বিনোদন উপভোগ করার সময় জ্ঞানটাকে পপ কর্নের বাক্সে রেখে দিলেই রস আস্বাদনে সুবিধা হয়। জ্ঞানীদের এই মর্ম বাণীকে সাথী করে দেখতে গেছিলাম দেবী। এতে নাকি ছোটখাট ত্রুটি বিচ্যুতি গুলা ইলিশের কাঁটার মতো গলায় বিঁধে না।
১। দেবীতো আসলে দৈবশক্তি যেটাকে অলৌকিক শক্তি বলতে পারেন। অলৌকিক বা অপার্থিব শক্তির কথা সব ধর্মেই কম বেশি আছে। বলা হচ্ছে কিছু ঘটনা ব্যাখ্যাতীত ! এই বাক্যের শেষে আশ্চর্য বোধক লাগাবে? না প্রশ্নবোধক লাগাবে? সে প্রশ্ন রেখেই শেষ হয়েছে দেবী সিনেমা।
২। দেবী হরর মুভি বলা যাবে না। মনোবৈজ্ঞানিক তা হালকা করে বলা যাবে । "রোমান্টিক প্রেমের মুভি" কোনভাবেই বলা যাবে না । অনুপমের গানটির সময় আপনার মধ্য হালকা রোমাঞ্চ আসলেও আসতে পারে।
৩। হাল আমলের সিনেমায় ছোট গল্পের বিশেষত্ব থাকে। এই যেমন শেষ হয়েও হইলো না টাইপের। অথবা দর্শককে কিছু বাড়ির কাজ/পাজেল মিলাতে দেয়। কিছু ভাবনা মাথায় নিয়ে দর্শক একটা কাহিনী দাঁড় করাবে, কাহিনী আপনা মনে জোড়া দিবে এবং পরিচালকের প্রতি উস্মা প্রকাশ করে বলবে সে এমন করে করলো না কেন?
৪। কোন পরিচিত কাহিনী বা বইয়ের কাহিনী থেকে সিনেমা করার একটা ঝুঁকি থাকে। সে ঝুঁকি নিয়ে অন্তত দর্শক টানার দিক দিয়ে তারা সফল। পড়া বইয়ের সিনেমা কখনো ভালো লাগে না। কারণ পড়ার সময় মানুষ যে আবেগে বা একটা গ্রুমিং প্রসেসের মধ্য দিয়ে যায় সেটা চলমান চিত্রের গতির কারণে পাওয়া যায় না।
৫। দেবীর প্রধান দুর্বলতা পরিপাটি ইন্ডোর গেটআপ। অন্য চরিত্র গুলার বিকশিত হবার সুযোগ না দেয়া। জয়াকে সুপ্রীম চরিত্রে চিত্রায়ন। (গেট আপ নিয়ে সব সময় সচেতন থাকতে দেখি মোশারফ করিম এবং ফজলুর রহমান বাবুকে। )
৬। দেবীর প্রধান শক্তি এর মেকিং লাইটিং ভিউ সেটিং, সাউন্ড।
৭। চঞ্চল চৌধুরীর চিবিয়ে কথা বলার কারণে সাবলীলতা কম ছিলো। আলী জাকেরকে এই টাইপ দেখতে দেখতে কম বয়সী চঞ্চল চৌধুরীকে একটু বেখাপ্পা বলে মনে হলো।
৮। লাবণ্য চৌধুরী মানে জয়া আহসানের ছোট বেলার রানুর চরিত্রে কিশোরী রানুর অভিনয়টা চ্যালেঞ্জের ছিলো। সংলাপ ছাড়া এবং শক্তিমান অভিনেত্রী জয়ার সাথে মার্চ করার ব্যাপারটা শুধু মাত্র মুখের এক্সপ্রেশনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা সহজ ব্যাপার নয়। মুল কাহিনীটাই কিন্তু ছোট বেলায় ঘটা ঐ এভিউসের কাহিনীকে কেন্দ্র করে । তাই তার জন্য ব্যাপারটি বয়সের তুলনায় বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো এবং সে সেখানে বেশ উৎরে গেছে। আমার পাশের একজন দর্শক অন্যজনকে বলতে শুনেছি -জয়ার সাথে লবাণ্যের চেহারায় মিলেছে বেশ।
৯। ইরেশ যাকের খুবই হতাশ করেছে। চরিত্রটার মধ্যে সাইকো ভাব তুলে আনতে পারেননি তিনি।
১০। শবনম ফারিয়া নীলা চরিত্রে ভালো করেছে, এক্সপ্রেশন গুলা ভালো দিয়েছে। অনিমেশ আইচ মধ্যবিত্ত বর হিসাবে ভালো করেছে। মানিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪১