somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেমন ইশতেহার কাম্য

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুরো দেশে এখন নির্বাচনের হাওয়া। টেলিভিশনের সংবাদ, টকশো, খবরের কাগজের প্রথম পাতা থেকে শুরু করে ভেতরে পর্যন্ত কেবল নির্বাচনী খবর। কে কোন দল থেকে মনোনয়ন পেল, কে মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হলো, কোন হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিপক্ষ কোন হেভিওয়েট প্রার্থী লড়ছেন, কার জেতার সম্ভাবনা বেশি-কম ইত্যাদি নিয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ চলছে। আর মাঠে ময়দানে, চায়ের দোকানের আড্ডায় প্রসঙ্গ ঐ একটাই, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

রাজনীতিতে ভোটের পর্ব বরাবরই এদেশীয় মানুষের কাছে বিরাট এক উৎসবের বিষয়। ভোটের কয়েক মাস আগে থেকেই প্রার্থী ও উৎসাহী সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। তবে ভোটকে কেন্দ্র উৎকণ্ঠা, অস্থিরতারও শেষ থাকে না। প্রায়ই একদল কর্মী সমর্থকদের সাথে আরেকদল কর্মী সমর্থকদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্ব সংঘাতে প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে থাকে। তবে ভোটপ্রিয় এদেশের জনতা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে আনন্দিত হয়। যদি কারো পছন্দনীয় প্রার্থী নাও জিততে পারে, তবুও শান্তি মতো ভোট দিতে পেরে তারা এ স্বস্তি পায়। বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য বেশ ক’টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে। ফলে উৎসাহী ভোটারগণ ভোটের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু এবারে সবক’টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। যে কারণে হয়তো এবার তাদেরকে পূর্বের মতো হতাশ হতে হবে না। এখন পর্যন্ত কিছু কিছু ব্যত্যয় ছাড়া নির্বাচনী পরিবেশ ভালোই মনে হচ্ছে



সামনে নির্বাচনের আরো ১ মাসেরও বেশি সময় রয়ে গেছে। ইতোমধ্যে প্রার্থীগণ মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলোও মনোনীত প্রার্থীদের কাছে প্রাথমিক মনোনয়নের চিঠি পাঠাচ্ছেন। আর গতকাল মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন পার হলো। সামনে চূড়ান্ত মনোনয়ন ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় আসছে। এরপর প্রতীক বরাদ্দের হয়ে গেলেই শুরু হয়ে যাবে নির্বাচনের আসল পর্ব, অর্থাৎ প্রচার-প্রচারণা। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের পক্ষ থেকে ইশতেহার প্রকাশ করবেন। নির্বাচিত হলে জনগণের জন্য তারা কে কি করবেন সেগুলো সেই ইশতেহারে তুলে হবে। ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি এবং দূরদর্শী রূপরেখা তুলে ধরতে পারলে তা জনগণের মাঝে প্রভাব ফেলে। এছাড়াও ইশতেহার থেকে একটি রাজনৈতিক দলের গতিপ্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ পরিষ্কার হয়। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝেশুনে ইশতেহার তৈরি করতে হবে। তবে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি আগে এই মুহূর্তে আসলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের চাওয়া কোনটি সেটা বুঝতে হবে। যে দল সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়াকে ধরতে পারবে এবং সেই অনুসারে কাজ করতে তারাই মূলত নির্বাচনে সুবিধা করতে পারবে।

বাংলাদেশের মানুষের একটি মৌলিক সমস্যা হচ্ছে অর্থনৈতিক সমস্যা। এর পেছনের বড় কারণ দুর্নীতি। অন্যদিকে সুশাসনের অভাব, রাষ্ট্র জনগণের সেবকের পরিবর্তে প্রভুত্বের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া, মানুষের বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলো নিয়েও সাধারণ মানুষের তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের দেশের সক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞাত। তারা জানে তাদের দেশে উন্নত নয়। এখানে সম্পদের অপ্রতুলতাও রয়েছে। কিন্তু তারা যখন দেখে এরই মাঝে কিছু কিছু মানুষ ক্ষমতা এবং দুনীতি করে রাঘব বোয়াল বনে যায় তখন তারা তা বরদাস্ত করতে পারে না। অন্যদিকে জনগণ জানে রাষ্ট্র জনগণের সেবক। কিন্তু বাস্তবে যখন দেখে রাষ্ট্র তাদের প্রভু বনে গেছে তখনও তারা হতাশ হয়।

আমরা বিশ্বাস করি, যে রাজনৈতিক দল এবার দুর্নীতি দূর করার কার্যকর প্রতিশ্রুতি দেবে, রাষ্ট্রকে জনগণের সেবক বানানোর প্রতিশ্রুতি দেবে, অন্দরমহলের সিদ্ধান্ত নয়, কার্যকর পদ্ধতিতে জনগণের মতামত জেনে সেই অনুসারে রাষ্ট্র শাসন করার প্রতিশ্রুতি দেবে, নির্বাচনে সেই দল অনেকটাই এগিয়ে থাকবে। তাই আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কাছে আশাবাদী, তারা জনগণের মনের চাওয়াকে বুঝবেন, দুর্নীতিমুক্ত, জনবান্ধব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেবেন এবং নির্বাচিত হয়ে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×