......... আমার হৃদয় হৃৎপিণ্ডের চাইতেও অনেক গভীরে, রক্ত আর শিরা উপশিরারও অনেক গহীনে যে অস্পৃশ্য অবিনশ্বর রুহ আছে, সেই রুহবিন্দু থেকে তোমাকে ভালোবাসি। তোমার রুপ অবয়ব বা বয়স নয়, তোমার আত্মাটাকে ভালোবাসি।
কারন ভালোবাসা নয় রূপ যৌবনের লোভ। ভালোবাসা মানে নিজের অপর সত্ত্বাকে তোমার মাঝে খুজে পাওয়া। যাকে ছাড়া আমি অপূর্ণ।
আমার হৃৎপিণ্ডের একটু উপরে, অল্প ডানপাশে, আমি নতুন হৃত্স্পন্দন টের পাই। তোমার জন্য এই হৃত্স্পন্দনের জন্ম। তুমিই আমার সেই হৃদয়ের টুকরো, যা দিয়ে তোমাকে তৈরি করা হয়েছে, আর যাকে খুজে না পাওয়া পর্যন্ত আমি অপূর্ণ।
তোমার কাছে কিছু চাওয়ার সাহস নেই আমার। আমি বরং তোমার কাছে নিজেকে দিয়ে দিলাম। আমার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ সম্পত্তি দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব থাকলো শুধু তোমার। তুমি আমার প্রসারিত বাহুডোরে না আসো, যদি আমাতে তুমি নিজেকে দিতে না চাও, তবু আমার সব কিছু তোমার। আমার সবকিছু চলবে শুধু তোমার কথামতো।
আমি জানিনা মানুষ কেন বলে প্রেমে অনেক কষ্ট। পাওয়া না পাওয়ার বেদনা। তারা হয়তো জানেনা ভালোবাসা কি। তাদের হয়তো সে ধৈর্য ছিলোনা সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষটিকে খুঁজে পাবার। নিজের জোর করে তৈরি করা ভালোবাসায় আবদ্ধ তারা। তা না হলে তারা জানতো, সত্যিকারের ভালোবাসায় চাওয়ার কিছু থাকেনা। প্রশ্ন থাকেনা, হৃদস্পন্ধন থেমে যায়না, বুক মোচড় দেয় না। কষ্ট হয়না। তাড়নার জঞ্জাল ভ্রু কুচকে ঝামেলা থেকে মুক্তি চায়না। ভালোবাসা মানে নিজের কাছে হার মানা নয়। নয় স্রেফ পছন্দ হয়েছে একজনকে তাই তাকে বশে আনা।
ভালোবাসা মানে একা থাকা। ভালোবাসা মানে অপেক্ষা করা। একদিন আয়নার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া। যাকে পেলে এমনিতেই মনের সব প্রশ্নের উত্তর মিলে যায়। প্রথম স্বপ্নের কথা মনে পড়ে। এক ঝলক স্বপ্ন। মনের মাঝে বয়ে চলা সব ভার এক পলকে আকাশে উড়ে যায়। নিজের মন সত্ত্বার প্রতিরূপ খুঁজে পেয়ে বিকশিত হয় হাসি। এই তো সে, যাকে পেতে নয়, নিজেকে দিয়ে দিতে এত বছর ধরে একা হাঁটছি।
আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য। যদি তুমি আমায় ভালোবাসো, আমিও তোমায় সারা আকাশ ভেঙ্গে ভালোবাসা দেবো । আমি তোমায় ভালোবাসবো চোখে চোখ রেখে। ভালোবাসবো তোমায় আঙুলের স্পর্শে। সব দুর্নিবার দূরত্বের কষ্ট আমি উড়িয়ে দিবো বুকে চেপে ধরে। তোমার অস্থিরতা আমি শান্ত করবো। তোমার সব অতৃপ্ততা আমি ভালোবাসার আগুনে পুড়িয়ে দিবো। তোমার অভিমানে জল আমি ঠোঁটে ছুয়ে মুছে দিবো । তোমায় ভালোবাসবো আমি সঙ্গীতের মূর্ছনায়। আমি ভালোবাসবো তোমার সুগন্ধি। তোমার প্রতিটি মুহূর্ত কাটবে প্রথম মুহূর্তের পুনরাবির্ভাবের পুলকে। আমি বুঝে নিবো তোমার সব সুক্ষতা। আমি চিনে নিবো তোমার সব চাতুর্য। আমি বাস্তব করবো তোমার সব কল্পনা। মিটাবো তোমার সব উত্তেজনা। তোমার সব শীতলতা আমি উষ্ণ করে দিবো। তোমার আসক্তিতে আমি সবসময় স্পর্শ দিবো।তুমি খুশীতে হাসবে আমার কৌশলে।তোমায় কষ্ট কখনো খুজে পাবেনা। তুমি যদি অত্যাচারের তীব্রতা আর ঘৃনায় সুখ খুঁজতে চাও, তবে বৃস্টির জল দেখতে দেখতে তোমার নিয়ে আমি খেলবো। খেলতে খেলতে তোমায় অসহায় করবে না পাওয়ার যন্ত্রণা। তোমায় একা বইতে দিবো বিরহ। দ্রোহের যন্ত্রণায় কেমন লাল হয়ে যাও তুমি, আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো। ক্রোধে বের হয়ে আসা তোমার কান্না আমি হাসিমুখে উপভোগ করবো। যদি হেরে যাও নিজের কাছে, আত্মসমর্পণ করে ফেলো, তবে ভালোবাসা জড়িয়ে দেবো তোমার পরতে পরতে। তোমার সব চিন্তা-ভাবনা- ইচ্ছা-কাজের আমি স্বীকৃতি দিবো। তোমার গোপন প্রকাশ্য সব রুচিতে আমি পাশে থাকবো। তোমায় ঘেরা প্রকৃতির সব অসমতায়, দুঃসংবাদে, সুসংবাদে ,শোকে, মৃত্যুতে,রোগে ব্যর্থতায়, বিচ্ছিন্নতায় আমি ছায়ার মতো থাকবো, তোমায় সঙ্গ দিবো সর্বদা।
তুমি আমার। কারন তুমি যদি আমার সে না হও, তবে কেন তোমাকে পেয়ে এতো ভালো লাগে। তবে কেন আমাদের হৃত্স্পন্দন একসাথে স্পন্দিত হয়। তুমি যদি আমার সে না হও, তবে কেন তোমার জন্য পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে একা দাঁড়াতে দ্বিধা নেই আমার। আমি যদি তোমার জন্য না হই, তবে হৃদয় কেন বলে হ্যাঁ, আমি তোমার জন্য। আমার মস্তিস্কে কেন শুধু তুমি। কেন আমার স্বপ্নে শুধু তুমি। অদেখা ভবিষ্যৎ শুধু তুমি। আমার হৃদয় কেন অবিচল, সবসময়, তোমার পক্ষে।
আমি কখনো তোমার হাত ছুয়ে দেখিনি। কখনো একসাথে হাসিনি। কখনো একসাথে কাঁদিনি। একসাথে কখনো বৃষ্টিতে ভিজিনি।কখনো চুমু খাইনি তোমার ঠোঁটে। তবু তোমায় ভালোবাসি। কোনকিছু ছাড়াই ভালোবাসবো।মৃত্যু পর্যন্ত... মৃত্যুর পরেও...।
আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি ভালো থেকো..........