মার্কিন সেনা সরে যাচ্ছে আফগানিস্থান থেকে। সাথে তালিবান দখল নিচ্ছে আফগানিস্থান, একটু একটু করে। সরকারী সেনার মনোবল তলানিতে। কদিন আগেই খবর দেখলাম তালিবানের তাড়ায় ১০০০ আফগান সেনা পাশের দেশে পালিয়ে গেছে। তাঁদের প্রপার ট্রেনিং নেই, নেই সামান্য মনোবল। এমনকি অস্ত্রশস্ত্রেও ঘাটতি। আমেরিকার আফগান অ্যাডভেঞ্চার শেষ, তারা সাধারণ আফগানদের তালিবানদের হাতে তুলে দিল বলা যায়। আফগান সরকারের পতন এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। এই মুহূর্তে হিংস্র বর্বর মধ্যযুগীয় তালিবান শাসনের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আফগানিস্থান। অসহায় আফগান সরকার সাধারণ মানুষের কাছে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে। এদিকে আফগানিস্থানের পাসপোর্ট অফিসে লম্বা লাইন। মানুষ পালাচ্ছে দেশ ছেড়ে, বর্বর তালিবান শাসনের হাত থেকে বাঁচতে।
এখানে শুধু একটা কিন্তু আছে। সরকারী আহ্বানে সাড়া দিয়ে আফগান মেয়েরা মাঠে নামছেন। নিচ্ছেন অস্ত্র প্রশিক্ষণ, তালিবানদের মোকাবিলা করতে। তাঁদের শিক্ষার অধিকার, মানুষের মত বেঁচে থাকার অধিকার বাঁচাতে। সিরিয়া ইরাক উদাহরণ, আইসিসকে মাটিতে মিশিয়ে দেবার পিছনে নারী শক্তির বিপুল অবদান অনস্বীকার্য। এবার আফগানিস্থান। জানি না, তাঁরা সংগঠিত হতে পারবেন কিনা। যদি পারেন, তালিবান ভবিষ্যতে আর কোনদিন মাথা তুলতে পারবে না আফগানিস্থানে। দেশটায় নতুন ইতিহাস রচনা হবে, ঘুরে যাবে ইতিহাসের মোড়। আর যদি না পারেন, উদাহরণ হয়ে থাকবেন আগামী দিনের মানুষের সামনে। যা একদিন ফের বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ জ্বালাবে, কবর দেবে তালিবানি ধর্মীয় রাজনীতিকে।
সারা দুনিয়ায় ধর্মের কাছে সব থেকে নির্যাতিত মহিলারা, তা সে যে ধর্মই হোক না কেন। আগামী বিশ্বে এই নারী শক্তিই নির্ণায়ক ভুমিকা নিতে চলেছে। মানুষের মত বাঁচা, সম অধিকার নিয়ে পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাওয়া, নিজের জীবনের সব সিদ্ধান্ত নিজের হাতে নেওয়া; ধর্ম সমাজ সহ সব বাধা দূরে সরিয়ে। এই পরিবর্তন আসবে মহিলাদের হাত ধরেই। এই অধিকার মহিলারাই ছিনিয়ে নেবেন পুরুষের মুখাপেক্ষী না থেকেই। আর এটাই ভবিষ্যৎ পৃথিবী।
- গৌতম চক্রবর্তী