সোর্স: Click This Link
প্রায় তিনশত বছর ধরে পুরোবিশ্ব পশ্চিমাদের (পশ্চিমা ক্যাবাল/প্যারাসাইট/বিটিসি)কথা শুনছে এ ভেবে যে তাদের কথা বা দেখানো পথ ও প্লানের মাধ্যমেই উন্নয়ন (সামগ্রিক) লাভ করা সম্ভব।কিন্তু বাস্তবে তা কখনোই হয়নি। ইউরোপ-আমেরিকাসহ কিছূ ফিনান্সিয়াল সিটি যেমন- হংকং, সিঙ্গাপুর বা দুবাইয়ের যে উন্নয়ন দেখছি তা হল রেড ডেভেলপমেন্ট। অর্থাৎ ইউরেপা-আমেরিকা-জাপান বা ফিনান্সিয়াল সিটিগুলোর যে উন্নয়ন হয়েছে সেটি হল ঋণের মাধ্যমে। ওয়াল্ড ডেট(ঋণ)ক্লকে এসকল দেশেকে লাল রংঙ্গে অংকিত করা হয়েছে। জাপানের জিডিপির 238% এবং কানাডা ও আমেরিকার 98-99% জাতীয় ঋণ।
( দুগ্ধ-স্রোতোরুপী তুমি জন্মভুমি-স্তনে। আর কি হে হবে দেখা?-যত দিন যাবে, প্রজারুপে
রাজরুপ সাগরেরে দিতে বারি-রুপ কর তুমি ;এ মিনতি)
এখানে অবশ্য মনে প্রশ্ন আসতে পারে এই সকল দেশ্র যদি এত ঋণী হয় তাহলে পৃথিবীর এত সকল ঋণের মালিক কে? হ্যাঁ, যারা এ সকল ঋণের মালিক তারাই হল পশ্চিমা ক্যাবাল/প্যারাসাইট/বিটিসি। এরা কোন দেশ নয় বরং কতিপয় পরিবার ও তাদের মালিকানাধীন করপোরেশনগুলো। যেমন- এক সময়ের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বা হাডসন বে কোম্পানি।শুধু ইস্ট ইন্ডিয়া পুরো ভারত উপমহাদেশসহ এর পাশ্ববর্তিদেশ এবং মালয় উপদ্বীপে সামগ্রিক কলোনী ও থাইল্যান্ড এবং চীনে অর্থনৈতিক কলোনী স্পাপন করেছিল।অপরদিকে হাডসন বে কোম্পানি পুরো উত্তর আমেরিকায় কলোনী স্হাপন করেছিল।এসকল কোম্পানীগুলোর উত্তরসুরী কর্পোরেশনগুলো্ই পৃথিবীর সকল ঋণের (সকল জাতি রাষ্ট্রের) মালিক।
তাদের দ্বারা এত সব কিছু অর্জন সম্ভব হয়েছে আমাদেরই দ্বারা। Paper Money বা কাগুজে মুদ্রার সমর্থক ও পায়োনিয়ার এবং ক্যাবালদের পেইড ওয়ার্কার এ্যাডাম সিম্থ ততকালিন ওয়াল্ড সেন্ট্রাল ব্যাংক ব্যাংক অব ইংলান্ডের কাগুজে মুদ্রার সমর্থনে An Inquiry Into the Nature and causes of the Wealth of Nations গাইড বিশ্বের সামনে পেশ করেন। সেখানে তিনি বার্টার(পন্য বিনিময়)ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন। পৃথিবীর কতিপয় উপজাতিদের বার্টার ব্যবস্থা এবং তার বেশকিছূ অসুবিধার কথা উল্লেখ করেন।এছাড়া অনেক দেশে ধাতব মুদ্রারও প্রচলন এবং তার অসুবিধার কথাও তুলে ধরেন । (তবে অসুবিধা ছিল এই সকল প্রারাসাইটদেরই। কারণ আর যাই হোক ধাতব মুদ্রা থাকলে যে কোন মুহুর্তে পুুরো বিশ্বকে শক দেয়া বা হুমকি দেয়া যেত না এছাড়া কোন কিছু ছাড়া কাগজ প্রিন্ট করার পেটেন্ট নিয়ে বিশ্বকে সম্পদশুন্য ও রেড করাও সম্ভব হত না।) যদি বিনিময়ই মূল উদ্দেশ্য হয় তবে কাগুজে মুদ্রাই একমাত্র কার্যকরী যাতে বার্টার এবং ধাতব মুদ্রার সকল অসুবিধা দূর হবে।যৌক্তিক (!)ভেবে পৃথিবী কাগুজে মুদ্রা ব্যবস্থা গ্রহন করে। কেউ যাতে কোন প্রকার প্রশ্ন করার সুযোগ না পায় সেজন্য শর্ত দেয় হয় যে, যেহেতু কাগজের ইন্ট্রিনসিক(অন্তর্নিহিত/নিজস্ব)মূল্য নেই সেহেতু তা স্বর্নে কনভার্টিবল হবে।
