somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলা

০৫ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জামায়াতের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলা
আজ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে মুক্তাঙ্গন থেকে বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের উপর্যুপরি বাধার সন্মুখীন হয়।বিকেল ৫.১৫ টায় মুক্তাঙ্গন থেকে কর্মসূচী শুরুর কথা থাকলেও নেতাকর্মীরা বিকাল ৪.০০টা থেকেই বায়তুল মোকাররামের উত্তর গেটে সমবেত হতে থাকে। ৫.০০ বাজার আগেই বায়তুল মুকাররামের উত্তর গেট জনসমূদ্রে পরিণত হয়। বিকেল ৪.৪৫ মিনিটে আসরের আজানের পর বিকেল ৫.০০ আসরের জামায়াত শুরু হলে নেতাকর্মীরা নামাজ আদায় করেন। নামাজের সময় জাতীয় মসজিদে তিলার্ধ পরিমাণ জায়গা ছিলনা। বাধ্য হয়ে তারা উত্তর গেটের সন্মুুুখভাগে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ হলে কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারী এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ এমপি,সহকারী সেক্রেটারী নূরুল ইসলাম বুলবুল ও মাওলানা আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল গগন বিদারী স্লোগান দিতে দিতে মুক্তাঙ্গনের দিকে অগ্রসর হয়ে পল্টন মোড়ে পৌঁছলে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ মিছিলের গতিরোধ করে। এক পর্যায় পুলিশ জামায়াত নেতৃবৃন্দের সাথে বাক-বিতন্ডতায় লিপ্ত হয় এবং কোন প্রকার বিলম্ব ছাড়াই তাৎক্ষণিকভাবে নেতাকর্মী ও জনতার উপর লাঠি চার্জ করে। নিরস্ত্র জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মহুর্তের মধ্যে পুরো পল্টন ও তার আস-পাশ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ জনতার প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ জনতার দিকে রাবার বুলেট,কাাঁদানে গ্যাস ও রঙ্গিন পানি নিক্ষেপ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতা সকল প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখে। এ সময় পুলিশ জামায়াতের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনতাকে গ্রেফতার করে এবং পুলিশের হামলায় শতাধিক আহত আহত হয় । এর মধ্যে ১০ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। মাগরিবের নামাজে আগ মহুর্তে জনতা রাজপথ ছেড়ে দিয়ে সিটি অফিস চত্তরে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর আমীর রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও কের্ন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারী এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ এপির পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারী অধ্যাপক তাসনীম আলম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা এ টি এম মাসুম,মহানগরী সহকারী সেক্রেটারী নূরুল ইসলাম বুলবুল ও মাওলানা আব্দুল হালিম প্রমূখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেছেন,জামায়াতের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলা প্রমাণ করে সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। মূলত সরকার জনগণকে ভয় পায়। কারণ,তারা দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আর নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্যই বিরোধী দলের উপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে। আজ সরকার পুলিশ বাহিনীকে নিরস্ত্র জনতার উপর লেলিয়ে দিয়ে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানীতে লাঠিচার্জ,রাবার বুলেট ও কাাঁদাতে গ্যাস ছুড়ে প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসীবাদী ও স্বেরাচারী শক্তি। ইতিহাস স্বাক্ষী স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদের পরিণাম কখনো ভাল হয়না। তাদের লজ্জাজনক পরিণতি অনিবার্য হয়ে ওঠে। তিনি বলেন,সরকার ক্ষমতার দম্ভে ও পেশী শক্তির জোরে জনগণের আন্দোলন ঠেকানোর অপচেষ্টা করছে। কিন্তু এসব করে জনতার আন্দোলন ঠেকানো যায়না। সরকার জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা আবারও দলীয় প্রসিকিউশনের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করার জন্য রিমান্ড প্রার্থনা করেছে। কিন্তু কথিত রিমান্ডের নামে যদি শীর্ষ নেতৃবৃন্দের জীবন সংকটাপন্ন করা হয় তাহলে সৃষ্ঠ পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে। নেতৃবৃন্দের কিছু হলে এদেশের মানুষ ঘরে বসে তামাসা দেখবেনা। তারা সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলে