এই ম্যাডামকে নিয়ে মোট ৫জন ম্যাডামকে ৮বার একই ঘটনা বলছে তাপ্তি। ক্লাসের সব মেয়েরা প্রতিবারই খুবই অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে আর ম্যাডামরা ব্যাপারটা শুনে আর মুচকি মুচকি হাসে। তাপ্তির কান্না ই পেয়ে যায়। বারবার মনে হয় কেন আম্মুকে বলতে গেলাম! আম্মুকে না বললে আব্বু জানতো না। আর আব্বু না জানলে এই ঘটনা আর কেউ জানতো না।
আগেও একদিন শরীফ স্যার অদ্ভুত ধরনের আচরন করেছিল তাপ্তির সাথে, খুবই অস্বস্তি লেগেছিল।। লজ্জায় তাপ্তি কাউকে বলতে পারে নি। পরেরদিন যখন একই আচরণ করলো তাপ্তির প্রচন্ড কান্না পেয়েছিল তাই সে বাসায় এসে কান্নাকাটি করছিলো। আম্মু জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে। তাপ্তি বলতে চায় নি, কিন্তু আম্মু অনেকবার অভয় দেবার পর তাপ্তি বলেছিলো। এখন তাপ্তির মনে হয় ওইদিন আম্মুকে বলা উচিত হয় নি।
আব্বু ঘটনা শোনার পরই টিএনও কে ফোন করে। টিএনও তাৎক্ষণিক এ্যাকশন নেয়। শরীফ স্যার সাময়িক বরখাস্ত হয়। কিন্তু তাপ্তির জন্য তারপর থেকে প্রতিটা মুহূর্ত যেন আরো কঠিন হয়ে যায়। ম্যাডামরা তাপ্তিকে কি করেছিল শরীফ স্যার এই ঘটনা বারবার জিজ্ঞেস করে বিব্রত করেও চুপ থাকে না, তাদের মুচকি হাসি যে ১১ বছরের তাপ্তিকে কতটা মানসিক কষ্ট দেয় এটা তাপ্তি ছাড়া আর কেউ বুঝে না। খুব অল্প বয়সেই তাপ্তি এই নোংরা পৃথিবীটার সাথে পরিচিত হয়ে যায়।
ঘটনাটা প্রকাশ হবার পর থেকে তাপ্তির বান্ধবীও যেন একটু কেমন বদলে যায় সবাই। একদিন তো তাপ্তি শুনলোও যে তার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী অরিন টিশাকে বলছে ওর আম্মু বলেছে তাপ্তির সাথে না মিশতে।
শরীফ স্যারের নামে দেয়া নালিশের বিচারের নামে টিচাররা সব গার্ডিয়ানদের স্কুলে মিটিং এ ডেকে পাঠায়। তাপ্তির আম্মু আব্বু স্কুলে গিয়ে অবাক হয়। টিচাররা গার্ডিয়ানদের ইফতার পার্টিতে ডেকেছে। মূল বিষয় নিয়ে কেউ কোন উচ্চবাচ্য করলো না। শরীফ স্যার তার প্রভাবশালী আত্নীয় কে ধরে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পায়।
একসময় নাচ গান করে স্টেজ মাতানো মেয়েটা আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। অপরিচিত পরিবেশে গেলে এই বিব্রতিকর পরিস্থিতির সন্মুখীন হতে হবে না মেয়েকে ভেবে তাপ্তির বাবা বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে যায়।
পরিবেশ বদলালেই কি মনে গেথে যাওয়া এই নোংরা অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়া সম্ভব!