স্মিথ এর সময়ে ছিল নির্দিষ্ট পরিমান পা্উন্ড, বর্তমানে তা ডলারের মাধ্যমে স্বর্ন প্রদানের অঙ্গিকার বা প্রমিজ করা হয়। আমার কাছে 20টাকার নোট আছে। তাতে লেখা আছে ‘চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে বিশ টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে’।বিশ টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে বলতে বুঝায় যখনই কোন গ্রাহক ব্যংকে বিশ টাকার সমপরিমাণ স্বর্ণ চাহিবে তখনই ব্যাংক তা দিতে বাধ্য থাকিবে। পরবর্তিত কোন এক সময় সম্ভবত 1971 সালে ‘সমপরিমান স্বর্ণ’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে। তাদের সকল কিছূই মেনে নিচ্ছি বা বাধ্য হচ্ছি এই ভেবে যে আর যাই হোকে উন্নয়ন বা আমার সম্পদ নিরাপদ থাকলেই যথেষ্ট।
****Paper Money eventually returns to its intrinsic value – zero” Voltaire 1729*
সর্বশেষ 1931 সালে 35 ডলারের বিনিময় এক আউন্স স্বর্ণ প্রদানের অঙ্গিকার করা হয়। 1944 সালে 44 জাতির ব্রেটন উডসের `The United Nations Monetary and Financial Conference’ এ ডলারকে আন্তর্জাতিক বিনিময়ের মাধ্যম হিতেবে গ্রহন করা হয়। সদস্য দেশগুলো তাদের মুদ্রাগুলো 1% প্লাস বা মাইনাস করে ডলারের সাথে parity মেইনটেইন করবে। একইসাথে ডলারকে স্টাবল করার জন্য 35 ডলার সমান 1 আউন্স স্বর্ণের দাম নির্ধারন কা হয়। অপরদিকে যেই স্বর্ণের বিপরিদে ডলার ছাপানো হচ্ছে তা ইউএস ট্রেজারিতে রাখার কথা ঘোষনা করা হয় (বাস্তবে তা কখনৈা রাখা হয়নি এবং ফেডারেল রিজার্ভ এর প্রাইভেট মালিকানায় রাখা হয়)। ডলারকে বিভিন্নভাবে এমন পর্যায়ে উন্নীত করা হল যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ তাদের রিজাভ স্বর্ণের পরিবর্তে ডলারে রাখাকেই অগ্রাধিকার দিতে থাকে। কারণ:
• অমেরিকার অর্থনীতির শক্তিশালী অবস্থান
• সহজেই 35 ডলারের বিনিময়ে 1 আউন্স হরে পরিবর্তনের সুবিধা
• উক্ত বিনিময় হার এর জন্য অমেরিকা সরকার কর্তক প্রদত্ব অঙ্গিকার
• ডলার রিজার্ভের মাধ্যমে অতিরিক্ত হিসেবে সুদ অর্জন।
• স্বর্নের চেয়ে ডলার সহজে বিনিময়/পরিবর্তনযোগ্য
1971 ও ব্রেটন উডস অঙ্গকার ভঙ্গ: ততকালীন সরকার ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে কোন সদস্য দেশের সাথে এমনকি তার State Department এর সাথে পরামর্শ ছাড়াই নিক্সন ঘোষনা করেন (ব্যাংকার ক্যাবালদের পক্ষে) ‘foreign-held U.S. dollars would no longer be convertible into gold’ . অথাৎ বিদেশী রাষ্ট্রগুলো তাদের ব্যাংকগুলোতে (আলটিমেটলি ফেডারেল রিজার্ভ) যে ডলার রিজার্ভ রাখছে তা আর স্বর্ণে পরিণত বা বিনিময় করা যাবে না।