যেকোনো ভ্রমণ কাহিনী পড়তে আমার ভীষণ ভালো লাগে। ভ্রমণ কাহিনী পড়ার সবচেয়ে মজার দিকটি হল কোনো একটা জায়গায় না গিয়েও আপনি পুরো জায়গাটা ঘুরে বেড়াতে পারেন। আর লেখক যদি ঠিকভাবে গুছিয়ে লেখেন তা হলে তো ষোলকলা পূর্ণ। হুমায়ুন আহমেদ স্যারের "হোটেল গ্রোভার ইন" বা "রাবণের দেশে আমি এবং আমরা" পড়ে মনে হয়েছে আমি নিজেই তার সাথে ঘুরছি। আমাদের সামুতেও এমন কিছু ব্লগার আছেন যাদের সাথে আপনি দেশে বা দেশের বাইরে যে কোনো যায়গাতে বিনা খরচে রাওন্ড ট্রিপ দিয়ে আসতে পারেন। তেমনই একজন ব্লগার হলেন শেরজা তপন । রাশিয়ার প্রবাস জীবন নিয়ে উনার কয়েকটি সিরিজ আছে। তিনি এখন ব্লগে নিয়মিত নন। ভ্রমণ কাহিনী লেখার পেছনে তিনি একটি বড় অনুপ্রেরণা। যদিও এটিই আমার ভ্রমণ বিষয়ক প্রথম লেখা।
অনেক দিন থেকেই লিখব লিখব করে লেখা হয়ে উঠে না। প্রায় দুবছর আগে লেখাটা শুরু করেছিলাম। জানি না লেখাটা আদৌ শেষ করতে পারব কি না। বা শেষ করলেও কত বছরে শেষ হবে। আমার লেখার পাঠক খুব কম। কিন্তু একজন স্পেশাল পাঠক আছেন, যে আমার সব লেখাই পড়ে। মাঝে মাঝে আমার গল্পের চরিত্রকে হিংষাও করে। অনেক বড় ভূমিকা হয়ে গেল। আমার লেখা গুলি এভাবেই এলোমেলো হয়ে যায়। চিন্তা করি একভাবে লিখতে কিন্তু হয়ে যায় আরেক রকম। আবার লেখার সমাপ্তিটাও মাঝে মাঝে অন্যরকম হয়ে যায়। যাই হোক শুরু করি। ভূল ত্রুটি মার্জনীয়।
সালটা, ২০১০। স্নাতক পাশ করে একটা মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিতে জয়েন করেছি। কিছুদিন চাকরী করার পরে শুনলাম অফিসের কর্মকর্তাদেরকে অফিস থেকেই বিভিন্ন দেশে বিজিনেস ট্যুরে পাঠায়। এটা দেখে মনের ভিতরে একটা চাপা উত্তেজনা অনুভব করি। অজপাড়াগায়ে বড় হওয়া আমি কখনই বিদেশে যাই নি। প্লেন তো দূরের কথা, ট্রেনেই উঠেছি হাতে গোনা দু একবার। আমাদের বাড়ির আশেপাশে কোনো রেললাইন নেই। মটর গাড়ীই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এই দিকটি বাংলাদেশে বরাবরই অবহেলার শিকার। ব্রিটিশদের পরে নতুন রেললাইন হয়েছে খুব কমই। অথচ বাংলাদেশের মত অতি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে ট্রেনই হতে পারত যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।
