somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধজ গন্ধম জবা

২৯ শে মার্চ, ২০১১ রাত ৩:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিভৃত মেঘ

নিভৃত মেঘ, রঙ্গীন সুতার জটিলতায় ছুটে যাচ্ছে
জানলা খুললেই দূরে ল্যামপোষ্ট
অন্ধকার সরিয়ে নিঃসঙ্গ
রাত্রির নিকষ অন্ধকার মেঘ থেকে
দূরে রাখে -

কোন কিছুর বিচরণ বেশীক্ষণ গোচর হয় না
জীবন্ত প্রমাণের জন্যই আমার- পর্যবেক্ষণ পর্যটক বনে যাওয়া৷

ভেতরকার তীব্রতা শরীরকে বাধ্য করে কামাতুর সঙ্গীতে
এভাবে অবস জ্যোৎস্না শরীর ডিঙ্গায় প্রজ্বলিত
একদল খেয়াল নিয়ন্ত্রণহীন মনন মেঘের গায়ের বাষ্পীয়তা৷

সন্ধ্যা তার ব্যথাতুর বার্ধক্যকে কিছুক্ষণ গ্রাস করে
ভারী পর্বতের নিচল অহং তার তলায় ছিল রঙ্গীন ফুল

কিছু মানুষ তার নিজের ভেতর বটগাছ ও ইউক্যালিপটাস বনে গেছে
কেউ হরিণের চোখের মত নিখোঁজ

বুঝে যাই চাঁদের আলো মায়াবী সূর্য পৌরুষ
সন্ধ্যার মায়াকালী পাহাড়ের গায় জীবন্ত নির্জণতা
মেঘ-পর্বত আকৃষ্ট৷






কর্পূর স্বাদ

রুহ বা আত্মা হবেই হয়তো কলসের মত
বাতাস তার বহিয়ে চলন উড়িয়ে দেয় আত্মাকে
কলস নিরুত্তাপ বস্তু, জলের ধারক

মেয়েটা বসে থাকে রাস্তায় বাতাস খায়
অদ্ভুত হিসেবী বাতাস উড়তে দেয় না
শুধু অনবরত উপযাচক কেউ
রঙ্গীন হতে ভাল লাগে না

কষ্ট বোঝে না
কুর্নিশ নেই, এক ফোটা প্রেমও নেই
অদ্ভুদ কলসে আত্মা জলকে ধারণ করে
প্রতিনিয়ত আমি বুঝি ওখানে কিছু নেই
আত্মারা কলসবন্ধী তাদের গায়ের রং এ উত্তেজনা

বাঁশির মন সে জানে; জলপাই রাঙ্গা মেরুন বৈচিত্র্যে
কিছুকেই সে ভালবাসে না৷
শুধু গাছ থেকে পাতাটা ঝড়ে গেলে
অবাক তাকিয়ে থাকে- অন্ত্যমিলের জন্য নয়৷

এ কলস ও জল থেকে অনেক দূরে ঊর্ধ্বপাতিত; কর্পূর স্বাদ!

এই প্রাচীনতম সূত্র রানী হয়ে উঠেছে
পুরুষ অন্ধকারকে ভালবাসে৷
আপত সব বধির অন্ধ স্বাদহীন
এভাবেই চলে দুঃখবোধ-প্রেম-শরীর
কিছুই স্বাদ থেকে দূরে নয়৷

আত্মা হবেই হয়ত ঊর্ধ্বপাতিত কর্পূর স্বাদ ...



বৈমুখ বালির নর্তকী

রক্তিম রসে জমে ডালিমের কোয়া পরিপূর্ণ হচ্ছে
বাকলের ফাটল মরুর উষ্ণ চুম্বনে সিক্ত হতে চায়
সাদা বালি উড়ে নিস্পৃহ বাক তুলে নর্তকী হয়
রুক্ষতার বিরানভুমে উটের খূড় ক্লান্ত
তার চোখ রাতের উদারতায় তাকিয়ে
এই কাটা বৃক্ষরা তাদের সাদা কষে বিরামতা জানাল
কিছুক্ষণ কুড়াই বিমুক্ত নিষ্ফল চাহনীদের৷

