এই পৃথিবীতে আর কোনোদিন হেমন্ত আসবে না জেনেও
আমরা আমাদের চোখে চোখ রেখে একই রিকশায় ঘুরে
বেড়াচ্ছি। নতুন মানুষেরা তবুও ভালোবাসাবাসি করছে!
অথচ, দেবকাঞ্চন আর হেলেঞ্চার ফুলগুলো কোনোদিন
আমাদের পুকুরপাড়ে ফুটবে না। মানুষের মতো প্রগাঢ়
ভয়ানক নামহীন, গোত্রহীন এক দানবের পৃথিবীতে ওড়ে
আসছে একটা লাশ, তাকে আমি মানুষ বলতে পারছি না!
অথচ, হুবুহু মানুষের মেয়েদের, স্ত্রীদের কিংবা মা’দের
মতন দেখতে, অঙ্গভঙ্গি; শব্দস্বর; সব; সব একই রকম
অথচ, তিনি মা নন, নারী নন, নির্যাতিত নারী শ্রমিক!
এই রকম একটা পৃথিবীতে আমি তোমার জন্য শিউলি
ফুল খুঁজে বেড়াচ্ছি, তুমি পানিপুরি খেতে চাচ্ছো, আর
আমাদের বন্ধুরা পারমাণবিক শক্তি কমিশনের সামনে
বসে চ-বিড়ি খেতে খেতে কনটেম্পোরারি আর্ট মারাচ্ছে!
আমিও যোগ দিচ্ছি মাঝে মাঝে। নতুন সময়ের কবিতা
আর গল্পগুলো কি রকম হবে সেইসব নিয়ে আমাদের
মাঝে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, বর্তমান ক্যামেরা কার
মুখ দিয়ে কথা বলবে, সেইসবও; আমরা ঝগড়াঝাঁটি
করছি, আমরা একে নাকচ করছি, ওকে টেনে তুলছি,
সব চলছে, অথচ, মানুষ; মানুষ নিয়ে আমাদের কোনো
কথাবার্তা নাই, কোনো রকম আলাপ-আলোচনা নাই!
আমাদের সন্ধ্যার বাতাসগুলো মানুষের ঘৃণা, মৃত্যু আর
হত্যাকান্ড এবং নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে ওড়ে ওড়ে এসে
আমাদের চায়ের কাপে বসছে, ‘এস্থেটিক টি’ নাম দিয়ে
একটা নীল অপরাজিতা ফুল চায়ের কাপে চুবিয়ে মৃত্যু
নিশ্চিত করে সেইসব ঘৃণা আমরা গুলে খেয়ে ফেলছি!
নীল অপরাজিতা কিংবা দেবকাঞ্চন ফুলের কথা থাক
মানুষের জন্য যে একটা মানুষের পৃথিবী বানাবার
কথা ছিলো, সেইসব বেমালুম ভুলে গিয়ে আমি শিউলি
ফুল খুঁজে বেড়াচ্ছি, তুমি পানিপুরি খেতে চাচ্ছো, আর
আমার বন্ধুরা, তারা কনটেম্পোরারি আর্ট মারাচ্ছে…
২৮ অক্টোবর, ’১৯। কার্তিকের সন্ধ্যা
মিরপুর, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