somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

করুণ মধুর রসে...

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এটি একটি বই প্রকাশের করুণ কাহিনী। করুণ হলেও একজন লেখকের কাছে তার প্রথম বইটি যেহেতু তার লেখক-জীবনের মধুরতম অধ্যায়ই হয়ে থাকে, তাই এই কাহিনীটিও হয়তো একটি 'মধুরেণ সমাপয়েৎ' অধ্যায় হয়েই আসতে যাচ্ছে আমার কাছে অবশেষে। 'হয়তো' বলার বিশেষ কারণ হল, বইটি আমি হাতে পাইনি এখনো অথচ প্রকাশকের কথানুযায়ী আরো আড়াই মাস আগে এটা আমার হাতে পাবার কথা ছিল। এখনো পর্যন্ত প্রকাশনীর কারো কাছ থেকে কোন সংবাদও পাই নি। শুধু এক শুভানুধ্যায়ী (সামুরই এক সহব্লগার আমাদের) মারফত খবর পেলাম, গতকাল নাকি মেলায় এসেছে বইটি ।এই লেখাখানিও লিখে রেখেছিলাম আরও এক মাস আগে, কিন্তু বার বার ধাক্কা খেয়ে খেয়ে, বইটি আদৌ প্রকাশিত হবে কিনা সেটা নিয়ে আর ভরসা না পাওয়ায় পোস্ট করা হয় নি।

এটি অবশ্য বইটির বিজ্ঞাপনী পোস্ট নয়; কৃতজ্ঞতা-জ্ঞাপনধর্মী পোস্ট। পরামর্শ ও সচেতনতামূলক লেখাও হয়ে উঠতে পারে অনেকের কাছে। বিজ্ঞাপনধর্মী না বিধায় বইটির বিষয়বস্তুও উল্লেখ করার প্রয়োজনবোধ করছি অনেককেই আশাহত করার উদ্দেশ্যে। এটি ইলেক্ট্রনিক্স ও রোবটিক্স ভিত্তিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আলোচনা-ধর্মী একটি বই। জনপ্রিয় শিল্প-সাহিত্যের বই নয়। :P

শুরুটা অবশ্য চার বছরেরও বেশি আগের, যখন লেখকের নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের আভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উন্নয়নকৃত কিছু টিউটোরিয়ালকে সাধারণ পাঠকদের জন্যও বই হিসেবে বের করার একটা চিন্তা করা হয়েছিল, কিন্তু কর্মীদের অদূরদর্শিতা আর আমার নিজের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিষ্ঠানটিই বন্ধ করে দিতে হয়েছিল শেষ পর্যন্ত। এছাড়া রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিও বড় একটি অনুঘটক ছিল সেটা বন্ধ করে দেবার পেছনে। প্রতিষ্ঠানটি খুব বেশি লাভজনক না হলেও, অলাভজনকও ছিল না। স্বাধীন জীবিকা হিসেবে যথেষ্ট ছিল আমার ও কর্মীদের জন্য, কিন্তু কর্মীদের এবং আমার পরিবার ও বন্ধুমহলের উচ্চাশার টানাপোড়েন আর সামাজিক সন্ত্রাস-দুর্নীতির চাপ বহনে সীমাবদ্ধতা হেতু সর্বসম্মতিক্রমেই সেটার যবনিকাপাত ঘটাতে হয়েছিল তখন। এটি অবশ্য এক দিক দিয়ে শাপে-বর হয়েছিল আমার জন্য। স্নাতক পরবর্তী উচ্চশিক্ষা পর্বে যে ইতি টেনে ব্যবসা পর্বে নেমে পড়েছিলাম, সেটা ৪/৫ বছর পর আবার সেদিকেই অর্থাৎ বিদ্যার্জনের দিকেই ঠেলে দিল আমাকে আবার। তখন অবশ্য সেটা কোন আনুষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নয় আর; বিশ্বজোড়া পাঠশালায়, যার বড় একটা অংশই ছিল এই সামহোয়্যারইন ব্লগ। ;)

বইটি হাতে পাওয়ার প্রাক্কালে তাই প্রথমেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সামহোয়্যারইনব্লগ-এর প্রতি, যদিও ছাত্র হিসেবে কর্তৃপক্ষের সুবিবেচনায় ছিলাম না হয়তো কখনোই। সামুর সুবিবেচনায় থাকি আর না থাকি, আমার নিজের দিক থেকে কৃতজ্ঞতা স্বীকারে সামুর কথা সর্বাগ্রেই আসবে এখানে। মেরেছ কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দেব না! :P