কিছু মাকড়সা হালকা রৈখিক পায় অনায়েসে পাড়ি দিল
মরু সব রূঢ়তা নিয়ে নিস্তব্ধতা ভালবাসে
আর রসে ডুম- ডালিমের কোয়া ছড়িয়ে পড়ে
খড়া বৈমুখ বালির নর্তকী
নাভী ও পিঠের রেখায় মরুকে ভাজ করে রাখে

যদি বৃষ্টির ফোটা বালুতে পড়ে, বালি তা শুষে নেবে
বাতাস কিছু উষ্ণতায় বাষ্প হয় অতিরিক্র প্রবল বর্ষণে
নালা ছোটে কল্পিত রেখায়- তার সম্মুখে
বালির গম্বুজ বিকীর্ণ আলো তাতে ডুব দেয়৷







স্নায়ু আয়না

মৃত কঙ্কালকে চুমু দিয়ে ফিরবার পথে ....
আমি কোন প্রেম প্রত্যাশা করি না
মাংসকে ভেদ করে কিছুই হাড়কে স্পর্শ করে না
কঙ্কাল আস্থাহীন বেদনার সাক্ষী হতে পারে৷

বালুকে বিভোর নেশায় চুর লাগে স্নায়ু আয়নায়
সময়কে নিত্য দেখি লাল জবা দোলে কালো অন্ধকারে

গভীর কোন স্বস্তির খোঁজে ব্যঙ্গাচির লেজ খসে পড়ার আনন্দ হয়
আমাকে জ্বলে যেতে হয় অন্ধকারে ছাই-ভস্ম-কঙ্কালের খোঁজ

এলাচি লবঙ্গঁ নিয়ে মাংসর মুখ প্রিয় কন্ঠ খুলে কথা বলে
আরতির সন্ধ্যায় জলাঞ্জলি দেই বলির পাঠাকে

সব হাঁস কাকতাড়ুয়া জানে নাড়ীতে আমি ধরা পড়ি
বাকলের ফাটলে প্রাণ নাই কঙ্কাল সবুজ বক্ষে নিয়ে৷









যোগীর ধ্যানে

অচেনা পাখি ডাকছে মধ্যরাত্রির কাঁচ জাগিয়ে
আলোর ফাঁদে বন্দী কিছু আপন ছায়া নিজের হয়ে যায়
অপরিচিত পশুর স্বরে ভয়-কাম-প্রেম শূণ্য আত্মা

নিদারুণ চাপা পড়া কষ্ট উগ্রে বেড় হয়ে আসে
পতন ও ফুলের মিশ্রিত কোন পাটাতনে শান্তি আছে
ভ্রম ঘুরছে আশাবাদী কিছু নিঃশ্বাসে কেবলই শান্তনা

নিয়ন আলো চোখে নিয়ে সূর্যর ভেতর গিয়ে দেখি
প্রাচীন যোগী বসা
ভাবালুতা সঙ্গঁ ছাড়ল পাথর-ছায়া-মাছি সঙ্গহীন যন্ত্রণা

কল্পনার বড়ই গাছ জাম গাছেরই কাছাকাছি
যোগীর ধ্যান চড়ুই এক
স্বচ্ছ উইয়ের উড়াউড়ি ধূলায় গড়াগড়ি করা ধীর কচ্ছপ
পিঙ্গঁল হরিণ এক পাবে কমলা ফলকে৷









লাল পৃত্থিরাজ

পিতলের বাষ্পায়িত ধূমে পুরটা আপেল পুড়ে যাচ্ছে
বোধের নিঃস্পৃহতায় মৃত কাঠুরিয়া নিষ্ফল সনাক্ত করল
তিনটি রক্তিম পৃত্থিরাজ ফলকে বুঝলাম আত্মা-শরীর-মন
পেন্ডুলামে দুলছে আক্রান্ত করছে পিতল বাষ্পায়িত ধূয়াকে
বৃত্তের অর্ধেক নিয়ে এক নিঃসীম কালোতে ঝিমুচ্ছি৷

