আমার জন্য তোমার ভিতরে কোনো রকম বেদনা
হচ্ছে না--মনে হলে তোমার সাথে ঝগড়াঝাঁটি করি,
চিৎকার-চেঁচামেচি করি, মাঝেমাঝে আবার চুপচাপ
নির্বিকার হয়ে যাই। ম্যাসেঞ্জার বাবলটা আর খুলে
দেখি না। নিজের লেখা দু-চারটা লাইন মনে
করার চেষ্টা করি। তোমাকে নিয়ে লেখা লাইনগুলো…
তোমাকে নিয়ে লিখবার জন্য কতো অসংখ্য শব্দ
আর পংক্তি নিয়ে আমি রাতের পর রাত জেগে
থাকি! কিছু কিছু লিখি মাঝে মধ্যে। বাকি সব
অসংখ্য অগণিত লাইন আমি লিখি না। আমার
অদৃশ্য আর্কাইভে থরে থরে সাজিয়ে রাখি। আমার
যখন খুব মন খারাপ হয় সেই সব অতি পরিচিত
লাইনগুলোর কাছে গিয়ে আমার দুঃখের কথা
বলি। আমার একক মন খারাপের কথা তারা শোনে…
তবুও আমি কার জন্য সারারাত জেগে জেগে
লিখি?--ভেবে আমার ভিতরে কি মন খারাপ হতে
পারে না? আমার ভিতরকার কষ্টকর মধ্যরাতগুলো
নিয়ে আমি তোমার কাছে যাই। তোমার এত সব সময়
হয়ে উঠে না। তোমার দশটা-পাঁচটার চাকরি আর
আমার বিরক্তিকর যন্ত্রণা নিয়ে চুপিচুপি ফেরত
আসি আমার অন্তর্গত দ্বন্দ্বের ভিতরে। কবিতার
কাছে যাই। কবিতাদের মাথামোটা শরীরের ভিতরে…
আবার দু-চার লাইন লিখি। মাঝেমাঝে আবার কিছুই
লিখি না। আমার ভিতরে খুব কষ্ট হয়। আমার
কেবল স্বার্থপরের মতন চিৎকার করতে ইচ্ছে করে,
চেঁচামেচি করতে ইচ্ছে করে। কেন আমার জন্য
তোমার ভিতরে অবিরাম কষ্ট হবে না? কেন
আমার কথা মনে হওয়ার সাথে সাথে তোমার
কাছে চাকরি-বাকরি, জীবন-যাপন সব অর্থহীন
মনে হবে না? তোমার কেন নিরুপদ্রব ঘুম হবে?
আমি চাই তোমার চাকরি-বাকরি সব লাটে উঠুক
আমার কথা ভেবে ভেবে তোমার নিদ্রাহীন চোখ-
গুলো ফোলে উঠুক, চোখের নিচে কালি পড়ে
যাক। তোমার অফিসের ফাইলগুলোতে দু-চারটা
ভুল-ভ্রান্তি হোক আমার জন্য মন খারাপ করে।
তোমার বস ডেকে নিয়ে কিছু ধমক-ধামক দিক…
আমার জন্য তোমার ভিতরে মন খারাপ হচ্ছে না--
মনে হলে, আমি কবিতা লেখা বন্ধ করে দেবো!
২১ নভেম্বর, ’১৭। অগ্রহায়ণের রাত।
হিলভিউ, চট্টগ্রাম।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৪