রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতায় লিখেছেন -
- সাত কোটি সন্তানে হে মুগ্ধ জননী , রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি।
আমি আজ ৩ বছর হল নিউইয়র্কে আছি। এখানে একটি মজার বিষয় লক্ষ্য করলাম এখানে যত বাংলাদেশীদের সমিতি আছে অন্য কোন দেশের তা নেই। ঢাকা চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট সদর, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বগুড়াসহ এমন কোন শহর নেই যার নামে সমিতি নেই। দূর্ভাগ্যজনক হলেও এটি সত্যি কথা যে দেশের বাইরে বসবাসরত বাংলাদেশীদের এসব সমিতিতে প্রায় অর্ন্তকোন্দল হয় তৈরী হয় নতুন সমিতি যেমন নোয়াখালী উত্তর বা বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতি। অথচ আমি জার্মানী, রাশিয়া, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ইরাক, উরুগুয়ে বা ভারতের নামে সমিতি নেই আর ও মজার বিষয় হল রাজনীতি.....। বাংলাদেশের রাজনীতির প্রভাব ও এখানে লক্ষ্যনীয় অমুক নেতা গ্রেফতারের প্রতিবাদে মিছিল মিটিং সভা ১০ -১৫ লোক জন নিয়ে এ গুলো হয়, আর এরই মধ্যে তাদের মধ্যে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ও ঘটনা ঘটে। এটি উল্লেখ করার কারন হল এসব ঘটনা শুধুমাত্র বাংলাদেশীদের মধ্যে ঘটে । আমি অন্য কোন দেশের ক্ষেত্রে এ সব ঘটনা দেখিনি। পৃথিবীর যে স্থানেই যাওয়া যাক না কেন আমরা বাংলাদেশীরা নিজেদের চিন্তার ক্ষেত্রগুলো বাংলাদেশের পরিবেশে যেভাবে ঘটতে দেখি সেভাবেই ঘটাতে চেষ্টা করি । তাই বাংলাদেশী বিশ্বাস, রীতিনীতি-অভ্যাস, প্রথাপালনের ভঙ্গি এবং সর্বোপরি বাংলাদেশী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলোর কদর্য রুপ গুলো এ দেশে দেখানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি । অথচ আমরা চাইলে আমাদের সংস্কৃতির সুন্দর দিক গুলো সহজেই তুলে ধরতে পারি। এর কুফল সম্পর্কে আমরা যথেষ্ঠ সচেতন না হওয়ায় অজ্ঞাতে পরদেশে নিজেদের হেয় প্রতিপন্ন করে যাচ্ছি সবসময়। এর সর্বনাশা পরিণতি হয়ত পরবর্তীতে আমাদেরকেই ভোগ করতে হবে। এর সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর দিক হল নিজেদের কে হাস্যকর ভাবে, কদর্যভাবে কলহপ্রিয় জাতি হিসেবে উপস্থাপন করা যা আমরা নই।