সে যাকগে। যাদের পাসপোর্ট নেই তাদের দ্রুত পাসপোর্ট করতে অফিস থেকে বলা হয়। আমার এক পরিচিত ফুপার মাধ্যমে এক দালালকে ৯০০০ টাকা দেই পাসপোর্ট তারাতারি তৈরী করানোর জন্য। এখানে বলে রাখা ভাল তখন আর্জেন্ট পাসপোর্ট করতে অফিসিয়াল ফী ছিল ৩০০০ টাকা। কিন্তু শুধুমাত্র ফী দিয়ে পাসপোর্ট হাতে পেতেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে পরিচিত অনেক কলিগকে। একজনের তো ট্যুরই বাতিল হল পাসপোর্ট সময়মত জমা না দিতে পারায়। তাই আমি কোনো রিস্ক নিতে চাই নি। জীবনের প্রথম বিদেশ ভ্রমণ যাতে নিজের দোষে বাতিল না হয় কোনো ভাবেই। দালালের সাথে একদিন উত্তরার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তুললাম আর হাতের আংগুলের ছাপ দিয়ে আসলাম। এরপর দালাল বলল এখন শুধু ভেরিফিকেশন করবে। সেটিও অনেক ঝামেলার বিষয় ছিল। যাই হোক আমার ট্যুর শিডিউলের আগেই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে গেলাম। এখন শুধুই অপেক্ষা আর উত্তেজনা।
আমাদের অফিসিয়াল ট্যুরগুলো টিম আকারে হত। আর শুরুর দিকের ট্যুর গুলো ছিল অনেকটা ট্রেইনিং এর মত। ১৯ জনের একটি টিমের সাথে আমার ট্রিপ ঠিক হল। এটা ছিল ভারতের নয়ডা নামক স্থান। দিল্লীর খুব কাছেই। এক মাসের একটি ট্রেইনিং এ গিয়েছিলাম। আমরা সবাই গুলশানের ইন্ডিয়ান এম্বাসিতে পাসপোর্ট জমা দিয়ে আসলাম। ভিতরে ভিতরে উদ্ভট দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। মাঝে একদিন স্বপ্নেও দেখলাম আমাদের টিমের সবার ভিসা হয়েছে আমারটা বাদে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই সবার ভিসা হয়ে গেল। কিন্তু ভিসার মেয়াদ দিল মাত্র একমাস। এই মেয়াদটা আবার ভ্রমণের প্রথম দিন থেকে শুরু নয়। যেদিন ভিসা পেলাম সেদিন থেকেই শুরু। আমাদের বস চিন্তা করে দেখল যে এয়ার টিকেট, এন্ডোর্সমেন্ট সহ আরো কিছু ফর্মালিটি করে ইন্ডিয়া পৌছাতেই ১০-১২ দিন লেগে যাবে। তাহলে আমাদের ভিসার মেয়াদ থাকবে মাত্র ১৭-১৮ দিনের। এটা শুনে মন কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো। আমার বস আমাদের এমডি এর সাথে এই ব্যাপারে কথা বলল। এমডি বলল আগে আপনারা ট্রেইনিং এ যান, পরে দেখা যাবে।
এই ১৯ জনের সবাই খুব পরিচিত। আর তার চেয়ে মজার ছিল আমাদের বিড়িখোর গ্রুপ। সেই গ্রুপের প্রায় সবাই এই টিমটাতে ছিলাম। আমার মত অনেকেরই প্রথম বিদেশ ভ্রমণ। অফিসে বসে কাজের ফাকে ফাকে প্ল্যান চলত সারাদিন। দুদিন পরে সবাই বিমানের টিকেট হাতে পেয়ে গেলাম। জেট এয়ারওয়্জে এর টিকিট। এরপর একদিন ব্যাংক থেকে এন্ডোর্সমেন্ট করলাম। প্রথমবার ১০০ ডলারের নোট হাতে নিলাম। সেটাও মজার অনুভূতি।