সরকারের পতন ঘটিয়ে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি নিশ্চিত করবে। তিনি আরও বলেন,দেশ পরিচালনায় সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতা ও জনদুর্ভোগ অবসানের জন্য আন্দোলন শুরু করেছি। জনগণের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। কিন্তু সরকার যদি মনে করে জুলুম-নির্যাতন ও পুলিশ দিয়ে জনগণের এ আন্দোলন বন্ধ করবে তাহলে তারা বোকর স্বর্গে বাস করছেন। মূলত জুলুম-নির্যাতন তাদের পতনকে তড়ান্বিত করবে। এ টি এম আজহার বলেন,সরকার নিজেদেরকে গণতন্ত্রী বলে প্রচার করলেও তারা বিরোধী দলের রাজনৈতিক অধিকার স্বীকার করেনা। এ জন্য বিরোধী দলের উপর দলন পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু সরকারের এসব অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসীবাদী আচরণের বিরুদ্ধে জনতা গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে গণ বিষ্ফোরণের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত করবে। জীবন থাকতে জনগণ সরকারের এ জুলুম-নির্যাতন মেনে নেবেনা। তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশ,জাতিসত্ত্বাও ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার ফতোয় নিষিদ্ধ,পর্দাকে ঐচ্ছিক করণ,ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির নামে ধর্মহীন শিক্ষানীতি,মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র,নারীনীতি প্রণয়নের নামে ইসলামের মিরাসী বিধানে হস্তক্ষেপ করে আবারও প্রমাণ দিয়েছে তারা ইসলামের বিরোধী শক্তি। তাই এই দেশ ও ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তুলে এ ব্যর্থ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক তাসনীম আলম বলেন,সরকার জনতার উপর পুলিশ লেলিয়ে জনগণের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চায়। তারা বিনা উস্কানীতে জায়াতের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা চালিয়ে প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনা বরং তারা গণতন্ত্র বিরোধী ফ্যাসীবাদী শক্তি। তাই এই ফ্যাসীবাদী শক্তির বিরুদ্ধে দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তুলে ব্যর্থ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনণের সরকার কায়েম করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম খান বলেন,সরকার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে প্রমাণ করেছে তারা গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাস করেনা বরং তারা এখনো এক দলীয় বাকশালী আদর্শে বিশ্বাস করে। তাই দেশের মানুষ এই গণতন্ত্র বিরোধী সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায়না। তিনি সরকারের পতনের লক্ষ্যে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান। প্রধান অতিথির বক্তব্য চলা কালে পুলিশ অতর্কিতভাবে সিটি অফিস চত্তরে সমাবেশে হামলা চালায় এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। কিন্তু জনতার উপর্যুপরি প্রতিরোধের মুখে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। মাগরীবের নামাজ চলা কালে পুলিশ মুসল্লীদের উপর হামলা চালানোর চেস্টা করলেও জনতার প্রতিরোধে তাও ব্যর্থ হয়। সে সময় জনৈক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায় নামাজ শেষ হলে রাজাকারদের শায়েস্তা করা হব
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যোগ্য কে???

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪১

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)




(সকল... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতান্ত্রিকভাবে লীগকে ক্ষমতার বাহিরে রাখা যাবে আজীবন।

লিখেছেন শাহিন-৯৯, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৩



লীগ সদ্য বিতাড়িত কিন্তু তাদের সাংগঠিক কাঠামো এখনো পূর্বের মতই শক্তিশালী শুধু ছোবল দিতে পারছে না, স্থানীয় নেতারা বিএনপির নেতাদের বড় অংকের টাকার বিনিময়ে ইতিমধ্যে এলাকায় প্রবেশ করছে তবে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেললেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪১


মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী লম্বা রেইসের ঘোড়া মনে হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া হতে বেডরুমে যার নিয়োগ নিয়ে অস্বস্তি আছে তিনি খুব দ্রুত শিখে গেলেন কিভাবে মানুষের মাথা ঠান্ডা করতে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×