কোল্ড ওয়ার সহ বিভিন্ন দেশে অভ্যন্তরীন সঙঘাতের কারণে (তাদেরই তৈরী)বিভিন্ন দেশগুলো তাদের রিজার্ভ (35 ডলারের বিনিময় এক আউন্স স্বর্ণ) ডলারে আমেরিকা ও বৃটেনের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রাখে।কিন্তু নিক্সন এর ঘোষনায় সব কিছু উলট-পালট হয়ে যায়। ফ্লটিং একচেন্জ রেট ( ডলারই স্বর্ণের কাজ করবে অথার্ৎ) ডলার প্রিন্ট করার জন্য আর স্বর্ন রিজার্ভ রাখার প্রয়োজন নেই। শুধু প্রিন্ট (কাগজ) করলেই হবে এবং পণ্যর ন্যায় বেচা কেনা হবে) যাত্রা শুরু হলে সকল আশায় গুড়ে বালি পড়ে। এ্যাডাম সিম্থ এর পণ্য বার্টার করার অসুবিধা এখন একেবারেই শেষ হয়ে গেল! কারণ এখন আর পন্য বা সম্পদ নয় বরং কাগজই বিনিময় হচ্ছে!(গ্রেটরিভার্স )।এই ঘোষনার পরই এক আউন্স স্বর্ণের দাম 35 ডলারের পরিবর্তে 600 ডলার হয়ে যায়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- বাংলাদেশ তার অর্জিত ফরেন কারেন্সি 200 আউন্স স্বর্ণের পরিবর্তে তা 200*35=7000 ডলারে রাখল। কারণ যে কোন প্রয়োজনে তা সহজে স্বর্ণ বা অন্য মুদ্রায় কনভার্ট করা যাবে অথবা সেখান থেকে সুদ অর্জিত হবে।বাট নিক্সনের ষোষনার পরে এক আউন্স স্বর্ণের দাম হয়ে যায় 600 ডলার। অথাৎ 15 আগাস্ট এর ঠিক এক দিন পূর্বে 7000 ডলার দিয়ে বাংলাদেশ যেখানে 200 আউনাস স্বর্র্ণ ক্রয় করতে পারত এখন উক্ত 7000 ডলারের বিনিময়ে মাত্র 7000/600=11.68 আউন্স স্বর্ণ ক্রয় করতে পারবে!
Debt: The First 5000 years বই এর লেখক David Graeber ঘটনাটি সম্পর্কে বলেন-
The result was a massive net transfer of wealth from poor countries, which lacked gold reserves, to rich ones, like the United States and Great Britain. The world entered a new phase of financial history-one that nobody completely understands. পেজ- 362
অপরদিকে সৌদি সরকার তার তেল বিক্রির বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ লন্ডন ও আমেরিকার ব্যাংকগুলোতে ডলারে জমা রাখায় নিক্সন শকের সম্মুখিন হয়। ডলারের ব্যাপক দরপতন ও বিশ্ববাজরে মন্দ ঠেকাতে নিক্সন সৌদি সরকার এর সাথে চুক্তি করে যে, তার তেল বিক্রর একমাত্র মাধ্যম হবে ডলার। বিশ্ব বাজারে তেলের ব্যাপক চাহিদার জন্য আমদানীকারক দেশগুলোর নিকট ডলারের (ফ্লর্টিং মানি/প্রিন্ডেড আউট অব নাথিং)চাহিদা বেড়ে যায়।
চলবে . . . .
Source:
book: Debt First 5000 year
এবং 1. Click This Link
2. Click This Link
3. https://www.nber.org/chapters/c6876.pd
4. Click This Link
পূর্বের পর্ব 8ম পর্ব: Click This Link
9ম পর্ব: Click This Link
10ম পর্ব: Click This Link
11ম পর্ব: Click This Link
12ম পর্ব: Click This Link
13ম পর্ব: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৩৯