আমি তখন থাকতাম আশকোনা তে। এয়ারপোর্টের ঠিক বিপরীত দিকে অল্প দূরেই। আমাদের ফ্লাইটটি ছিল কলকাতা হয়ে দিল্লী। ঢাকা থেকে বিকেল সারে চারটায় ছাড়ার কথা। সবাই এয়ারপোর্টে তিনটার দিকে মিট করার কথা। আগের রাতে একটুও ঘুমাতে পারি নি। প্রতিক্ষা আর উত্তেজনায়। ভ্রমণের দিন সবাই ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ীতে এয়ারপোর্টে আসল। বাসা খুব কাছেই ছিল তাই রিক্সাতে করে লাগেজ সহ এয়ারপোর্ট বাসস্ট্যান্ডে নেমে বাকিটা পায়ে হেটেই গেলাম। এর আগে কাউকে বিদায় বা রিসিভ কোনো জন্যও এয়ারপোর্টে যাওয়া হয় নি। এই প্রথম। কোনদিকে যেতে হবে সেটাও জানি না। পুলিশের কাছে জিজ্ঞেস করে উপরের(ডেপার্চার) টার্মিনাল-২ তে ঢুকলাম। এন্ট্রান্স গেটেই আমাদের অনেকের সাথেই দেখা হয়ে গেল। এরপরে শুধু তাদের ফলো করলাম। আগে ট্রাভেল করেছে এমন অনেকেই অনলাইন চেকইন করে পছন্দমত সীট সিলেক্ট করেছে। আমি অনলাইন চেকইন সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। ভাগ্যক্রমে চেকইন করার সময় উইন্ডো সীট পেয়ে গেলাম। আমাদের অনেকেরই উইন্ডো সীট না পেয়ে মন খারাপ। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হল।
ইমিগ্রেশন পার হলাম কোনো ঝামেলা ছাড়াই। তবে লাইনটা বেশ দীর্ঘ ছিল। ইমিগ্রেশন পুলিশ কিছুটা প্যারা দিয়েছে বৈকি। যাইহোক, ইমিগ্রেশনের পরে ডিউটি ফ্রী শপে গেলাম সিগারেট কিনতে। বাইরের চেয়ে কিছুটা কম দামেই এক কার্টুন সিগারেট কিনলাম। আমরা বিড়িখোর গ্রুপ গেলাম স্মোকিং জোনে। স্মোকিং জোন না বলে ইটভাটা বলাটা সমীচিন। ছোট্ট একটা রুম। দেখে মনে হল ভেন্টিলেশনের কোনো ব্যবস্থা নাই। থাকলেও চোখে পরে নি। আমার মনে হয় ঐখানে ঢুকে কারো সিগারেট ধরানোর দরকার নাই। জাষ্ট রুমে ঢুকে চোখ বন্ধ করে দুইবার নিঃশ্বাস নিলেই পরপর দুইটা সিগারেট খাওয়ার নেশা হয়ে যাবে। চারদিকে শুধু ধোয়া আর ধোয়া। তারপরও কিছুক্ষণের মাঝেই দুইটা সিগারেট শেষ করে ফেললাম, কিছুটা রোমাঞ্চ আর কিছুটা উত্তেজনায়। যেকোনো জার্নির আগে কেনো যেন আমার বারবার ওয়াশরুমে যেতে হয়। বিশেষ করে বাসের লং জার্নিগুলোতে। সেই অভ্যাস মত আমি বারবার টয়লেটে যাচ্ছিলাম। এটা দেখে হাদি ভাই বলল প্লেনের মধ্যে টয়লেট আছে এত চিন্তা করার কিছু নাই। এই বলে খেপাতে শুরু করল সবাই। হাদি ভাই হচ্ছে আমাদের বিড়িখোর গ্রুপের অন্যতম প্রধান সদস্য। আরোও ছিল: বাকী ভাই, কৃষ্ণ দা, পুলক আর আমি। সময়ের আবর্তে এদের দুজন এখন দেশের বাইরে সেটেল্ড। একজন নিজেই কোম্পানির মালিক। আর আমি সরকারের কামলা খাটি। মাঝে মাঝে মনে পড়ে সেই দিন গুলোর কথা।
