আমার জনৈক স্কুলের বন্ধুর স্ত্রী অসুস্থ। তাকে অনেকগুলা টেস্ট করতে দেয়া হয়েছে। তো পুরান ঢাকার কাছাকাছি এক হাসপাতালে গেলাম পেশেন্টকে ভর্তি করে ইনভেস্টিগেশন গুলা করতে। ইমারজেন্সী মেডিক্যাল অফিসার পেশেন্টকে কিছু জিজ্ঞাসা করে প্রথমেই বলল একটা ইসিজি এখনই করতে হবে। রিপোর্ট টা কার্ডিওলজী বিভাগে দেখাতে বলল কারণ সে ইসিজিতে কিছু সমস্যা দেখতে পাচ্ছে। পরে বাকি ইনভেস্টিগেশন নিয়ে কথা বলবে। তো ইসিজিতে লেফট ভেন্ট্রিকুলার হাইপারট্রফি এবং কিছু ইস্কেমিক চেঞ্জ ছিল যার জন্য আর্জেন্ট এডমিশনের প্রয়োজন নেই। কার্ডিওলজীতে এক জুনিয়র ডাক্তার ইসিজি দেখে ঘাবড়ে গেল। বলল ইসিজি খুব খারাপ এখনই ভর্তি করতে হবে। আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম। এমন কি ফাইন্ডিংস ছিল যা আমি মিস করলাম? যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমরা ভর্তি না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেই জুনিওর ডাক্তার পরামর্শ দিল, আমাদের এখানে ভর্তি না করলে যে কোন সরকারী হাসপাতালে যান। রোগীর ইসিজি খুব খারাপ। আমি পরিচয় দিলাম আমি ডাক্তার। আমাকে একটু বলেন ইসিজিতে আপনি কি খারাপ পেয়েছেন? সে বলল এন্টেরিওর চেস্ট লীড গুলোতে এস,টি ইলেভেশন আছে। হার্ট এটাক। তো লীডগুলোর দিকে দেখে বুঝলাম বেচারা ইসজিতে খুব ফ্যামিলিয়ার না। ঐ লীডের ট্রেসিং গুলো নতুনদের জন্য কনফিউজিং হয়। যদিও টি ওয়েভ বেশ ওপরে উঠে যায় আসলে ওটা এস,টি ইলেভেশন নয় নরমাল ফাইন্ডিংস। ওকে দোষ দেইনা। স্টুডেন্ট অবস্থায় এরকম কনফিউশন আমারও হয়েছে। আমাদের দেশে শিক্ষকরা ছাত্রদের যেভাবে শেখানো প্রয়োজন তা করেন না। আমি দুঃখিত এটা সত্যি। নিজে শিখে নেবে এরকম মানসিকতা শিক্ষকদের। এই ছেলেটাকে আমি দোষ দেই না। সে সঠিক ডায়াগনোসিস না করতে পারলেও রোগীর ভাল চেয়েই ভর্তি হতে বলেছে বা যে কোন সরকারী হাসপাতালে যেতে বলেছে। আমি জানি আমার এ পোস্টে কোন দিক নির্দেশনা নেই। কিন্তু শিক্ষকদের প্রতি ছোট্ট একটা মেসেজ আছে যা তাদের কেউ হয়ত জানবেনও না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৪৯