মসজিদের কাজ কী? মসজিদের ইমাম বা কমিটির কাজ কি এলাকার প্রতিবেশীদের মতো কুটনামি করে অন্যের জীবন ঝঞ্জামুখর করে তোলা?
আমরা জন্মের পর থেকে দেখে আসছি যে, মসজিদের মাইক ব্যবহার করে হিন্দুদের মন্দির ভাঙার উসকানি দিতে, বৌদ্ধ মন্দির ভাঙার উসকানি দিতে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে, রাজাকারের বিচার ধূলিসাৎ করতে, রাজাকারকে চাঁদে দেখতে পাওয়ার ঘোষণা দিতে, কোন নারী নাস্তিক ও অশ্লীল তা বলতে, দুই গ্রামের মধ্যে মারামারি আরও উসকে দেওয়ার ক্ষেত্রে, মনিষী ও সৃষ্টিশীল মানুষদের নাস্তিক ঘোষণা করে অবাঞ্ছিত করতে, ব্লগারদের হত্যা করার ক্ষেত্রে প্ররোচিত করতে ইত্যাদি।
কিন্তু বিশ্বাসীরা মসজিদকে তো পবিত্র স্থান বা নিরাপদ স্থান বলে থাকে, তাহলে এমন নিরাপদ জায়গা থেকে নেতিবাচক, উসকানিমূলক, ধ্বংসাত্মক চিন্তাধারার প্রচার করা হবে কেনো?
সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের একজন নারী যুক্তরাষ্ট্রে গেলে তার নামে এলাকায় নানাভাবে অপ্রপচার চালানো হয় যে, মেয়েটা বিদেশ গিয়ে ছোট কাপড়চোপড় পরছে, খোলামেলা চলছে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর সাথে প্রেম-বিয়ে করছে, নাস্তিক হয়ে গেছে ইত্যাদি এবং এইসব বলে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত করতে মসজিদের মাইক ব্যবহার করা হয়। তবে কি মসজিদের কাজ শয়তানী করা?
কোনো নারী যদি ছোট পোশাক পরিধান করে থাকে বা ভিন্ন ধর্মালম্বীর সাথে প্রেম করে থাকে বা একাধিক মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িত হয়ে থাকে তাতে মসজিদ কমিটির দুশ্চিন্তার কোনো কারণ থাকার কথা না। আবার সমাজচ্যুত করার অর্থ কী? একবিংশ শতাব্দীতে এই ধরণের কুৎসিত মন মানসিকতা শুধুমাত্র জঙ্গিবাদী মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশ।
যেহেতু সুবিধাবাদী বিশ্বাসীরা বলে থাকে ‘ইসলামের সাথে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নেই’, সেহেতু তাদের উচিত মসজিদ কমিটির এই ধরণের কট্টর চিন্তাধারার সমালোচনা করা এবং মসজিদের মাইক ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখা। তথাপি, যেহেতু সুবিধাবাদী বিশ্বাসীরা বলে থাকে ‘ইসলাম সম্প্রীতির কথা বলে’, সেহেতু কোন নারী কোন ধর্মাবলম্বীর সাথে প্রেম-বিয়ে করছে বা বিছানা ভাগ করছে এতেও সমস্যা থাকার কোন সুযোগ নেই।
বর্তমানে মুসলমানেরা নানা পন্থায় বিভক্ত। সুবিধাবাদী পন্থা, কট্টর পন্থা, প্রেম পন্থা।