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা এখনও চেষ্টা অব্যহত রেখেছেন, রোগটি সঠিকভাবে সনাক্তে। তিনি এটিকে বিরল রোগ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল।
বিথীকে নিয়ে ২৬ এপ্রিল আমাদের সময় ডটকমে ‘বিথীর বিরল রোগ, ওয়েরউল্ফ নাকি হার্সুটিজম’ শীর্ষক শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনা নিয়ে সর্বপ্রথম প্রচারিত সংবাদ এটিই।
এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমেও বিষয়টি প্রচারিত হয়েছে। ফলে দরিদ্র বিথীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করছেন দেশ-বিদেশের অনেকেই।
বিথীর বাবা আবদুর রাজ্জাক ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে যাত্রী পরিবহন করে সংসার চালান। স্ত্রী বিউটি, বিথীসহ তার পরিবারে সদস্য সংখ্যা পাঁচজন।
বুধবার দুপুরে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সাংবাদিক ভাইবোনদের কারণে দেশবিদেশের অনেক মানুষ আমারে মোবাইল কইরা বিকাশে টাকা পাঠাইছে। আমি গরিব, ডাক্তাররা যে খরচের কথা কইছে, তা দেওনের ক্ষমতা নাই। আমি সবার সহযোগিতা চাই। মেয়েটারে সুস্থ দেখতে চাই।
পরিচালক (হাসপাতাল) অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল মজিদ ভূঞাও এ প্রতিবেদককে বলেন, গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, মেয়েটিকে নিয়ে যেন সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যার মাধ্যমে দেশেবিদেশে বিষয়টি প্রচারিত হবে, তার চিকিৎসার্থে অর্থ আসবে। এটা খুব দরকার। আমাদের হাসপাতালের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, তার জন্য করা হবে। বিথীর সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা বিএসএমএমইউর পক্ষেই সম্ভব বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
বিএসএমএমইউর একজন হরমোন বিশেষজ্ঞ বিথীকে দেখে গত ২৬ এপ্রিল আমাদের সময় ডটকমকে বলেছিলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে- এটা ওয়েরউল্ফ সিনড্রোম। এতে আক্রান্তকে হাইপারট্রাইকোসিস রোগী বলা হয়। এতে আক্রান্তদের মুখম-ল ও দেহে অস্বাভাবিক লোম দেখা দেয়। মূলতঃ জিনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে এমন ঘন লোম গজায়। এই রোগের এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা নেই। তবে বিথী প্রকৃতই ওয়েরউল্ফ সিনড্রোমে আক্রান্ত কি-না- শতভাগ নিশ্চিত নন তিনি।
আবার আরেকটি সূত্র থেকে তথ্য পেয়েই এই চিকিৎসক নতুন তথ্য জানিয়েছিলেন আমাদের সময় ডটকমকে। তিনি বলেছিলেন, চিকিৎসাশাস্ত্রে এ পরিস্থিতিকে হির্সুটিজম বলা হয়, এটাও হাইপারট্রাইকোসিসের রূপই। যার প্রভাবে মেয়েদের ঠোঁটের উপরি ভাগে, গালে, চিবুকে, বুকে, স্তনে, তলপেটে, নিতম্বে অথবা কুঁচকিতে শক্ত-কালো চুল গজায়। এ রোগে বাড়তি চুলের পাশাপাশি মাথায় টাক, পুরুষালি পেশি গঠন, গভীর কণ্ঠস্বর, ব্রণ, মাসিক বন্ধ, স্থূলতা, বন্ধ্যত্ব, ডায়াবেটিস ইত্যাদি থাকতে পারে।
বিথীর লক্ষণগুলো হচ্ছে- মুুখম-ল, হাত ও পায়ে ঘন কালো বর্ণের অস্বাভাবিক বড় লোম। বুকে-পিঠেসহ দেহের অন্যত্রও একই অবস্থা। অন্যদিকে, ১১ বছর বয়স থেকে বিথীর স্তনের আকৃতি অস্বাভাবিক আকারে বাড়তে থাকে। তার সামনের উপরের দাঁতের রঙও বিবর্ণ। দেখতে মাংস পিণ্ডের মতো।
বিথীকে কেউ আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বর ০১৭২০ ৩৬৬৭৮৩ তে অর্থ পাঠাতে পারেন। নম্বরটি তার বাবার ব্যক্তিগত।
১। বিথীর বিরল রোগ, ওয়েরউল্ফ নাকি হার্সুটিজম
২। ১১দিনেও বিথীর চিকিৎসা কার্যত শুরু হয়নি
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৫