বোর্ডিং এর সময় হয়ে গেল। আমরা একে একে লাইন ধরে এগুচ্ছিলাম। বোর্ডিং এর গেটেও আরেক দফা চেকিং চলছে। আমার হাতে মিনারেল ওয়াটারের বোতল। সেটা নিয়ে যেতে দিল না, ফেলে দিতে হল। ফেলে দেওয়ার আগে পানিটুকু শেষ করলাম। বোর্ডিং এর সময় বেশ সুন্দরী এক বিমানবালা অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। সীট খুজে পেতে সাহায্য করল অন্য আরেকজন। জেট এয়ারওয়েজের কেবিন ক্রু রা সবাই খুব হেল্পফুল। বাংলাদেশ বিমানেও জার্নি করার সৌভাগ্য(!) হয়েছিল অন্য এক সময়। বিমান বাংলাদেশের কেবিন ক্রুরা কেন যেন এদের মত না। তাদের ভাব অনেকটা সেকেলে প্রাইমারী স্কুলের টিচারদের মত। কোনো সাহায্য চাইলে ভ্রু কুচকে তাকায়।
ল্যাপটপের ব্যাগটা ওভারহেড কম্পার্টমেন্টে রেখে, আমি আমার সীটে গিয়ে বসলাম। ছোট জানালা দিয়ে পড়ন্ত বিকেলে ডানা মেলে দাড়িয়ে থাকা প্লেনগুলো দেখতে অদ্ভুত লাগছিল। রানওয়ের পাশে ছোটো লেক গুলোতে সূর্যের আলো পড়ে রুপালি নদীর মত চিকচিক করছে। সীটের সামনে লাগানো একটা স্ক্রীন হঠাৎ অন হয়ে গেলো। সেখানে বিমানের সেফটি ইন্স্ট্রাকশন চলছে। পাশাপাশি একজন কেবিন ক্রু হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দিচ্ছিল ইমার্জেন্সি সিচুেশনে কী করতে হবে। কিছুক্ষণ পর ক্যাপ্টেনের আওয়াজ শুনতে পেলাম। তারপরই আমাদের প্লেনটা আস্তে আস্তে রানওয়ের দিকে যেতে লাগল। কিছুদুর এগিয়ে একটা বাক নিয়ে প্লেনটা আবার দাড়াল। আমি মনে মনে ভ্রমণের দোয়া পড়ছিলাম। হঠাৎ একটা ঝাকি দিয়ে প্লেনটা খুব জোরে চলতে শুরু করে। একটা সময় দেখলাম আমরা হাওয়ায় ভাসছি। ঢাকা শহরের বিল্ডিংগুলো ক্রমশ ছোটো হয়ে আসছে। দুটো চক্কর দিয়ে পশ্চিম দিকে ছোটা শুরু করল। জানালা দিয়ে নিচের সবকিছুই দারুণ লাগছে।
কিছুদুর এগোতেই বিশাল মেঘরাশির দেখা পেলাম। মেঘটাকে মনে হচ্ছিল সাদা পাহাড়। কিছুক্ষণ পর নিচের দিকে তাকিয়ে মনে হল প্লেনটা মেঘের সমুদ্রের উপরে ভাসছে। নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে বিষ্ময় সুচক আওয়াজ বের হল। ওয়াও!!! এত জোরে কথাটা বলেছিলাম যে আমার নিজেরই লজ্জা লাগছিল। কিন্তু লজ্জাটা কেটে গেলো যখন দেখলাম আমার কলিগদের মাঝেও কেউ কেউ আমার মতই জোরে জোরে আমার মত বিষ্ময় প্রকাশ করছে। জীবনের সব প্রথমই মজার হয়। প্রথম ভ্রমণ, প্রথম বনভোজন কিংবা প্রথম প্রেম। এগুলোর একটা আলাদা আকর্ষণ থাকে। সবকিছুতেই ভালোলাগা একটা ঘোর থাকে। আমি চারপাশে যা দেখছিলাম তাতেই অভিভূত হচ্ছিলাম। হঠাৎ এক কলিগের ডাকে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। হিমালয় পর্বতের সারি চোখে পড়ল। অনকগুলো পর্বতচুরা মাথায় বরফের বোঝা নিয়ে দাড়িয়ে আছে। হয়তবা কাঞ্চনজঙ্ঘাও রয়েছে তার মধ্যে। আমার মনে হল স্বপ্ন দেখছি।