কঙ্কালের প্রতিটি হাড় স্বরভঙ্গিঁর আবেগে শরীরের মালাকে
রঙ্গ করে বলে দিচ্ছে প্রত্যেকটি নিজ স্বর রতি - আত্মহত্যা

প্রেম ভিন্ন কচুপাতায় মাকড়সার ঝুলে থাকা
শিকড় খূড়ে গেলাম অজানার -
তিন লক্ষাধিক বছর জ্ঞানরত কেউ জানে
যে মাপন তুমি করছ সেখানে কা নিবক বসে মাছের ইশারায়৷

নদীতে জাল ফেলে জ্ঞানী জল প্রত্যাশা করে
জাল নগ্ন জলে, জলকে স্পর্শ করে গেছে
গুহায় কলকিতে দম দিয়ে যাচ্ছ -এক কীর্তিনাশা

সাদা জলের দেয়ালে অস্ফুট মুখ আমার
ইঁদুর বাদুর ধ্বনিতে কাঁপে তিনটি লাল পৃত্থিরাজ ফলে৷







অন্ধজ গন্ধম জবা

পুড়ে যায় একটি করে বাদামী পাতা
যতবার স্নান করে কেউ নদী সহবাসে
পোড়া পাতাদের এই আগুন স্নানে
জলকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে৷

গহীনে সঙ্গঁম নিয়ে জলকে আলিঙ্গঁন করি
মৃত্যুর স্বাদ রক্তে নিক্ষিপ্ত বাদামী পাতার আগুন স্নানে৷

অন্ধজ-গন্ধম-জবা কালো রাত্রিতে নিঃস্ব হয়ে যাও

মুক্তি নেই কোন এক বাদাম পাতার
মৃত্যুর দৃশ্য
ক্রোধের ছুড়ি বালিতে বিদ্ধ করি অবিরত
ঘাস তার ঘ্রাণ নেয়
মৃত বাকল ছত্রাক ক্লেদে ভিজে যায়৷

পরবর্তী তিন রমণের দৃশ্য আমাকে সজীব রাখে
নাভীর মুখে লাল জবা ফোটে
উনুনে শুদ্ধ হচ্ছে মরা পাতা
এর কিছুকাল পর কাব্যকে খুন হতে দেখব
বালুর অভিশাপে শুষ্ক পাতা ভেজা চুম্বন মনে রাখে না -
বাদুর ঝুলে থাকে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে
তালমিশ্রি প্রেম এক অস্ফুট স্বরে পাজর ভিন্ন উড়ে চলে গেছে
সবুজ অরণ্যে করলার তিত ফলে লাল বীজ হয়ে জমা থাকে

অন্ধকারে নদী তুমি গাছের দেখা পাও না৷




মহিষের তাড়া

কড়া নড়ছে, সব কিছুকে বাজী ধরবার জন্য
বেজমা জলে জীবন্ত ইচ্ছারা বিচরিত বহুদিন
বেশ্যা হৃদয়ে আয়না, সম্মোহনে নিরুত্তাপ উন্মাদনা
তাই পৌঁছে যাচ্ছি সর্বোচ্চ ভাঙ্গঁনের গাত্রদাহে৷

নিস্ফলা এ বৃক্ষর অন্তর্গত ভ্রূণে
মহিষ সিংহর - শিং ও কেশরে বীর্য
মজে যায় কদম কচুরিপানা

উত্তেজনা কাঠের মাটির পুতুলের শ্যাওলায়

রক্তের ঢেউয়ে অগণিত মহিষের তাড়া
জলকে ছিন্ন করে ডুবে মরবে
গ্রহণ- গ্রাস কালে সাড় পেন্সিল উতুঙ্গঁ তৃষ্ণতায়
রৈখিক টানে মেরুদণ্ডকে পরিপূর্ণ করছে রূপার কলসে৷

একদিন সাদা কান্না শেষে কবিতা হবে
ধারণ করা বীর্য – অমরা
যন্ত্রণা তার নিজস্ব নিয়মে বদলে যায় গন্তব্যও

