ছন্দহীন কথন-০১
বাবা মার ভালোবাসা নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম,
সেটার শিরোনাম কি দেয়া যায় ? এটা শিরোনামহীন। আসুন তো ,ফেলে আসা দিনগুলোতে একটু ফিরে যাই ...।
যখন তুমি শুধু একটা ছোট্ট গোশত পিন্ড ছিলে, তখন একজন তোমাকে বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে ১০ মাস। তোমাকে এই ধরণীতে আনতে তিনি করেছিলেন তার জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ। স্রষ্টা তার সেই ছোট্ট বান্দার খাবার পৌছানোর জন্য সেই ব্যক্তিটির ( মায়ের) সাথে বাচ্চার এক সংযোগ করে দিয়েছিলেন। তাই তো প্রতিটি সন্তান তার মায়ের কাছে " নাড়ি ছেঁড়া "ধন। তোমার মাঝে ভালোবাসার পরশ প্রথম বুলিয়ে দিয়েছিলেন, ভালোবাসার ১ম পাঠদানকারী সেই মমতাময়ী মা।
ছোট বেলায় , মা খাবারের টেবিলে মুরগির বড় টুকরোটা কলিজার টুকরা সেই সন্তানের পাতেই তুলে দিতেন।
ছোট্ট ছেলেটা বা মেয়েটা যখন জিজ্ঞেস করত, " মা তুমি কেন এটা খাও নি?? " মা বলতেন, আমি মুরগীর গোশত বেশি খাই না.....ছোট্ট শিশুটা মায়ের সেই বানানো মিথ্যাকেই তখন সত্যি ভাবত।
দিন যায়, সন্তান বড় হয়। সে পড়াশোনার জন্য বাবা মা থেকে দূরে হোস্টেল বা মেসে থাকে।
মা প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে, " সকালে/ দুপুরে কি খেয়েছিস"??.... ছেলেটা বা মেয়েটা মা কে বুঝ দেয় এই বলে, অনেক ভরপেটে নাস্তা করেছি, মা । আদতে সে কিছুই খায় নি। মা আর সন্তানের মধ্যকার যে মিছে মিছে অভিনয়, এর মধ্যে যে ভালোবাসা লুকিয়ে আছে, সেটায় কোন খাদ নেই.......নিখাদ।
...ভালোবাসা শুধু রেস্টুরেন্ট, ক্যাফেতেই হয় না।
তিনি বাবা। শাসনে, মায়ায় গড়ে তুলেন তার সন্তানকে। সেই ছোট্ট বেলায় তুমি প্রথম হেটে চলা শিখেছিলে তার হাত ধরেই। বাবার সেই হাত ছিল শত আশংকা আর ভয়ের মাঝেও নির্ভরতার হাত। ১ম মুখের বুলি, ১ম হাটা তারাই শিখিয়েছিলো তোমাকে। তোমার অনাগত ভবিষ্যৎ কে সুন্দর ও মসৃণ করতে বাবাকে কত অমসৃণ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। জীবনের কত শখ, আহলাদ, ভালো লাগা তারা হাসিমুখে বিসর্জন দেন প্রিয় সন্তানের খাতিরে।
সেই ছোট্ট / মিনিপ্যাক তুমি থেকে আজ পর্যন্ত যারা নি: স্বার্থ ভাবে তোমাকে ভালোবসেছে, তাদের প্রতি অকৃতজ্ঞতা কিভাবে সম্ভব?
আজ তুমি একজন নতুন মানুষকে পেয়ে দিব্যি তাদের কথা ভুলে গেলে!!!
পুনশ্চ :নতুন মানুষটি সারাজীবন ভালোবেসে যাবে কিনা সেটার নিশ্চয়তা না থাকলেও বাবা মার ভালোবাসা কখনো ফুরাবার নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