এর পরেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সুপ্রিয় ব্লগার সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই’র প্রতি, যাঁর ‘নবীন লেখক-লেখিকাদের জন্য :: কীভাবে বই বের করবেন’ পোস্টটি যে কোন নবীন লেখকের জন্য অনন্য একটি দিগদর্শন হিসেবে সামুর পাতায় উজ্জ্বল নক্ষত্র রূপে বিরাজ করছে অনেকদিন থেকে এবং সেই উজ্জ্বলতা ম্লান হবার নয়, সামু যতদিন থাকে।

আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই’র প্রতি, যিনি তাঁর ব্যস্ত সময়ের মাঝেও অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে বইটির ভাষাগত সম্পাদনার কাজটি করে দিয়েছেন। তারপরও বইটিতে যদি কিছু ভাষাগত ত্রুটি রয়ে গিয়ে থাকে সেই দায় তাঁর নয়, অধম লেখকের ও পরবর্তীতে কম্পোজারের। যদিও সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই’র সাথে ব্লগীয় ও পরবর্তীতে ফেইসবুকিয় মিথস্ক্রিয়া যথেষ্ট আন্তরিকতাপূর্ণ ছিল সব সময়, তবু আমি কিছুটা কুণ্ঠিত ছিলাম বইটির ভাষাগত সম্পাদনার করে দেয়ার অনুরোধটুকু জানাতে। কিন্তু তাঁর দিক থেকে যে তাৎক্ষণিক ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিলাম, তা কখনোই ভোলার নয়। অবশ্য পরবর্তীতে তাঁর অল্প কিছুটা ঢিলেমির কারণেও হয়তো কিছুটা দেরীও হয়ে গিয়েছিল প্রুফ পেতে পেতে, যে সময়টা সামান্য গুরুত্বপূর্ণও ছিল আমার জন্য। তবে সেই করুণ অধ্যায়গুলো আমার একান্ত ব্যক্তিগত হিসেবেই থাকুক, মাধুর্যগুলো সবার হোক। সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই’র জন্য দোয়া করবেন সবাই, যিনি মোটামুটি বড় রকমের একটি শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে ছিলেন অনেকদিন থেকে এবং উন্নত চিকিৎসার্থে বিদেশের একটি হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন সম্ভবত। সম্ভবত বলার কারণ হল, সুচিকিৎসার স্বার্থে তিনি সবাইকে যথাসম্ভব তাঁর সাথে যোগাযোগ না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। যাই হোক, আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি, তাঁর জন্য দোয়াও চেয়ে নিচ্ছি সবার কাছে।

এবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সামুর আরেক সুপ্রিয় ব্লগার আরজুপনি’র প্রতি, যাঁর ♣বই প্রকাশের আদ্যোপান্ত♣ লেখাটিও একটি বই প্রকাশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক-নির্দেশনা দিতে পারে সবাইকে। তবে আমি সেই দিক-নির্দেশনাগুলো যথাযথ প্রতিপালন না করায়, কিছুটা ভুক্তভোগীও হয়েছি বটে। :D

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, ব্লগার পারভেজ রানা’র প্রতি, যাঁর বই প্রকাশ সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু লেখা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল এক সময়ে এবং বইটি প্রকাশের আগে কিছু সিদ্ধান্ত নিতেও সহায়তা করেছে।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ব্লগার মহান অতন্দ্র’র নিকট, যাঁর সাথে যদিও কোন ব্লগীয় মিথস্ক্রিয়া ঘটে ওঠেনি আমার, কিন্তু তাঁর নবীন লেখকদের প্রতি সাবধান বার্তা ও আমার প্রতিবাদ লেখাটি আমার বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে। বিভ্রান্তিকর এই কারণে বলছি যে, বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে আমি আমার প্রকাশনী থেকে যে রকম সার্ভিস পেয়েছি শেষ পর্যন্ত, তা হয়তো তাঁর ভোগান্তির চেয়ে কম কিছু হবে না কোন মতেই, তবুও বলছি আমি আমার প্রকাশনীর প্রতি সন্তুষ্ট। পারভেজ রানাও হয়তো কম কষ্ট করেন নি, মহান অতন্দ্র’র বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে, কিন্তু সম্ভবত একটা দুর্ঘটনা ও কিছুটা পেশাদারিত্বের অভাবে তাদের মাঝে চূড়ান্ত রকমের মনোমালিন্য ঘটে গিয়েছিল যার দায় হয়তো দুজনেরই আছে, কিন্তু চূড়ান্ত ভুক্তভোগী সম্ভবত পারভেজ রানাই বেশি হয়েছেন। এই দেশের সিস্টেমে এত বেশি সীমাবদ্ধতা ও অস্বচ্ছতা বিদ্যমান যে, কেউ চাইলেও হয়তো পেরে ওঠেন না সবকিছু যথাসময়ে করে উঠতে। যাই হোক, আমি এখানে কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কোন কিছু বলতে চাইছি না; শুধু বলছি যে, পারস্পরিক ছাড় দেয়ার মানসিকতা খুব বেশি জরুরী এই দেশে। কারণ মূল দায়টা আমাদের নিজেদের না যতটা, তার চেয়ে অনেক বেশি দায় সিস্টেমের। আর এই কথাগুলো প্রসঙ্গক্রমে এসে পড়েছে বলেই বলা। মূল কথাটা আসলে তাঁর(মহান অতন্দ্র) প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশটুকুই এবং সেটা এই কারণে যে, তার সেই লেখাটি থেকেই আমি যেখান থেকে বইটি ছাপিয়েছি সেখানে যোগাযোগের মাধ্যমটা পেয়েছিলাম, সামুর আরেক সুপ্রিয় ব্লগার জহিরুল ইসলাম সুমন’র পক্ষ থেকে।