পুড়ে যাওয়া অন্ধকার টালমাটাল পায়ে অদৃশ্য হয়
মহিষের তাড়া কালো প্রাচীর ভেদ করে

এক বিষাক্ত কীটে সহজাত বন্যতায়
বুনো মহিষ আমৃত্যু তাড়িত অদৃশ্য হবার বাসনায়
আমি কালো পাথরে মাথা ঠুকি রক্তের লাল নহরে
মহিষের উমাদ তাড়া বন্য ফুলের গন্ধে মাতে৷


নগ্নতার উত্সতব

অন্ধকার ছিলনা দৈত্যর পুরটা শরীরে
জীর্ণ রানী তামাদী বসন্তে নগ্ন ছিল বারং বারং
মগ্ন ছিল বংশীবাদক তাকে উৎসর্গ করা হল কলঙ্ক
পুরাতন বিষ যা ছিল শরীরের কুঠরীতে রক্ষিত
সেখানে নগ্নতার উত্সরব৷

মৃত্যু তার ক্ষণিক ভ্রমে উমও হয়ে উঠলে আমার পাখিগুলি
তাদের পালকে উষ্ণতার মত উড়ন্ত মুক্ত
পরিত্রাণ ছিল না ইচ্ছামৃত্যুতে
গোঙ্গানো আর্তনাদ আমার ডানা কাটল
কিছু বিষ কি ছিল না আমার ধ্বংসকে অনিবার্য প্রমাণের জন্য

ক্লেদ স্তুপের নিচেই মৃত হাড়
আমার খুলী তার প্রবঞ্চকর স্বত্বা হত্যা করেছে
চোখ তুলি খেজুর কাটা দিয়ে
জিভ থলেতে পুরে নিক্ষিপ্ত করি সমুদ্রে
কঙ্কালের কাছে উত্তর চাওয়া হল নগ্ন খুনের অভিজ্ঞতার
এর চেয়ে জীবন্ত ছিল কাম্য মৃত্যু -

দুঃখিত আজ আমবশ্যায়
সূর্য নগ্নতার আগুনে অন্ধ হবে৷







উল্কীতে মাছি

শুদ্ধাতীত কোন মানুষ কুঠরী খুলে দেখল
অন্ধকারে কালো নিজস্ব বেড়ালের চলন

সামর্থ্যর শেষ বিন্দুতে জলকে ছিন্ন করতে চাওয়া মাছ
গভীরতার সহিত মৃত্শিুল্পীর পাতিল বানানো স্পর্শে
সর্বোচ্চ বোধ আবিষ্কৃত হয় সকল শর্তকে উপক্ষয় করে৷

উল্কীতে ভরে উঠেছে শরীর
বর্ষণের প্রতিটি ফোটায় পতনের দর্শন
বৃষ্টি ভাঙ্গে মোহ শেষে এই উপযোগ সঞ্চিবনী৷

কবিতাকে স্বীকার করে নিয়ে স্বচ্ছ ফড়িং টিকে থাকে
শামুকের অধীর গলায় চুম্বক স্নায়ু খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসে

স্ফীত বীণে কোন সূর থাকে না
মোহনীয় কোন প্রেয়সীর স্পর্শাতীত অভিজ্ঞতার
নহরে ক্রন্দন লীলারত৷

উনুনে পক্ষীরাজ উড়াউড়ি সমেত পাজরে লুকানো
রঙ্গীন ফলের গা বেয়ে নেমে আসা ঔজ্জ্বল্য ধরা পড়ে
গভীর ক্রন্দনের নিজস্ব ভঙ্গিঁমা থাকে
মাছির পাখার শব্দ মস্তিষ্কে অনুরণিত
এক খন্ড জ্বলন্ত কয়লা পাজরে প্রজ্বলিত

উল্কীতে ভরে উঠা মাছি তুমি কেন একক চিল হও!




