আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কি পরিমানে সত্যবাদি তা বুঝা যাবে নিচের খবরটি পড়লে। পাকা ঈমানদার ব্যক্তি এহেন কাজ করতে পারে তা কি এদেশের আমজনতা জানে। মসজিদসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়িয়ে মানুষকে বোকা বানানোর ষড়যন্ত্র দীর্ঘদিনের। আজো চলছে। শাহবাগ এমন রূপ শারণ করবে নিশ্চয়ই আমারদেশ তখন ( ০৬.১২.২০১২) বুঝতে পরেনি। কিন্তু নিজেকে ইসলামের কেদমতদার দাবি করে যে ভন্ডামী চালিয়ে যাচ্ছে তাতে কি প্রমাণ হয়? যারা আফিম খেয়ে উম্মাদনা দেখান তাদের মাহমুদুর রহমানের নিকট এই প্রশ্ন করা উচিত কিভাবে নিজেকে সাচ্চা ঈমানদার ভাবেন?
হুবুহু সংবাদ: যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে দালালি অবশেষে খবর প্রত্যাহার
পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে দালালি করতে গিয়ে ব্লগারদের তোপের মুখে পড়েছে যুদ্ধাপরাধীদের মুখপত্রখ্যাত দৈনিক সংগ্রাম ও ডানপন্থী দৈনিক আমার দেশ। এক পর্যায়ে ‘আলেমদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবার ইমামদের মানববন্ধন’ শিরোনামে সংবাদটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। একই সঙ্গে দৈনিক সংগ্রাম ওই সংবাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। তবে আমার দেশ খবরটি প্রত্যাহার করে নিলেও কোন ধরনের দুঃখ প্রকাশ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেছেন ব্লগাররা।
গত ৬ ডিসেম্বর দৈনিক সংগ্রাম ও দৈনিক আমার দেশ ‘আলেমদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবার ইমামদের মানববন্ধন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। অনলাইন সংস্করণেও দেখা যায় সংবাদটি। আমার দেশের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত ট্রাইব্যুনালের নামে বাংলাদেশের আলেমদের ওপর যে নির্যাতন চলছে তার প্রতিবাদে গতকাল (গত শুক্রবার) বাদ জুমা কাবার খতিব বিখ্যাত ক্বারী শাইখ আবদুর রহমান আল সুদাইসির নেতৃত্বে মানববন্ধন করেছে ইমাম পরিষদ।’ এই সংবাদের সঙ্গে আরবি ব্যানার হাতে একটি ছবিও ছাপা হয়।
অনলাইন সংস্করণে সংবাদটি দেখে মিথ্যা দাবি করে নাসিম রূপক নামে একজন ব্লগার ব্লগ ও ফেসবুকে প্রতিবাদ জানান। ফেসবুকে নোট আকারে তার লেখার শিরোনাম ছিল ‘যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে দৈনিক আমার দেশ ও সংগ্রাম পত্রিকার নির্লজ্জ মিথ্যাচার।’ ব্লগেও নিজস্ব আইডি থেকে একই লেখা পোস্ট করেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই রূপকের ওই নোট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত নোটটি শেয়ার হয়েছে কয়েক শ’ বার। ব্লগে আসে প্রায় দুই শ’ মন্তব্য। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দৈনিক সংগ্রাম তাদের সংবাদটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ। তবে আমার দেশ অনলাইন সংস্করণ থেকে সংবাদটি সরিয়ে নিলেও দুঃখ প্রকাশ করেনি।
ফেসবুক ও ব্লগে ঝড় তোলা ব্যক্তি নাসিম রূপক জনকণ্ঠকে বলেন, এই দুটি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে সংবাদ দেখে এই সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গুগলের সাহায্য নেন। গুগলে সার্চ দিয়ে ওই নিউজের ছবি সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো সংবাদ দেখতে পান তিনি। সবগুলোই আরবি সাইট। আরবি বোঝার জন্য গুগল অনুবাদের সাহায্য নেন তিনি। কিন্তু কোন সাইটের নিউজের সঙ্গেও আমার দেশ পত্রিকার সংবাদের কোন মিল নেই। যে ছবিটি দেয়া হয়েছে সেটিও যে গত বছরের ১৮ অক্টোবর আপলোড করা হয়েছে তার প্রমাণ তুলে দিয়ে বলেন, ছবিটি কাবার গিলাফ পরানোর সময় তোলা হয়েছিল। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করার পর থেকে দুটি পত্রিকা পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ তথা নয়া প্রজম্মের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তাই তাদের কোন সংবাদ দেখলে তিনি যাচাই করে দেখার চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রে সেই কাজটি করেন তিনি। তিনি বলেন, দৈনিক সংগ্রাম নিউজ প্রত্যাহার করার পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ করে। কিন্তু আমার দেশ দুঃখ প্রকাশ না করায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে বিভ্রান্তি সৃষ্টির দায়ে আমার দেশ পত্রিকার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল ও সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে দুটি পত্রিকার মিথ্যাচারের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংগ্রাম যেভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ‘বাংলাদেশে আলেমদের নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবার ইমামদের মানববন্ধন’ শীর্ষক সংবাদটি আমাদের প্রিন্ট এডিশনের কোথাও ছাপা হয়নি। কিন্তু অসাবধানতাবশত অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং একই সঙ্গে সংবাদটি প্রত্যাহার করে নেয়া হলো।