করোনার মাঝে এসেছিল রমজান চলেও গেল। ত্রিশটি রোজা পূর্ণ করে এল খুশির ঈদ। সবাই কন্ঠে ধ্বনীত হচ্ছে সেই মধুর গান-
ওমোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
কিন্তু কথা হলো করোনা কালে ঈদটি কি খুশির হবে? ঈদগাহে নামাজ পড়া যাবে না। কোলাকুলি না করে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কারো বাসায় যাওয়া যাবে না। এমন একটি উদ্ভট পরিবেশে ঈদ কতটা খুশির হবে? ঈদ আজ খুশিময় নয়। করোনাময় ঈদ। সালাম করার জন্য পোলপান পা ছুতে পারবে না। যদিও ছুতে হয় হাত ধুতে হবে। কিন্তু পোলপান কি আর স্বাস্থ্যবিধী বোঝে? এ বছর ঈদ হবে স্বাস্থবিধীর ঈদ। এটা করা যাবে না। ওটা করা যাবে না টাইপ ঈদ। অবরিত আনন্দটা এবার গিলে খেলো করোনা। কেমন হবে এমন নিয়ন্ত্রিত ঈদ? গত বছর ঈদের আগের দিনটি ছিল বাজার করার টেনশন মানুষের ভীর ঠেলে হন্টন করে বাসা পৌছার টেনশন। কিন্তু সেটাতেও ছিল ঈদের আনন্দ মাখা একটা উত্তেজনা । কিন্তু এবার ঈদের আগের দিনটিতে তেমন কোন থ্রিল নেই। পানসে পানসে কেমন যেনো করোনাময় অন্যরকম পরিবেশ।
মনে হচ্ছে করোনা এখন আর মানুষের মাঝে শুধু নেই সে এখন আক্রান্ত করেছে আমাদের সকল খুশিগুলোকেও। যে ছেলে মা ছাড়া ঈদ করেনি আজ করোনার ট্রেপে পরে সেও আটকে আছে। মায়ের বুকে ফিরে তার হাতের সেমাই পায়েশ খেতে পারছে না। সন্তান পিতা ছাড়া ঈদ করছে। মোট কথা পারিবারিক শূন্যতার মাঝে গোৎতা খাচ্ছে এবারের ঈদ উল ফিতর ।
জনাব আবু জাহেদ চাকুরি করেন আই এফ আই সি ব্যাংকে। এবারের ঈদে যেতে পারছেন না গ্রাম। অথচ প্রতিবার মা-বাবার সাথে ঈদ করতেন।
জনাব কামরুল।গাজীপুরের একজন মেডিকেল রিপ্রেজেটেটিভ। কভিড-১৯ এর কারণে এবার যেতে পারছেন না মা-বাবার কাছে।
.
গামেন্টস কর্মী দেলোয়ার হোসেন প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতে যেয়ে ঈদ করেন। এবার যানবাহনের স্বল্পতার কারনে মা-বাবার সাথে ঈদ করতে যেতে পারেনি ।
এমন হাজারো পেশার মানুষের এবারের ঈদের আনন্দ শূন্যতায় ভরে আছে।
ডিজিটাল জমানার কারনে যাদের স্মার্ট ফোন আছে তারা হয়তো আপনজনের চেহারাটা দেখতে পাবেন। কিন্তু সেটা অনেকটা দুধের সাধ ঘোলে মিটানোর মত। কি আর করা এই ঘোল খেয়েই ঘোলা পরিবেশে ঈদের আনন্দ খুজে নেই সবাই। সবাইকে ঈদ মোবারক!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৬