গোবড়ে পোকা

গোবড়ে পোকা তোমার আবাস স্থল
পরিত্যক্ত নারীর যন্ত্রণার মত
চৈত্রর দ্বিতীয়দিন বাঁশ ঝাড়টার আউলা ছায়ায়
পাড়ার নতুন বউ প্রজাপতি হয়েছিল৷

ভিক্ষা মাগার মত তোমার প্রেম
আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়
গোবরে পোকা তোমার আবাস স্থল৷

নিদান বসন্তে অগনিত পালকের আশ্রমে
সুউচ্চ বৃক্ষের অনাথ ডালে নিরীহ কালো শান্ত শকুনের সরে
উষ্ণতায় রবে, কামনায় থাকি জোনাকির চোখে জ্বলে

শূলকীট তার মাটির প্রলেপ ভেঙ্গেঁ ফেলে
কালচে কলাগাছও বাকলের আড়ষ্ঠতা ছাড়ে
দুর্বিনীত কামনার আশ্রমে আমরা প্রজ্বলিত হই
মরা শকুনের মৃত চোখ বহু চেনা মজা ডোবায় ভাসে
তা উপেক্ষা করে সবুজ বাঁশের পিঠে প্রজাপতি সঙ্গঁমে৷

গোবড়ে পোকাদের সাথে খড়ের আচ্ছাদনে খোলা হাওয়ার
অন্ধকারে পূর্ণ চাঁদের আলোয় পরিত্যক্ত কালো প্রাচীরে মাকড়সার জালে
এক শঙ্থ সাদা দূরত্বে-রোদের আউলা ছায়া-বসবাস করি৷

গোবড়ে পোকা তোমার আবাসস্থল প্রজাপতি হয়েছিল৷







চুনাবালির অবয়ব

চুনাবালির অবয়বে যন্ত্রণা খোদাই করি
উত্তেজনাহীন ক্ষরণে ক্ষয় দিয়ে মূর্তি বানাই
শরীরে গাথি গোপন ঢল৷

বহু পুরান এই বিমূর্ত আবক্ষ "চাঁদ-রাত্রি-গুহা"
তীব্র এই চুনাবালির অবয়ব৷

হাতে আমার ক্ষতের টুকরো
শব্দ করবার জন্য আগুন ধরাবার জন্য নয়৷

আমি দেখলাম সবুজ, আমি দেখলাম মৃত মানুষ

তোমার দোতলা মর্মর শরীর আমি বাজাই
ক্ষতের টুকরোগুলি নির্জীব পাথর হতে পারে
আমাদের শরীর হতে পারে চুনাবালির মর্মর৷

প্রাচীন ক্ষুধা-মৃত স্থবিরতা দিকভ্রান্ত হয়ে ওঠে
তোমার বিমূর্ত চুনাবালির "চাঁদ-রাত্রি-গুহা" অবয়বে৷








খুব প্রাচীন দুঃখবোধ

ঝি ঝি পোকার আত্মা
আত্মার শরীরে আক্রান্ত ঝি ঝি স্বর
পেচট স্বর ছায়ার অন্ধকারে আলিঙ্গঁন করে
স্পট কেউ উটের থলেতে ভালবাসার উষ্ণতা আনেনি
বিস্মৃতি কেপে ওঠে
মৃত্যুর অন্ধকার খোলসহীন
আস্থাচলে দোলে অবলম্বনহীন ঝি ঝি স্বর
পরিপক্কতার রং ধরে আসে
বিচ্ছুরিত মাছি ডানার বিচ্ছুরণে মরে গেল রূঢ়তায়
সাদা ফুল কাটবে
মৃত কোন সঙ্গীতের দেহ৷

জবায় তখন প্রখর রৌদ্রর বিচূর্ণ আহ্লাদ
বেদনার চেয়ে গাঢ় কোন স্মরণ থাকে না
তোমাকে সর্বোচ্চ বেদনার স্পর্শ দিয়ে
খুব প্রাচীন দুঃখবোধ উটের থলেতে ঝি ঝি স্বর ওঠে৷









যন্ত্রণা বিদ্ধ কাকতাড়ুয়া

লাল পায়ে হেটে গেছেন সন্ন্যাসী
সাদা কষে পিতল, লাল কাঁকড়াকে মনে করে
সাদা টিকটিকি-বাদামী পোকা-ছোট্ট ফড়িং
ধূসর মরাটে পিঙ্গঁল মাছ পুচ্ছ

