উপরের যে ছবিটি দেখছেন- তা ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের সময় তোলা ব্রাজিল- আর্জেন্টিনার পতাকায় ছেয়ে যাওয়া রাজধানী ঢাকার একটি ছবি। চাইলে এমন ছবি বিশ্বকাপের সময় সারা বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তেই বসে তোলা যাবে। আমাদের দেশ ফুটবল বিশ্বকাপ খেলে না। তাই বিশ্বকাপের সময় আমরা পরের পতাকা উড়াই। আর মনে মনে স্বপ্ন দেখি...একদিন আমরাও!
আমাদের সেই দিন আজ এসেছে। কিন্তু আমাদের সেই পতাকায় ছেয়ে যাওয়া দেশ কই? ফুটবলে হয়নি, ক্রিকেট আজ স্বপ্নের বিশ্বকাপকে নিয়ে এসেছে একদম আমাদের নিজের দুয়ারে। তবে কোথায় আমাদের লাল-সবুজে ঢেকে দেয়া লক্ষ-কোটি ঘর বাড়ী?
আমাদের জাতীয় পতাকা উড়ানোর জন্যে বিশেষ আইন আছে, আছে নানা বিধি-নিষেধ। ২০০৮-এ সর্বশেষ সংশোধিত জাতীয় পতাকা বিধির ৪ নম্বর ধারা বলছে-সারা দেশে সকল বাড়ীঘরে পতাকা ওড়ানো যাবে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে। অর্ধনিমিত ভাবে ওড়ানো যাবে একুশে ফেব্রুয়ারী আর ১৫ই আগস্টে। আরো একদিন পতাকা ওড়ানো যাবে- নবীর জন্মদিন ঈদে-মিলাদুন্ন্বীতে। আর সরকারী কিছু অফিসে পতাকা ওড়ানো যাবে সব কার্যদিবসে। সংসদ, কোর্ট, মন্ত্রীর দপ্তর, স্কুল-কলেজ। এমনকি অপরাধীদের বেঁধে রাখা জেল খানাতেও পতাকা উড়বে প্রতিদিন। প্রানের টানে সারা দেশের চেতনা এক করে দেয়া বিশ্বকাপের মতো আনন্দ-উপলক্ষ পতাকার যোগ্য নয়।
হয়তো এমন বিধি-নিষেধের যৌক্তিকতাও আছে। কিন্তু মানুষের উচ্ছাস তো বিধি নিষেধের বাঁধন মানে না। জাতীয় পতাকা বিধি (৯ নম্বর ধারা) তো এও বলছে যে বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী মিশনগুলো ছাড়া দেশের আর কোথাও কোন অফিসে বা বাড়ির ছাদে উড়ানো যাবে না বিদেশী পতাকা। এযাবত কোন বিশ্বকাপে মানুষের আবেগ আইন মানেনি। সরকারও খড়গহস্তে হা রে রে করে বাধা দিতে আসেনি। সর্বত্র উড়েছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার নিশানা।
তাহলে আমার বিশ্বকাপে কেন লাল-সবুজে দেশ ঢেকে যাবে না?
আসুন প্রানের জোয়ারে পতাকা ওড়াই!