ধরো, আমি আর কোনোদিন তোমার শহরে ফিরলাম না!
ধরো, এইসব রিকশায় ঘুরাঘুরি, এইসব টক-ঝাল পানিপুরি
সস্তার বেলিফুল, এইসব কলাভর্তার দিন শেষ করে আমি
আর তোমার চোখের কিনারার কাছে ফিরে আসলাম না…
ধরো, এইসব অঘ্রাণের রাতগুলায় কোনো এক হুডখোলা
রিকশায় যেতে যেতে তোমার গভীর চোখজোড়ার দিকে
আমার আর তাকায়া থাকবার কোন রকম অধিকার নাই!
এইসব গম্ভীরের মতন তোমার চুলগুলার কাছে আমার
সমস্ত ফেরা আর না-ফেরারা নিয়ে আমি হারায়া গেছি…
সেইসব মাথানষ্ট ছাতিম ফুলগাছগুলার পাশ দিয়ে হেঁটে
যেতে যেতে আমি আর তোমার দিকে অথবা তুমি আর
আমার দিকে হুটহাট করে গভীর চোখ তোলে তাকাও না।
এইসব ধুলাবালিমাখা জীবন আর শহরের ঝঞ্ঝাটের ফাঁকে
আমাদের হাত ধরাধরি করে বসে থাকা কোন রিকশা নাই!
সেইসব রিকশাদের ভীড়ে আমাদের কোনো ঠোঁট ছোঁয়া-
ছুঁয়ি নাই। তবুও, এই উপদ্রপের শহরে ‘টিম ফরটিন’ নামে
কোনো এক যুবকের দল অঘ্রাণের রাতে কারো কারো ঘুম
ভেঙে দিয়ে এক তোড়া চন্দ্রমল্লিকা ফুল দিয়ে আসে। এইসব
ফুলের না পাওয়া ঘ্রাণ, দূর থেকে কেউ চুপচাপ গন্ধ শুঁকে।
আমাদের সেইসব থাকা, আর না-থাকা নিয়া আমরা কার
কাছে যাবো সেইসব ভেবে পাই না। শাহবাগ, চন্দ্রমল্লিকা
আর ছাতিম ফুলের পথ পার হয়ে আমরা কাঁচকলা ভর্তার
ভ্যানের পাশে গিয়া দাঁড়াই, মোক্তার ভাইয়ের দোকানে
গিয়া বসি। চা খাই। তবুও, আমাদের পরিত্যাক্ত হৃদয়ের
কাছে আমাদের আর কোনোদিন ফিরে এসে বসা হয় না!
সেইসব হৃদয়, যেইসব হৃদয়ের কাছে আমাদের বারবার
ফিরে আসার কথা, সেইসব চোখের কাছে আমাদের আর
কোনোদিন ফিরে আসা হলো না। এইসব না হওয়ারা নিয়ে
এই অঘ্রাণে আমি কার কাছে যাই, কোন নৈশব্দের কাছে?
ধরো, আমি আর কোনোদিন তোমার শহরে ফিরলাম না!
২৩ নভেম্বর, ‘১৯। অঘ্রাণের সন্ধ্যা
মিরপুর, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৪