ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনসহ শীর্ষ ৭ ব্লগারকে গ্রেফতার করা সরকারের চরম ভন্ডামি আচরণ। সরকারের একাধিক মন্ত্রি (আইন মন্ত্রি, আইন প্রতিমন্ত্রি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রি) সংবাদ ব্রিফিং করে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করার কারণে ব্লগারদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু সংবাদ মাধ্যম ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ব্লগারদের গ্রেফতার করা হয়েছে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা মতে। বাংলাদেশে প্রচলিত দন্ডবিধিতে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের জন্য ২৯৫এ ধারা বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু ব্লগারদের গ্রেফতার করা হয়েছে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায়। এটি সরাসরি প্রতারণার সামিল। ২৯৫এ ধারায় কেন মামলা দায়ের না করেই ব্লগারদের গ্রেফতার করা হল? ব্লগে ব্লগাররা যা লিখেছে তা এখনো বিদ্যমান। কিন্তু ওই বিদ্যমান লেখা থাকার পরও কেন সন্দেহজনক কারণে গ্রেফতার করা হল? ব্লগে তারা যা লিখেছে তা যদি অপরাধও হয় তাহলে তাদের রিমান্ডে নিতে হবে কেন? সরকার ও আইন শৃংখলা বাহিনী এতই মূর্খ যে ব্লগারদের রিমান্ডে না নিয়ে তাদের ব্লগে লেখা বক্তব্যও বুঝতে সক্ষম নয়? না কি করতে হবে তা না বুঝে শারীরিকভাবে নির্যাতনের জন্য এই আহাম্মকি কান্ড? এখনই সাবধান না হলে সরকারের বিরোধী শক্তি বড় হয়ে যাবে তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।
আমার জানা মতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা মতে ৯টি কারণে কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা যায়। ওই কারণ গুলিতে স্পষ্ট বিধান হচ্ছে আমলযোগ্য কোন অপরাধের সন্দেহ, ভবঘুরে, আচরণে সন্দেহ, চুরি-ডাকাতিসহ মারাত্বক অপরাধে জড়িত থাকার আলামত, বাড়িঘর ভাংচুর করার নমুনা, পুলিশের কাজে বাধা, সশস্ত্র বাহিনী থেকে পলায়নসহ নানাবিধ অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার বিশ্বাসযোগ্য কারণ। প্রিয় পাঠক, প্রত্যেক ব্লগারকে তাদের বসতবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারপরও তারা সন্দেহজনক ও ভবঘুরে? তাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রিরা বলে একরকম আর কোর্টের চালনপত্রে লেখা আরেক রকম। এটি কোন আজব দেশ? এই ভন্ডামি আর কতদিন চলবে? অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ব্লগারদের মুক্তি দেওয়া হউক।
যে আদালতে ব্লগারদের মামলা শুনানি হয়েছে, ওইসব আদালতের কোন বিচারকই আইটি বিষয়ে অভিজ্ঞ নয়। আর মামলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সে তো চিন্তাই করা যায় না। তাহলে ব্লগাররা ন্যায়বিচার পাবেন কোথায়? এটি সামান্য কোন বিষয় নয়। যদি বিষয়বস্তু সম্পর্কে কারও ধারণা না থাকে তার বিচার হবে উদুর পিন্ডি, বুধোর ঘাড়ে।