লাল লাভা নগ্নতা৷
বোবা হাতির দাত-হলুদ গাধা
কাঁদলেই সুগন্ধি ছড়ায় সন্নাসীনি৷

কাকতাড়ুয়ার বিমর্ষ রক্ত
সবুজ হয়ে ওঠে৷
বীর্য কান্নায় রূপান্তরিত হয়৷

পিংপং উলম্ফে স্নায়ুর কাকতাড়ুয়া কাপে
মহীরুহ যন্ত্রণাবিদ্ধ সুক্ষ্ণ কাকতাড়ুয়া৷










ব্যাঙ্গের ওষ্ঠ থলে

বিদির্ণ আক্ষেপ জমে থাকে-শুষ্ক পাতায়
মৃত বাকল অন্ধ মৃত রঙ্গে বিদীর্ণ
সুরা পানে ব্যস্ত পিঙ্গঁল চড়ই৷
মুখ তুলে বলে চাঁদ কি এক অনাবশ্যক ডুমুর
অদৃশ্য হয়ে ফিরে আসে -

ব্যাঙ্গের চোখে এক প্রাচীন অমোহনীয় কালি
ওষ্ঠথলেতে মৃত রং-পিঙ্গঁল কামনা

খড় তাতে অসহ্য নিপিরনে ভোগে
গহ্বরে জমায় কয়লা
ইর্ষাকাতর কয়লার লাল দাহ্যতার নহরে
উষ্ণতা৷
ব্যাঙ্গের ওষ্ঠাগত থলেতে বিদীর্ণ আক্ষেপের বিষ
ধূসর খড়ের গ্রহ বৃষ্টির শান্ত আহ্লাদ
ব্যাঙ্গের কালো চোখ মিশ্যতায় ভোগে
অমোহনীয় কালি মৃত রং পিঙ্গঁল চড়ই

ওষ্ঠাগত বিষ নিক্ষিপ্ত হয়
বৃষ্টিরা নাচে ভয়ান কদর্য আমদে
পাতারা ক্লেদে হলুদ হতে শুষ্ক হয়
পৃথিবীর স্থিতি নিয়ে ব্যাঙ্গের ওষ্ঠথলেতে আক্ষেপ পুষে রাখে
নেই জেনে বিদীর্ণ হয় মৃত বাকল অন্ধ মৃত রং এ






লবঙ্গ

প্রজ্বলিত আগুনে লবঙ্গ পোড়াই
এক একটি লবঙ্গ আগুনের আভায় পোড়ে
তারই দূরাগত প্রভায়
একটি সফেদ কাগজে পোড়া রং ধরে

তর্জনী ও বৃদ্ধাআঙ্গুলে লবঙ্গঁ
একে প্রজ্বলিত করার গোপন আয়োজন
প্রকাশিত হয় আগুনের লেলিহান গাত্রদাহে৷

পুড়ছে লবঙ্গঁ তারই প্রভাবে বহুদূরে
সযত্মে রক্ষিত তুলট সফেদ কাগজে আগুন লাগে
গোপন লুকায়িত ব্যথাতুর সক্রামনে৷

সূক্ষ্ম বাঁশ পাতার তীর্যক আশের ঘর্ষণে
মৃদঙ্গঁ বাজে সবুজ শঙ্থে নক্ষত্র দূরত্বে

লবঙ্গঁ পোড়ায় কাউকে
তাই পুড়ে যায় মলাট কাগজ দূরাগত দৃশ্যে .....









হাওয়াই মিঠাই

গোলাপী হাওয়াই মিঠাইয়ের সম্পূর্ণ স্পর্শে
বৃদ্ধ দন্তর নির্জলা যন্ত্রণা
মেরুদণ্ডে অনুরিত হয়৷
নিজেকে ক্ষরণ করে এক পৈচাশিক স্বাদ
পুরটা মিঠাই নিঃস্ব যাজক৷

মেরুদণ্ডের সবুজ বাঁশে পই কাটি
তামাটে মুদ্রা জমাই৷
তার কিছু তামাটে মুদ্রা নিরুদ্দেশে ছুড়ি

