শাফিক বর্তমানে সম্পর্কে আমার কলিগ হলেও একসময় আমরা ক্লাসমেট ছিলাম। শাফিকের ডাকনাম রুবেল। ওই সময়ে শাফিক সেকেন্ড রো তে খুবই মগ্ন হয়ে ক্লাস করতো। ক্লাস শেষে কোন আড্ডা দিতে তাকে আমরা দেখিনি কখনও। তার হাউজমেট বলতো সে ক্লাস শেষে বাসা ফিরে দরজা লাগিয়ে পড়তে বসে আর শুধু খাবার সময় বের হতো।
শাফিক লাইম লাইটে আসলো তখন যখন আমরা এক সাথে ২৪জন একই ব্যাংকে জয়েন করলাম। শাফিকের সাথে শাম্মার একই ব্রাঞ্চে (হেড অফিসের নিচের ব্রাঞ্চে) পোস্টিং হল। শাম্মা তাকে রুবেল বলে ডাক দিতেই শাফিক তাকে অনেকটা শাসিয়ে দিল যে, রুবেল কি! হোয়াট ইজ রুবেল! তার খাতা কলমের নাম ধরে যেন ডাকে! শাম্মা সকলের কাছে রটিয়ে দিল শাফিককে যেন সবাই এম.টি. শাফিক ডাকে। কিছুদিন পরে হেড অফিসে আরো কয়েক ক্লাসমেট রোটেশানে গেল। সবাইকে এসএমএস দিল, "আমাকে এখানে কেউ রুবেল নামে চিনেনা, এখানে এসে তোরা শাফিক ডাকবি, রুবেল না" ।
এরপর থেকে তার নাম হল গুরুতর এম.টি. শাফিক।
১বছর পর শাফিক আমাদের ব্রাঞ্চে আসলো রোটেশানে। একবার ভুলে রুবেল ডেকে ফেলায় সে বলল, এটা কোন অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ না!যাই হোক, শাম্মা ফোন দিয়ে জানালো যে গুরুতর আজকাল পাত্রীপক্ষকে বায়োডাটার সংগে স্যালারি স্টেটমেন্ট ও দিচ্ছে! শুনে প্রথমে শাম্মার উপর রাগ হল। মানুষকে নিয়ে এ ধরনের ফান করার কোন মানে হয় না! পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে শাম্মার কাছে ক্ষমা চাইলাম। শাফিক আসলেই স্যালারি স্টেটমেন্ট দেয়!
শাফিক আমাদের ব্রাঞ্চে জয়েন করার দ্বিতীয় দিন আরেক ক্লাসমেট ওরফে কলিগ হাসতে হাসতে এসে জানালো, শাফিক ব্রাঞ্চের টিস্যু ব্যবহার করে না। শাফিক আমাদের ব্রাঞ্চে বেশিদিন থাকলো না, তার হেড অফিসে পার্মানেন্ট পোস্টিং হয়ে গেল... থেকে গেল তার সদ্য কেনা টিস্যুর প্যাকেট যেটা সে যাবার সময় আমাদের। আমরা শাফিকের ফেলে যাওয়া টিস্যু অত্যন্ত মিতব্যয়ীতার সহিত ব্যবহার করি আর যখনই ব্যবহার করি শাফিককে ধন্যবাদ জানাই কখনও মনে মনে, কখনো নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, কখনো শাফিককে ফোন করে...