এতো কিছুর পরে যদি গেটের ভেতরে ঢোকা যায় সেখানেও একই অবস্থা, মারামারি। টাকা দিয়েও নিস্তার নেই। ১ দিনে কাগজ (এসালাম) হওয়ার চান্স খুব কম। সকাল ৬টায় ঢুকে সারাদিন ভরপুর আশা নিয়ে বিকাল ৪টায় নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়। অফিসের চারিপাশে মক্কেল এর আশায় পুলিশ ঘুরঘুর করছে। বের হলেই খপ করে ধরে ফেলতে পারে। আর ধরলেই টাকা। চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারলে চালান করে দিবে জায়গামত। একটা সেন্ট্রাল জেল সব ফরেনারদের রাখা হয়। সেই জেল এ গিয়েও শান্তি নেই, আছে কালোদের অত্যাচার। বলতে খারাপ লাগলেও বলতে হয়, মেয়েদের উপরে শারীরিক অত্যাচার করলে তাকে ধর্ষন বলা হয়। সেই একই কাজ যদি ছেলেদের সাথে করা হয় তাহলে তাকে কি বলা হবে?
১৫ দিন থেকে ১ মাস জেল খাটার পর ভাল কোন উকিল ধরে যদি জামিন করা যায়। আবার এমনও হয়, জেল এ যাওয়ার পর যেই আত্মীয়ের কাছে সে এসেছে টাকা খরচ হওয়ার ভয়ে সে তার খবরও নেয়না। মাসের পর মাস তাকে পরে থাকতে হচ্ছে জেল এ।
ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তানের দূতাবাসের হাই কমিশন জেল এ থাকা সবার খোজ খবর নেয় আবার মাঝে মাঝে তাদের জন্য খাবারও পাঠায়। তারা নিজ দায়িত্বে তাদের দেশের লোকজনকে জেল থেকে জামিন করে নেয়। আর আমাদের দেশের হাই কমিশনের কথা কি বলবো? দূতাবাস একটা আছে 'প্রিটোরিয়ায়" কিন্তু ফরেনারদের কোন জেল এ রাখা হয় আমাদের হাই কমিশন সেটা জানে কিনা আমার সন্দেহ আছে।
রাস্তায় বের হলেও যন্ত্রনা, ফরেনার মানেই টাকা। ফরেনারদের চুল আর চেহারা দেখেই দূর থেকেই বোঝা যায়। যে কোন সময় আক্রমন করতে পারে। যন্ত্র থাকলে শর্টকার্টে হয়ে যাবে কিন্তু যন্ত্র না থাকলে এক অদ্ভুত সিস্টেমে অবলম্বন করে। পেছন থেকে এসে একজন গলায় ফাস দেয়ার মত করে ধরে উপরে তুলে ফেলবে। আরেকজন ১-২ মিনিটের মধ্যেই পুরো শরীর চেক করে কোথায় কি আছে নিজের মনে করে নিয়ে নিবে।
সবার ক্ষেত্রে একটা কমন ব্যাপার থাকে"
বর্তমানে আফ্রিকান টাকার যেই মান তাতে চাকরি করলে সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া যায় আমাদের দেশের টাকায় ২৭,০০০ টাকা। নতুনদের ক্ষেত্রে আরো কম। আর ব্যবসা করলে তো হিসেব নেই। মাসে ১-২ লাখ+ ইনকাম করা যাচ্ছে। মামা, কাকা, খালু, বা চাচতো ভাই, মামাতো ভাই, কেউ একজন পাম্পিং দিয়ে তো তাকে আফ্রিকা এনেছে নিজের ফায়দার জন্য। এটা বুঝতে সময় লাগে কিছুদিন। আর যেহেতু সে এনেছে সেহেতু সে সকল প্রকার সুদ আসল উঠিয়ে তবেই ছাড়বে। যা বেতন দেয়া উচিত তার অর্ধেক দিয়ে সেরে নিবে। বলবে, আরে ব্যাটা আগে ব্যবসা শিখ তারপর তোকে দোকান করে দিবো। এই দোকান করে দেয়ার আশায় ২-১ বছর এমনেই চলে যাবে। তারপর রাগে দু:খে অন্য কোথাও গিয়ে নিজেই একটা কিছু ট্রাই করতে হবে। এখানেও আছে সমস্যা। অন্য কোথাও চাকরি করলে অনেক মালিক আছে কাজ করিয়ে মাস শেষে বেতন দেয়না।
ব্যাপারটা দু:খজনক হলেও সত্যি, আফ্রিকা অনেক বাঙালী ধান্দাবাজ আছে যারা এই ধরনের অসহায় মানুষের সন্ধানে থাকে। যদি পাওয়া যায় তবে কোথাও আটকে রেখে বলবে, বাংলাদেশ থেকে ফোন করে টাকা দিতে বল নইলে ছাড়বো না। আর অত্যচার তো চলবেই। এমনিতেই অবস্থা ভয়াভহ তার উপরে এমন পরিস্থিতিতে পড়লে "মরার উপর খারার ঘা"।
এতো সমস্যা নিয়ে বেঁচে যায়??
আল্লাহ বাঁচিয়ে না রাখলে এখানে আর বেঁচে থাকার কোন উপায় নেই।
চলবে........
ছবি ছাড়া পোস্ট সুন্দর দেখায় নাহ। পিসি নাই তাই কোন ছবি দিতে পারলামনা দু:খিত