মুশফিকের ডাকে সম্বিত ফিরে পেলাম। মুশফিক হল সবচেয়ে ভ্দ্র কলিগদের একজন। ইশারা করে দেখাল ক্রুরা খাবার সার্ভ করছে। আমি ভেবেছিলাম বিকেলবেলার স্ন্যাক্স জাতীয় কিছু হবে। কিন্তু কাছে আসতে ভূল ভাঙল। এতো মুটামুটি লাঞ্চের আয়োজন। খাবারের দুটো মেনু ভেজ/নন ভেজ। মুশফিককে জিজ্ঞেস করলাম ভেজ/নন ভেজ কী? ও বলল নিরামিষ ভোজি/মাংস ভোজি। পরে জানতে পেরেছি ইন্ডিয়ানদের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ ভেজিটেরিয়ান। জীবনে কখনো মাংস বা মাংসজাত খাবার খায় না। আমার ভাবতেই অবাক লাগে, কীভাবে পারে? আমি নন ভেজ মেনু সিলেক্ট করলাম। খাবার খেতে খেতে সামনের স্ক্রীনে মুভি দেখছিলাম। মুশফিক আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিল কীভাবে স্ক্রীনে মুভি চালাতে হয়। স্ক্রীনে ম্যাপের মাঝে যাত্রাপথও দেখা যায়।
খাবার শেষে ড্রিংক পরিবেশন করছিল। আমি চা নিলাম। ড্রিংক নিয়ে পরে একবার অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। একটা অফিসিয়াল ট্যুর ছিল সাউথ কোরিয়ায়। সিংগাপুরে ট্রানজিট ছিল। ট্যুর শেষে ফেরার করার সময় সিংগাপুর থেকে এক বাংলাদেশি ভদ্রলোকের পাশে আমার সীট। টুকটাক কথাবার্তায় জানতে পারলাম উনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। ওখানকার সিটিজেন। প্লেনে রাতের ডিনার সার্ভ করছিল। উনি দেখি এয়ার হোস্টেজের সাথে বেশ উচুস্বরে কথা বলছেন। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম ঘটনা কী? উনি বললেন উনি অনলাইনে চেকইন করার সময় ডিনারের জন্য হালাল ফুড সিলেক্ট করে রেখেছেন। কিন্তু এয়ার হোস্টেজ বলছে তাদের কাছে আজকে কোনো হালাল ডিস নেই। আমি উনাকে বললাম আপনি ভেজ ট্রাই করতে পারেন, ভেজের হালাল/হারাম নিয়ে সমস্যা নেই। আসলে এয়ার হোস্টেজও তাকে এই সাজেশনই দিচ্ছিল। তিনি বিশেষ অসোন্তষের সাথে খাবার টা নিলেন। আসল মজাটা হল তখন, যখন খাবার শেষে ড্রিংক পরিবেশন করছিল। উনি দেখি ওয়াইনের ক্যান নিচ্ছেন। আমি বললাম হালাল খাবারের জন্য এতো যুদ্ধ করে এখন আপনি ওয়াইন খাচ্ছেন? উনি তখন বললেন, ডিনারের পরে ওয়াইন না খেলে উনার নাকি হজমে সমস্যা হয়।
চা শেষ করতে করতেই ঘোষনা হল, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা কলকাতা এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করবো। সবাই সীটবেল্ট বেধে নিলাম। জানালা দিয়ে পাখির চোখে কলকাতা শহর দেখছিলাম। ঢাকার তুলনায় কলকাতা শহরে গাছগাছালি অনেক বেশি মনে হল। একটা ঝাকুনি দিয়ে আমাদের প্লেন রানওয়ে স্পর্শ করল।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৩৯