এই শহরে...
রিয়াল এস্টেটের জৌলুস বিজ্ঞাপনের মাঝখানে ঝুলে থাকে ছিবড়ে যাওয়া নর্দমার নালা। শাহরিক ক্ষোভে পাংচার হয় ঘূর্ণনযন্ত্র; সমান্তরালে মেনিকিন হাসে রোবটিক ঢং-এ। উঁচু নিচু মানবিকতার বিভাজন রেখা ক্রমেই বাড়ছে সাত আর সত্তরের গাণিতিক হারে। কালো আঙুরে বাসী ঘ্রাণ শোকে লোভী মাছি; শ্রান্তি নিয়ে ফিরে যায় নিজস্ব নিঘূঢ় ঘোরে : ক্যমিকাল এলার্জি। কসমেটিক্সের মনোলোভা দোকানে ডানা মেলে বারোয়ারি নারীর নগ্ন শরীর। পাশের জনপদে পোড়ে অঙ্গার হয় অমলার ধবল শরীর জন্মের আক্ষেপে। পাশব পুরুষ শুনে কান্নার ঝকমকি আওয়াজ। জীবনের নামে বলি হয় বৃদ্ধার ভিক্ষের ঝুলি। কালো কাচে ঢাকা থাকে সম্রাজ্যের বেনিয়া-বনিক। অর্কিডের ঝাড়ে গুমরে মরে বুনো হওয়ার অদম্য স্পৃহা। মখমল হাতে সমর্পিত রাত্রির নিদ্রাহীন বিলাসিতা। কব্জির জোড়ে তুড়ি মেরে উড়ে যায় ফালি ফালি বিকেল। নিজস্ব নির্জনতায় খান খান বিষণ্নিনার ফাগুন-আকাশ। সম্মিলিত পদধ্বনি ক্রমশ ভাঙছে মৃত্তিকার জন্মাধিকার। ফেরিওয়ালার চিৎকার, রিক্সার টুংটাং আর লোকাল বাসের ঝাঁকুনি জীবনটাকে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ভগ্নতার শেষপ্রান্তে দাঁড়ালে; তন্দ্রা ভাঙে এক মগ্ন চৈতন্য কবির; যার প্রজ্ঞা ও বোধ বেড়ে উঠছে এই শহরে...
প্রথম স্মৃতির পর...
দ্বিতীয়েরা সব সারিবদ্ধ পিঁপড়ের মত
ভেসে গেছে দূর জলপথ ধরে
বিভাজন রেখা বরাবর—
যেমন প্রথমেরা সব পলাতক নয় স্মৃতি-কারাগারে।
প্রথম স্মৃতির কালে—
অস্তিত্বের অনুরণে বেজেছিলো যে মৃদু শিহরণ
তারপর স্মৃতিঘরে ফালি ফালি জমছে—
ভাঙা শ্লেট, চকপেন্সিলগুড়ো, হারানো ঘুড়ি : ছেঁড়া শৈশব।
ঘোলাজলে হেঁটে হেঁটে সেরে গেছে কাঁটা পায়ের ক্ষতচিহ্ন সব
ভুলে গেছে বেভুল বালক তার ধূসর কৈশোরের রংছটা টি-শার্টের স্মৃতি
তবু ভুলে নাই –
ও পাড়ার কিশোরির বুকে তোলপাড় তোলা মাতাল বিকেলটাকে;
প্রথম স্মৃতির দাগ—
বয়ে যায় অন্তহীন অভিমানে
দ্বিতীয়েরা যেমন জানালার ওপারে ম্রিয়মান মরচে পড়া আকাশের করুণ বিলাপ।
প্রথম স্পর্শের কথা
লিখেছিলো উন্মাদ বালক তার গোপন সিন্ধুকে
ভুলে গেছে মানবিক মন সব দ্বিতীয়ের তৃতীয়ের পঞ্চমের কীর্তিনাশা নদীটাকে
প্রথম যেদিন সে ছুঁয়েছিলো চাঁদ
সেদিনের সেই অবসাদ
আজো তাকে মাঝরাতে কাঁদায় নিরালায়
গহিনে কোথায় যেনো বুনে যায় উত্তরাধিকারের জ্যামিতিক বলয়।
প্রথম স্মৃতির পর—
আর সব ভেসে গেছে প্লাবনের জলে
দ্বিতীয় চুম্বনের লালচে দাগ, তৃতীয় মিলনের অব্যক্ত বিষাদ
মুছে গেছে নিপুন শিল্পীর নিখুত আঁচড়ে
পঞ্চমের স্রোতে ভেসে গেলে প্রেমিকার রুমাল
কাঁদালো না একটুও প্রেমিক হৃদয়।
প্রথম স্মৃতির পর—
মেঠোপথ ধরে হেঁটে গেছে কত কিশোরির পদচিহ্ন
কাঁপাহাতে-কাঁচাঅক্ষরের সকরুণ বিলাপ
বিবর্ণ ডায়রির পাতা খসে গেছে অবেলায়
প্রথম স্মৃতিরা সব বেভুল বালকের কাছে
হয়ে উঠে দিব্যলোক ঈশ্বর কোন!
********
**এডিট করার ভয়ে অযতনে পোস্ট করা হলো, ক্ষমাপ্রার্থী।
পরে ঠিক করে দেবো**
বিষন্নিনা স্বদেশদার কাছ থেকে ধার করা***
********