জহিরুল ইসলাম সুমন’র প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা, আমাকে তাঁর পরামাত্মীয়র প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশের সুযোগ করিয়ে দেবার জন্য। কৃতজ্ঞতা প্রকাশনীর কর্ণধারের প্রতিও, যিনি সব সময় চেষ্টা করেছেন বইটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বের করার জন্য, কিন্তু অধীনস্থদের কিছুটা অ-পেশাদারিত্বের কারণেই হয়তো যথাসময়ে করে দিতে পারেন নি।

তারপরও সেই ব্যবস্থাপকের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যিনি আমাকে কষ্ট করে তাদের ওখানে বারবার যাবার ভোগান্তি না দিতেই হয়তো নিজের মত করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আমাকে শেষ পর্যন্ত যেতেই হয়েছে প্রায় একশবার! বাড়িয়ে বলা না; মিরপুর থেকে বাংলাবাজার যাওয়া ও ফিরে আসা, ঢাকা থেকে দিল্লী যাওয়ার চেয়েও বেশি কষ্টকর। কতটা দায়িত্বহীন হলে, একাধিকবার গিয়ে সারাদিন থেকে থেকে সমস্ত ফাইল এডিট করে দিয়ে আসার পর সেই ফাইল হারিয়ে ফেলা যায় আমার বোধগম্য হয় না! যে এডিট করিয়ে দেবার প্রয়োজনই ছিল না, যদি ইউনিকোড লেখাকে সরাসরি প্রি-প্রেস ডিজাইনে পাঠাবার প্রযুক্তিটা তারা জানতেন। না জানাটা খুব বেশি দোষের না, কিন্তু সেটা জানাতে চাইবার পরও সেটা নিয়ে দশ মিনিট অতিরিক্ত সময় ব্যয় না করাটা অনেকখানি দোষের। তবু আমি তাদের মত করেই কাজটা করাতে আমাকে যতবার যেতে হয় যেতে রাজী ছিলাম, কিন্তু তারা তাদের মত করেই চেষ্টা করলেন এবং অনেকখানি দেরী করিয়ে অবশেষে আমাকেও যেতে বলা হল। তারপরও যে কাজ একদিনেই চূড়ান্ত করে আসার মত ছিল, সেখানে দিনের তিনটা সেশনের একটা সেশন আমার পেছনে দেয়ায় একাধিক বার যেতে হয়েছিল এবং সর্বশেষে প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া ফাইলটা সংরক্ষণ না করায়, একই কাজে আবার ৩/৪ দিন যাওয়া এবং একদম শেষে প্রচ্ছদ ডিজাইনে একদমই সময় ও গুরুত্ব না দেয়ায়, কিছুটা বীতশ্রদ্ধ হয়ে আমার নিজের ডিজাইন করা ফাইলটাই চূড়ান্ত করে দিয়ে আসতে হয়েছিল। তবু সেই ডিজাইনার ও কম্পোজারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, চূড়ান্ত আউটপুট বের করা যেহেতু তাদের হাতে এবং তারা সেটা করেছেন শেষ পর্যন্ত দক্ষতার সাথেই, না হলে বইটি হয়তো ডিজিটালই থেকে যেত, কাগজের পাতায় আর আসত না। না হয় দশ-বারো দিনের (এরকমই কথা হয়েছিল প্রথমে) জায়গায় আশি-নব্বই দিন চলে গিয়েছে, তবুও তো বেরিয়েছে বইটা! এখানে কারো আন্তরিকতার নিয়ে কোন অভিযোগ করা হচ্ছে না। তাঁরা সবাই যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে আমার কাজটি করেছেন, তবে পেশাদারিত্বের অভাব প্রকট ছিল হয়তো অনেক ক্ষেত্রেই। হয়তো ছিল কিছু ইচ্ছাকৃত অবহেলাও। কারণ প্রথম যখন এই পোস্টটি লিখি তখন জেনেছিলাম পজেটিভ করা হয়ে গিয়েছে, চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই বই হয়ে যাবে। তার দশ-বারো দিন পর খবর পাই প্রিন্টিং প্রসেসে আছে। তারও দশ-বারো দিন পর প্রকাশনীর কর্ণধারের সাথে সরাসরি কথা বলে জানতে পারি, পজেটিভই নাকি বের হয় নি! তারপর আমি খোঁজ-খবর নেয়াই বাদ দিয়েছিলাম, তবে দিন পনেরো আগে অবশ্য আরেকবার ফোনে যোগাযোগ করেছিলাম, ব্যাস্ত ছিলেন তারা, ফ্রী হয়ে যোগাযোগ করার কথা বললেও আর যোগাযোগ হয় নি। তবুও প্রকাশনীর কর্ণধারের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ, যিনি সব সময়ই চেষ্টা করেছেন বইটি দ্রুততম সময়ে বের করার তাগিদ দিতে এবং আরও একবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তাই ব্লগার জহিরুল ইসলাম সুমন’র প্রতিও।

