সমস্ত দিনের চঞ্চল কর্মক্লান্তি মুছে
ঘুমিয়ে আছে গ্রামগঞ্জ, ঘুমিয়ে আছে শহর
জেগে আছো একা, নিঃশব্দ নিশাচর।
তন্দ্রাহীন, ঘুমহীন চক্ষুজুড়ে
নেশা শুধু জ্ঞানের সুরার; সারাক্ষণ খুঁজে ফেরে
মদিরা সাকির আগমন।
বিষয় আর বাসনার মোহমায়া ছেড়ে
জেগে আছো কোন অজানা উদ্দেশে
রাত্রির অন্ধকার চিড়ে আলোকসন্ধানী দু'চোখ তোমার
খোঁজে কোন রহস্যের এপার ওপার?
নিঃস্তরঙ্গ জীবনসমুদ্র বয়ে চলেছে এ রাত্রি গভীরে
কলরোল থেমে গেছে, পাখিসব ফিরে গেছে নীড়ে
থেকে থেকে ভূবন কাঁপিয়ে চলে যায় দূরগামী ট্রেন
তোমার ধ্যান ভেঙে যায়, যখন তার বাজে সাইরেন
অকস্মাৎ ডেকে ওঠ ভেঙে দিয়ে রাত্রির স্তব্ধতা
নীরবতা ভেঙে শিউরে ওঠে জনপদ, জেগে ওঠে গাছেদের পাতা
জ্ঞানলোকে ভেসে ওঠে সহস্র বর্ষের পুরাতন স্মৃতি
পুরাতন প্রেম, পুরাতন প্রীতি
ব্যবিলন, আশিরিয়া, ফিনিশিয়া, নীলনদ, দজলা-ফুরাত
শত ইতিহাসের প্রচ্ছায়া, ঘাত-প্রতিঘাত
মনে ছায়া ফেলে যায়
খসে যাওয়া শত রাজার মুকুট
মরে যাওয়া কত তারার বিলাপ
কালের লোনাজলে মুছে যাওয়া বালুচরে লেখা অগণিত নাম।
অগণন স্পার্টা এথেন্স, ট্রাফলগার স্কয়ার, স্প্যানিশ আর্মাডা
মনে ফেলে যায় দাগ।
কতো পাথর আর পিগম্যালিয়ান
কতো প্রেমিকের রাগ অনুরাগ,
কতো ইলিয়াড, ওডেসি
কতো লা মিজারেবল
কতো নর্তকির নাচের মুদ্রা,
কতো সংগীতের আসর
কতো গৃহহীন-অসহায়,
তবু জেগে থাকো তুমি-
অক্ষয়-অব্যয়, অজর-অমর
ত্রিকালজ্ঞ টিরেশিয়াস
হে নিঃসঙ্গ নিশাচর!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৫