মসজিদুল আকসা এর ইতিহাস (প্রথম পর্ব)
মসজিদুল আকসা এর ইতিহাস (২য় পর্ব)
মসজিদুল আকসা এর ইতিহাস (৩য় পর্ব)
জেরুজালেম ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান। এখানে অবস্থিত মসজিদুল আকসা ইসলামে তৃতীয় সম্মানিত মসজিদ। ধর্মীয় কারণে যে তিনটি স্থানে সফরের কথা মুহাম্মদ (সাঃ) যে স্থানগুলোর কথা বলেছেন এই স্থান হল তার মধ্যে অন্যতম। বাকি দুটি স্থান হল মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববী।
বর্তমান অবস্থান এবং প্রশাসন
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধের আগ পর্যন্ত জর্ডানের ওয়াকফ মন্ত্রণালয় এর তত্ত্বাবধায়ক ছিল। যুদ্ধে ইসরায়েল জয়ী হওয়ার পর ইসলামি ওয়াকফ ট্রাস্টের হাতে মসজিদের ভার প্রদান করা হয়েছিল। যাতে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী মসজিদ এলাকায় টহল এবং তল্লাশি চালাতে পারে। ১৯৬৯ সালে হামলার পর ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ স্থপতি প্রযুক্তিবিদ ও কারিগরদের নিয়োগ করে নিয়মিত তত্ত্বাবধান কার্যক্রম চালান। ইসরায়েলের ইসলামিক মুভমেন্ট এবং ওয়াকফ আল আকসা ইন্তিফাদার পর থেকে হারাম আল শরিফে মুসলিম নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা চালিয়েছে। কিছু কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে পরিত্যক্ত স্থাপনার সংস্কার ।
মুহাম্মদ আহমেদ হুসাইন প্রধান ইমাম এবং আল আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস ২০০৬ সালে তাকে জেরুজালেমের গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় । ইসরায়েল ফিলিস্তিনি দ্বন্দ্বের কারনে আল আকসা মসজিদের অধিকার একটি ইস্যু। মসজিদসহ পুরো হারাম আল শরিফের উপর ইসরায়েল তার সার্বভৌমত্ব দাবি করেন কিন্তু ফিলিস্তিনিদের দাবি এর অভিভাবকত্ব ইসলামি ওয়াকফের। ২০০০ ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলনে আলোচনায় ফিলিস্তিনিরা মসজিদ এবং পূর্ব জেরুজালেমের অন্যান্য ইসলামি স্থানগুলোর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি করেন।
মসজিদুল আকসার ভেতরে একজন ফিলিস্তিনি মুসলিমের কুরআন পাঠ। ইসরায়েলের মুসলিম বাসিন্দা এবং পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা সাধারণত হারাম আল শরিফে প্রবেশ করতে পারেন এবং মসজিদুল আকসায় নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে কখনো কখনো কিছু কিছু মুসলিমের প্রবেশে বাধা প্রদান করেন। এই বিধিনিষেধের মাত্রা সময়ে সময়ে পরিবর্তন হয়। কখনো শুধু জুমার নামাজের সময় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। গাজার অধিবাসীদের জন্য বিধিনিষেধ অনেক বেশি কঠোর। ইসরায়েলি সরকারের দাবি যে নিরাপত্তার কারণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
হারাম আল শরিফে খননকার্যঃ
১৯৬৭ সালে যুদ্ধের পর হারাম আল শরিফের বাইরে কয়েক দফা খননকার্য চালানো হয়েছিল। ১৯৭০ সালে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মসজিদের দক্ষিণ এবং পশ্চিম দিকের দেয়ালের বাইরে খননকার্য শুরু করেন। ফিলিস্তিনিদের বিশ্বাস জন্মায় যে মসজিদের ভিত্তি দুর্বল করার জন্য এই খননকার্য চালানো হয়। তবে ইসরায়েল এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। ইসরায়েলের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদের পশ্চিম অংশের নিচে ১৯৮৪ সালে একটি সুরঙ্গ তৈরি করেন। জেরুজালেমে ইউনেস্কোর বিশেষ দূত ওলেগ গ্রেবার বলেন যে ইসরায়েলি ফিলিস্তিনি এবং জর্ডানি সরকারের মধ্যে স্থানের দায়িত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব হারাম আল শরিফের দালান এবং স্থাপনাগুলোর অবনতি হচ্ছে। ২০০৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে এই বিভাগ কর্তৃক প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষের অনুসন্ধানের জন্য খননকার্য শুরু করা হয়। সরকার এখানে একটি পায়ে চলা সেতু নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন যা মাগরাবি ফটকের দিকে নিয়ে যাবে। এই স্থানটি হারাম আল শরিফ কমপ্লেক্সের একমাত্র স্থান যেখানে অমুসলিমরা প্রবেশ করে থাকেন। এই অংশটি মসজিদ থেকে ৬০ মিটার ২০০ ফু দূরে অবস্থিত ছিল। এই খননকার্যের কারণে মুসলিম বিশ্বে নিন্দা উঠে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মসজিদের ভিত্তি ধ্বংস করার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। ফিলিস্তিনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া খননকার্য প্রতিরোধের জন্য ফিলিস্তিনিদের এক হওয়ার ডাক দেন। অন্যদিকে ফাতাহ বলে যে তারা ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতি সমাপ্ত করবে। ইসরায়েল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে।
ছবিতথ্যঃ ইন্টারনেট ও বিভিন্ন ওয়েব সাইট ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৫