একদা নানা গোত্র, জাত, ধর্মের লোকদের একই সেমিনার কক্ষে আলোচনা চলছিল!
দরোজায় ছোট্ট একটি শিশু ভিক্ষার বাটি হাতে নিবেদন করে, কিছু সাহায্য চাই?
ধর্মগুরুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করল ছোট্ট শিশুটি, সবাই এক এক করে যার যা তৌফিক ছিল দান করল!
শিশুটি চলে যেতে লাগলে একজন ধর্মগুরু ডাক দিয়ে বলল, তোমার কি বাবা মা নেই?
শিশুটি মাথা নাড়ল, নেই।
থাকো কোথায়?
বলল, রেল ষ্টেশনে।
বাবা মা'র নাম মনে আছে?
মাথা নেড়ে বলল, না।
তুমি কোন জাতের? বলল, জানি না।
তোমার ধর্ম কি তাও জানো না?
বলল, না।
ধীরে ধীরে বাকী ধর্মগুরুরাও শিশুটির কাছে এগিয়ে এলো, সবাই যার যার ধর্মে দীক্ষিত করতে চাইল!
সেমিনারে এই নিয়া হাঙ্গামা শুরু হইল, অনেকেই আহত-নিহত হল!
গুরুজনদের হস্তক্ষেপে বিচার বসল, যেহেতু শিশুটিকে নিয়েই এতো মানুষ আহত নিহত হল সেজন্য শিশুটিকেই হত্যা করার রায় হল!
শিশুটিকে হত্যা করে লাশ কিভাবে সমাহিত করবে তা নিয়ে আবার তর্ক শুরু হল, কেউ বলল মাটি চাপা দিতে হবে, কেউ জ্বালিয়ে দিতে, কেউ মমি বানিয়ে রাখতে বলে! এ নিয়ে তর্ক চলতে লাগলো, সবশেষে সিদ্ধান্ত হল শিশুটিতে গহীন অরণ্যে রেখে আসা হবে যেখানে বাঘ, সিংহ, হায়েনার অভয়ারণ্য!
সিদ্ধান্তমত সকল ধর্মের লোকেরা শিশুটির হাত পা বেঁধে গহীন অরণ্যের দিকে চলল, পথিমধ্যে তাঁরা দেখতে পেল উঁচু পাহাড়ের গাছের ডালে সুরেলা পাখিগুলো ডাকছে, গাছের নীচে বসে আছে একদল সিংহ, কদম দূরে একদল মহিষ ঘাস খাচ্ছে, মা চিতারা শাবকদের শিকার শেখাচ্ছে, সকল ধর্মের লোকেরা অবাক নয়নে দেখতে লাগলো,
ইতিমধ্যে সকল পশুদের সর্দার এসে ধর্মগুরুদের জঙ্গলে আসার কারণ জানতে চাইল,
তাঁরা বলল এই শিশুর জন্য আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাই ওকে তোমাদের কাছে বলি দিতে এসেছি,
পশুরা বলল না পারতে আমরা শিশুদের শিকার করি না, হত্যাও করি না!
পশুদের কথা শুনে ধর্ম গুরুরা কানাঘুষা করতে লাগল,
সবার নীরবতা ভেঙে গরিলা বলে উঠল, শিশুটাকে আমার কাছে রেখে যাও!
মতি মিয়া ঘুম ঘুম চোখে ছোট্ট মেয়ের চুলে বিলি করতে করতে গল্প বলে যাচ্ছে! মেয়ে গল্প শুনে অতৃপ্ত, তারপর বোলো বাবা, তারপর...? গপ্প লো না!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৪