প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে করেছে সহজ যা আমাদের একটি নতুন সুন্দর পৃথিবীর আশা দিচ্ছে । এই প্রযুক্তি গুলো জটিল অসুখ এর নিরাময় থেকে শুরু করে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় যেমন গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখছে তেমনই আবার এই প্রযুক্তি গুলোর যথেচ্ছো ব্যবহার আমাদের জন্য ডেকে আনছে মহাবিপদ । যেমন এই প্রযুক্তি গুলো ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা তাদের কার্যক্রমের পরিধি এবং ভয়াবহতা বাড়িয়েছে বহুগুনে, মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ব্যহত হচ্ছে। এমনকি এই গুলোর মাধ্যমে নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে এবং পরিবেশের ক্ষতি করছে নিরবে, আমাদের অগোচরে । আমরা জানি সব কিছুরই ক্রিয়া - পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি প্রযোজ্য । এমনই কিছু প্রযুক্তি
মোবাইল পেমেন্ট : মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই যদি সব রকম বিল পরিশোধ করা যায় বা প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কেনা যায় তাহলে কে যায় আর কষ্ট করে বাজারে বা লম্বা লাইন দিয়ে বিল পরিশোধ করতে ? জীবনটা হয়ে যাবে কত সহজ ।
কিন্তু যেখানে বিল বা পেমেন্টের ব্যপার সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা যদি দুর্বল হয় তবে কি হবে? যেখানে বিশ্বের সব নামি দামি হ্যাকাররা ওৎ পেতে আছে হ্যাক করার জন্য । সব হারিয়ে জীবনতো তখন সহজ না হয়ে হবে দুর্বিসহ ।
GPS: গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম প্রযুক্তি টি হারিয়ে যাওয়া ড্রাইভার, হাইকার, বোটার দের জন্য একটি উপহার । শুধু তাই নয় এর মাধ্যমে ব্যাবসা বানিজ্য এমনকি সরকার ও উপকৃত হচ্ছে ।
RFID: ১৯৮০ সাল থেকে বারকোড হচ্ছে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিসটেমের মেরুদন্ড । কিছুদিন আগে সরকার এবং করপোরেট সংস্থা গুলো নতুন প্রযুক্তির সুচনা করেছে যা সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিসটেমকে করেছে সহজতর এবং গতিশীল , যা খরচের দিক থেকেও অনেক সস্তা । এই প্রযুক্তিকেই বলা হয় "রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী আইডেন্টিফিকেশন" প্রযুক্তি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রযুক্তি কিভাবে বিপদজনক হতে পারে ?
পারে, যেমন কেউ যদি 'সাপ্লাই' কে মানুষ এবং 'ম্যানেজমেন্ট' কে ট্রাকিং চিন্তা করে মানুষটি কোথায় যায় কি করে ট্রাকিং করা শুরু করে তাহলে কি হবে ? মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে তো কিছু থাকবে না ।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেনস্: জসোয়া থেকে শুরু করে স্কাইনেট হয়ে ম্যাট্রিক্স, হলিউড আমাদের একটা বিষয়ই শিক্ষা দেয় যে, মানবজাতির অধ্যায় শেষ হওয়ার কারন হবে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেনস্ এবং এটিই ঠিক করবে কখন সেই সময় আসবে ।
এই প্রযুক্তির ভয়াবহতা বোঝার জন্য এত দূরে যাওয়ার দরকার নাই, যখন এই প্রযুক্তি কাজ শুরু করবে তখন বোঝাই যাচ্ছে মানুষ এটিকে এমন সব জায়গায় ব্যবহার করবে যেখানে সবচেয়ে নিরাপদ হল মানুষের বিচারবুদ্ধি ও চিন্তাতেই সীমাবদ্ধ থাকা ।
নেনোটেক : নেনোটেকনোলোজি হচ্ছে সম্ভাব্য সর্বকালের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে অসুখ নিরাময় থেকে শুরু বিশ্ব
পরিবেশের সকল রকম অসামজস্যতা দূর করা থেকে শুরু করে, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে যেমন পরিবেশ দূষন কমানো, কম খরচে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি ইত্যাদি। আবার অন্যদিকে প্রায় অনেক নেনোটেকনোলোজিই আমাদের কাছে অপরিচিত, যার ফলে এর অপব্যবহার করে পরিবেশ তথা বিশ্বকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারি । উদাহরন স্বরূপ বলা যায়, নিউক্লিয়ার আবিস্কার করা হয়েছিল সস্তা শক্তির উৎস হিসাবে কিন্ত্ত এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে সবচেয়ে সাংঘাতিক সর্ব বিনাশী অস্ত্র । তেমনই নেনোটেকনোলোজীর মাধ্যমে এরচেয়েও ভয়াবহ অস্ত্র তৈরী সম্ভব।
ওয়েব ওএস: যদি বলা হয় বছর ধরে কোন দুঃস্বপ্ন দেখে মাইক্রোসফটের ঘুম ভাঙে, তাহলে অবশ্যই তা ওয়েব ভিত্তিক অপারেটিং সিসটেম । যেখানে বিজনেস আপ্লিকেশন থেকে শুরু করে গেমস্, ব্যাক্তিগত তথ্য সব কিছু ওয়েবে থাকবে, পিসি অপারেটিং সিসটেম, আপ্লিকেশন বলতে কিছু থাকবে না ।
ধারনাটা চমৎকার, কিন্তু অসৎ লোকের ও অভাব নেই, তাদের কোন কার্যক্রমে যদি সব তথ্য মুছে যায় বা কোন সার্ভার ডাউন হয় তাহলে....
আবার গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমকে এমন সব পন্য এবং যানের সাথে সংযুক্ত করা হচ্ছে যা খুব সহজেই সন্ত্রাসীরা বা সরকার বিরোধীরা ব্যাবহার করতে পারবে এবং করছেও ।
>>ছবি আপলোড করতে না পারার কারণে দিতে পারলাম না
সংগৃহীত-