ধানগাছ দুলছে অবিমিশ্য হাওয়ায়
শিকড়হীন নিস্তব্ধ কেউ সনাক্ত করে
গাছেরা ভিন্ন, শিকড়েরা ভিন্ন- প্রতিটি
একক গাছ দুলছে- মিশ্যতায় শিকড়হীন গাছ
বাতাসের মসৃণ জড়াজড়িতে৷

পাথর স্থির জলে নিজের প্রতিবিম্ব ভাঙ্গেঁ
মুদ্রা সম্ভোগ করি অবিমিশ্যতার

হাওয়াই মিঠাই উজ্জ্বল রোদে মসৃণ বাতাসে
ভয়হীন-ভরহীন-শূণ্য প্রেম স্পর্শ অন্ধকার৷






ডুমুর

ডুমুরের ফল নিরুত্তাপ বহু টুকরো মেঘকে
কাঙ্খিত মেনে জলের গা ছুঁই কবিতায়
চাঁদ মেঘ হলে এর উত্তাপ
আমার শরীরকে পুড়িয়ে মারতে জানে
ভাসমান মেঘ নিরুত্তাপ ডুমুরের ফল৷

ডুমুর সৌন্দর্য্য ছড়ালে
মৃত মানুষ আত্মা হতে চায়
কঙ্কালের হাড়ে খুনে মাছি নাচে
খুন হয় ভবের বংশী বাদক৷

খুব ধৈর্য্যর সাথে ডুমুরের ফলে ক্ষুদ্র ভালবাসা দেখি
ধুন্দল গাছে ঝুলে রয় অবিমিশ্য কাল জুড়ে
রক্তের নোনা স্বাদ নিয়ে উভ্রান্ত রোদ অন্ধকার হলে
কালো কুয়ার গভীরে প্রেমিকার সাথে মৌথনে থাকি
সে প্রাণ সঞ্চার করে আমার পাজরের অন্ধকারে
এই ভ্রম রূপান্তরিত হয় -

কাঠুরিয়াকে উঁইপোকার স্বচ্ছ মৃত্যুর উত্সেবে রেখে
উইপোকা, কেন একবার রমণে মরে যাও তুমি ?











মেহগনী ফল

বীণ থেকে সুর মুছবার আগেই ক্ষত আবিষ্কৃত হয়
সুরকে পরিপূর্ণতাও লাগে
মৌমাছির ক্লান্তিতে পরিষ্কার মৌথনের প্রার্থনা
প্রতিবিম্বে নিজের বিতাড়িত হয়
অপারগ অক্ষমতায় আক্রান্ত আমি জড়তায় ভুগি

ঘৃণা করি নিষ্ক্রিয় শালবন
কুকুরেরা স্তব্ধ আঁধারে সতর্কতা কণ্ঠে প্রকাশ করে
মোহনীয় মেহগনি খোলা নিমন্ত্রণ জানায় -
আমি সম্ভাষণ পছন্দ করি

তোমার পরিপূর্ণ অন্ধকার গুহায় গ্রাস কর

অন্ধকারে নিজের মুখ অপরিচিত ঠেকে
ফুলকে অস্বীকার করা যায় না - নত হই
অর্বাচীন কাকতাড়ুয়া প্রেমিক বা মানুষ নয়
আত্মারা দাপায় শালবন নিষ্প্রভ

অপারগতায় ফেটে যায় মেহগনী ফল
বিদ্যুৎ পেতলের শরীরে ধরা দেয়

বাজ পড়া - মানুষ৷





পাখি রহস্য

আমি লাল বিক্ষিপ্তটায়, বিচ্ছিন্ন আত্মায় পরিণত
পাখি রহস্যর অনুসন্ধান করি
শ্যাওলা হলুদ পাখি
চাঁদের রহস্যর বাসনায় নগ্নতা স্নান করে
ঋতুদের বৈচিত্র্য নিয়ে পর্বত খুঁজি
প্রাচীন গুহার মিথলিপিতে

কালো পুরুষের বা পাজরে রক্তাক্ত লাল জবার মোহর চিহ্ন ছাপ
নীলাভ সাদা নারীর কটিতে উড়ন্ত এক চিলপাখি৷
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৫:০৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×