বইটির পেছনে অনেকেরই অবদান থাকলেও এখানে কেবল তাদের কথাই উল্লেখ করতে চাইছি যারা সামুর সাথে জড়িত। এ পর্যায়ে তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ব্লগার চেয়ারম্যান০০৭, মাহমুদা সোনিয়া, আশরাফুল ইসলাম দূর্জয়, নীল-দর্পণ,
আহমেদ আলাউদ্দিন, শ্রাবণ জল, অনাহূত, না পারভীন, মনিরা সুলতানা, রঙ তুলি ক্যানভাসইমিনা’র প্রতি যাদের সাথে এই ব্লগের মাধ্যমে পরিচয় ঘটলেও, পরবর্তীতে ব্লগ পরিসরের বাইরের ( ফেইসবুক, ফোন এবং একজনের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ!) মাধ্যমে যোগাযোগ ঘটেছিল । বিশেষ করে চেয়ারম্যান০০৭, অনাহূত, নীল-দর্পণ, শ্রাবণ জল, না পারভীন, রঙ তুলি ক্যানভাসসায়েদা সোহেলী’র কথা উল্লেখ না করলেই নয়, যাদের সাথে বইটির বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট কথা-বার্তা না হলেও, এর পেছনে তাদের অনেক অবদান আছে পরোক্ষভাবে।

আর ব্লগের বাইরে যোগাযোগ না হলেও, ব্লগ পরিসরের ভেতরে আমার দিক থেকে ভাল মিথস্ক্রিয়া ঘটা ব্লগার জুল ভার্ন, ধীবর, ফারজুল আরেফিন, ইশতিয়াক আহমেদ চয়নস্বদেশ হাসনাইন’র কথা স্মরণ করছি কৃতজ্ঞতার সাথে যারা এখন আর আসেন না এখানে সেভাবে।

এছাড়া অভিমানে সামু ছেড়ে দূরে চলে যাওয়া ব্লগার তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রনে, ফারাহ দিবা জামান, নীলঞ্জন/সান্তনু অাহেমদ’র কথাও স্মরণ করছি।

ব্লগার ম্যাভেরিক’র কথাও স্মরণ করছি কৃতজ্ঞতার সাথে, যাঁর সাথে ব্লগীয় মিথস্ক্রিয়া আমার খুব অল্প ঘটলেও সেটা খুবই উঁচুদরের ছিল এবং তাঁকেই সামুতে সবচেয়ে প্রাজ্ঞ মানুষ মনে হয়েছে আমার কাছে এখনো পর্যন্ত। ভিন্ন কারণে সামু ছেড়ে যাওয়া ব্লগার জাফরুল মবীন’র কথাও স্মরণ করছি, যাঁর লেখার গুণগত মান ছিল অতুলনীয়। আর প্রয়াত ইমন জুবায়ের’র কথা উল্লেখ না করলেই নয়, যাঁর মাধ্যমে গল্প লেখার হাতে-খড়ি আমার এবং আমার বিশ্বজোড়া পাঠশালার বড় একটা অংশ জুড়ে থাকা সামহোয়্যার ইন...ব্লগ’র সবচেয়ে বড় শিক্ষকই ছিলেন তিনি।

