বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী সংবাদ প্রকাশের দায়ে আরব আমিরাতের খালিজ টাইমস কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে বলেছে দলটি। সেই সঙ্গে বিএনপি’র প্রতিবাদলিপিটি যথা গুরুত্বের সঙ্গে ছাপার দাবিও জানিয়েছে।
গতকাল খালিজ টাইমসের সম্পাদকের কাছে পাঠানো এক প্রতিবাদলিপিতে এ দাবি জানান দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ৩রা মার্চ খালিজ টাইমসে প্রকাশিত ‘আসগার খানস পিটিশন ফাইনালি কামস আপ ফর হিয়ারিং’ শীর্ষক প্রতিবেদন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে দেয়া সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাবেক প্রধান জেনারেল দুররানির বিকৃতিপূর্ণ স্বীকারোক্তির কিছু তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান বিরোধী দল বিএনপি ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে প্রতিবেদনে যে তথ্য ছাপা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট, দুরভিসন্ধিমূলক ও পুরোপুরি অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশে তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বিরোধীদলীয় নেতা। আর বিএনপি বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। খালেদা জিয়া বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তিনি নির্বাচন কিংবা অন্য কোন কাজে কখনও বিদেশ থেকে অর্থ নেননি। জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি বিদেশ থেকে অর্থসংগ্রহের নীতিতে বিশ্বাসী নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওই বিকৃত তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বহু পত্রিকা এবং ভারতীয় গণমাধ্যম মিথ্যা অভিযোগ সংবলিত সংবাদ ছেপেছে। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এটাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, আমরা খুবই বিস্মিত যে, খালিজ টাইমসের মতো একটি খ্যাতনামা পত্রিকা যাচাই-বাছাই ছাড়া এবং বিশ্বস্ত সূত্র উল্লেখ না করেই এ ধরনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বেগম খালেদা জিয়া ও তার নেতৃত্বাধীন জনপ্রিয় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করাই ছিল এ প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের সে মামলার কার্যবিবরণীও পাকিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে কোথাও খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র নাম বা সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়নি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে জেনারেল আসাদ দুররানির সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টে দেয়া হলফনামায় তিনি পাকিস্তানের বাইরে কোন ব্যক্তি বা দলের নাম উল্লেখ করেননি। তার হলফনামার বরাত দিয়ে খালিজ টাইমসে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ইতিমধ্যে পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আইএসআই-এর কাছ থেকে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার অর্থ নেয়ার অভিযোগটি সুস্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই সঙ্গে ওই প্রতিবেদনকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক নষ্ট করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, আমরা আশা করি প্রতিবেদনটির মতোই গুরুত্বসহকারে আমাদের প্রতিবাদলিপিটি প্রকাশ করা হবে। সেই সঙ্গে ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী প্রতিবেদন প্রকাশের দায়ে কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চাইবেন।