সন্তানের স্বাভাবিক বিকাশ না হওয়ার কারনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পরিবারের স্বপ্নভঙ্গ হতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল সরকার ইতিমধ্যে তাদের স্থায়ী ভাবে বসবাসের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে । এর ফলে তাদেরকে অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করতে হবে অথবা জোরপূর্বক বহিস্কার করা হতে পারে।এ অবস্থায় ওই পরিবারটি অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী পিটার ডাটনের কাছে নতুন করে আবেদন করেছেন।
ডাঃ নাসরিন হক ও ডাঃ শফিকুল ভুইয়া দম্পতি ও তাদের দুই সন্তান ২০০৯ সালে হাঙ্গেরী থেকে অস্ট্রেলিয়া আসেন এবং ২০১০ সালে স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করেন। কিন্তু তাদের ১৫ বছরের কন্যা সুমাইয়া ভুইয়ার বেড়ে ওঠা অন্য শিশুদের মত স্বাভাবিক ছিল না আর এই কারনে তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।অভিবাসন মন্ত্রণালয় তাদেরকে বলেছে যে, তাদের সন্তানের শারীরিক সমস্যার কারণে তাদেরকে আর স্থায়ী ভিসা দেয়া যাচ্ছে না। কারন সুমাইয়া ভুইয়ার শরীরে যে সমস্যা তা অস্ট্রেলিয়ার জন্য ভবিষ্যতে একটি বোঝা হতে পারে ।
ডাঃ নাসরিন হক বলেন ” তার সন্তান ৮ বছর বয়স থেকে বিশেষ স্কুলে যায় এবং সরকার থেকে এই পর্যন্ত কোন সাহায্য গ্রহন করেননি। কম্পিউটার পরিচালনায় বিশেষভাবে দক্ষ সুমাইয়া নিজেই নিজের সব কাজ করে থাকে। তার ভাই ১৪ বছর বয়সী ভাই শাকির ভুইয়া ও নিয়মিত স্কুলে ভালো ফল করে আসছে।”
এছাড়া তিনি জানান অস্ট্রেলিয়া সরকারের কোন আর্থিক সহায়তা তার সন্তানের প্রয়োজন নেই কারন জেনারেল প্রাকটিশনার হিসাবে তার আয়কৃত অর্থ দিয়ে তিনি তার সন্তানকে সবরকম আর্থিক সহায়তা দিতে সক্ষম।
তিনি বলেন তাদেরকে এই অবস্থায় হাঙ্গেরী ফেরত পাঠানো হলে তাদের সবকিছুই নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া তাদের সন্তানরা আর হাঙ্গেরীয়ান ভাষায় কথা বলতে পারে না এবং তারা ঐ সমাজ ব্যবস্থার সাথে নিজেদের মানাতে পারবে না ফলে তাদের পড়াশুনা বন্ধ হয়ে সব সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, সন্তানের কারণে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে অনুমতি না দেয়ার ক্ষেত্রে শুধু ডাঃ নাসরিন হক একাই নন। আরো মানুষ এ নিয়ে লড়াই করেছেন বা করছেন। কিছুদিন আগে ড. বিশ্বজিৎ বণিক ও তার পরিবার পিটার ডাটনের হস্তক্ষেপের কারণে স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। এছাড়া ২০১৩ সালে ড. বিশ্বজিতের এক বন্ধু কবিরের পরিবারকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়। এখানেও কারণ, কবিরের ৮ বছর বয়সী ছেলে শ্রীজনেরও ধরা পড়েছে অটিজম। তবে লড়াই করতে করতে অভিবাসন মন্ত্রী স্কট মরিসন এ পরিবারটিকে অস্ট্রেলিয়া থাকার অনুমতি দিয়েছেন।অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহনকারী ফায়েদ হক নামে আরেক বাংলাদেশি দম্পত্তির সন্তান ৪ বছর বয়সে অটিজম ধরা পড়ে। তবে তার পরিবার মি. ডাটনের কাছে আপিল করেছিল। তার হস্তক্ষেপে তারাও অস্ট্রেলিয়ায় থাকার অনুমতি পেয়েছে।
এই কারনে আশায় বুক বেঁধেছেন ডাঃ নাসরিন হক ও ডাঃ শফিকুল ভুইয়া দম্পতি।তারা আশা করেন মি. ডাটন তাদের পরিবারকেও অস্ট্রেলিয়া থাকার অনুমতি দেবেন। এই ব্যাপারে তারা সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।এই ব্যাপারে অনলাইনে একটি পিটিশন ” Please do not deport daughter of 2 full-time doctors because of her developmental delay!”।আহবান করা হয়েছে। অনলাইনে কয়েক হাজার মানুষ এই পিটিশন সমর্থন করছেন ।আপনারা এই লিংকে গিয়ে পিটিশন সমর্থন করে এই পরিবারটির পাশে দাড়াতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৬