এছাড়া এখনো এই ব্লগে যারা কোন না কোন ভাবে জড়িত রয়েছেন এবং যাদের সাথে আমার ব্লগীয় যোগাযোগ ঘটেছে তাদের সবার প্রতিই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সবার নাম এক সাথে মনে করা সম্ভব না এবং কারো নাম উল্লেখ করতে গিয়ে কারো নাম বাদ পড়ে যাবার আশংকায় কারো নামই উল্লেখ করলাম না। তবে আশা করছি তারা সবাই হয়তো এই পোস্টের মন্তব্যের ঘর থেকে আলাদা-আলাদা ভাবে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করে যাবেন। :D

সব শেষে বইটি সম্পর্কে দুটি কথা বলছি। বইটি মূলত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অনগ্রসর কিন্তু কারিগরি দক্ষতাসম্পন্নদের উদ্দেশ্যেই বিশেষভাবে লেখা হয়েছে, তাই তাদের কাছে সহজ ও কার্যকরী করার জন্য কিছু কিছু অংশ এমনভাবে লেখা হয়েছে, যা অনেকের কাছেই বাহুল্য ও অরুচিকর মনে হতে পারে। বাহুল্যের ব্যাপারটি বাদ দিলে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আগ্রহী যে কারও জন্যই বইটি হয়তো কিছুটা ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। অবশ্য আমার এখনো কিছু আশঙ্কা আছে যে, আমি চুড়ান্তভাবে এডিট করিয়ে দিয়ে আসার পরে সেই জিনিসই হুবহু ছাপানো হয়েছে, নাকি আবার ফাইল হারিয়ে শেষে আগের ফাইলটিই গোঁজামিল দিয়ে ছাপানো হয়েছে। :P

আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে যাদের আগ্রহ কম, তাঁদেরকে কেবল শো-কেইসে সাজিয়ে রাখার জন্য বইটি না কিনবার পরামর্শই দেয়া হচ্ছে। বিশেষ প্রয়োজনে বইটি চার-রঙে ও মোটা কাগজে ছাপতে হওয়ায়, বইটি ছাপাতে একই আকারের অন্যান্য বইয়ের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। তাই বইটির মূল্য তুলনামূলক একটু বেশি হয়ে গিয়েছে এবং সৌজন্য সংখ্যা হিসেবে খুব বেশি সংখ্যক বই আমি পাব না প্রকাশকের কাছ থেকে। কাজেই সৌজন্য কপি চেয়ে লজ্জা দেবেন না কেউ দয়া করে :``>> । তাছাড়া বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না, বরং দুই-আড়াইশ টাকার মধ্যে অন্য অনেক কিছুই কেনা যায় না আজকাল। আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহ কম থাকলে, তাদেরকে বইটি না পড়বার পরামর্শ তো আগেই দেয়া হয়েছে। কাজেই তাঁরা আমার জন্য দোয়া করবেন শুধু।

সবার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করছি।


আপডেইট: বইটি হাতে পেয়েছি কিছুক্ষণ আগে। ছাপা ও বাঁধাইয়ের মান বেশ হতাশাব্যাঞ্জক হলেও আমার জন্য আপাতত সুখকর ব্যাপার হল, সর্বশেষ যেটা এডিট করে দিয়ে এসেছিলাম সেটাই ছাপা হয়েছে মোটামুটি। যে কারণে রঙিন ছবি ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম সেই কারণটিই ফুটে ওঠেনি বেশ কিছু জায়গায়। কালো আর নীল রঙের পার্থক্য ভালভাবে বোঝা যাচ্ছে না বেশ কিছু ছবিতে। সাতটি রঙের মাঝে আমি অমিল খুঁজে না পাই ... :P তবে যারা সত্যিই কাজের জন্য বইটি কিনবেন তারা সামান্য একটু বেশি কষ্ট করে অমিলগুলো খুঁজে মিলগুলো বুঝে নিতে পারবেন এবং এই অধম লেখকের প্রথম বইটির ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন বলে আশা রাখছি। :)

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬
৩১টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×