ছাত্রলীগকে এনালগ আচরণ করার পরামর্শ দিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা ক্ষমতায় এসেছি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য। আমাদের সকল উন্নয়ন কাজ হবে ডিজিটাল। কিন্তু ছাত্রলীগের আচরণ ডিজিটাল করলে হবে না। এনালগ আচরণ করতে হবে। বর্তমান ডিজিটাল সময়ের ছাত্রলীগের আচরণের থেকে আগের অ্যানালগ ছাত্রলীগের আচরণ অনেক ভালো ছিল। তিনি আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে ছাত্রলীগের মধ্যে কিছু হাইব্রিড ফর্মালিন ঢুকেছে। মুষ্ঠিমেয় এই লোকগুলো ছাত্রলীগের রাজনীতিকে কলূষিত করছে। এদের সাম্প্রতিক কিছু অপকর্ম আমাদের মাথাকে নিচু করে দিয়েছে। ছাত্রলীগকে এদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। নিজেদের মধ্যে আত্মসমালোচনা আর আত্মমর্যাদাবোধ ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
রাজনীতিতে সৌজন্যতা কমছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের রাজনীতিতে আগের মতো সেই সৌজন্যতা আর নেই। এখন সবাই একে অপরকে দোষারোপ করে হত্যার হুমকি দেয়। দেশের রাজনীতিতে আক্রোশ ও আক্রমণ হচ্ছে। একারণে রাজনীতিতে সৌজন্যতাবোধটা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। ডিজিটাল ব্যানারে এবং ডিজিটাল চেহারায় কারোর সৌজন্যতাবোধ দেখানোর দরকার নেই।
যোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ সর্ম্পকে বর্মমানে বিভিন্ন ধরণের নেতিবাচক সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচনা সবসময়ই তিতা হবে এটাই স্বাভাবিক। ইতিবাচক কাজের মাধ্যমেই এর জবাব দিতে হবে।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি সমাবেশের উদ্বোধন করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার ও সমবায় প্রতিমন্ত্র্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাভোকেট আফজাল হোসেন, সংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতা আব্দুল মান্নান, মাঈনউদ্দিন হাসান চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, বাহাদুর ব্যাপারী, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শাখার সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কাকরাইল, বিজয় নগর হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে রাত ১২টা ১মিনিটে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল চত্বরে কেকে কেটে ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। সকালে ধানমন্ডির ৩২নম্বরস্থ শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগের হাতাহাতি : এদিকে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত সমাবেশে আয়োজিত সমাবেশে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সকালে বটতলায় ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা ব্শ্বিবিদ্যালয়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়ে জায়গা দখলের চেষ্টা করলে এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাবেশ স্থলে ব্যাপক বিচ্ছৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ঢাকা কলেজের নেতাকর্মীদেরকে মাইকে সমাবেশস্থল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিলে পরিস্থিত শান্ত হয়।